শিরোনামঃ
নানা আয়োজনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে উদযাপিত হলো ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ চালের বাজারে অস্থিরতা: কার স্বার্থে এই অনিয়ম? আর্জেন্টাইন র‌্যাপারের সঙ্গে রাত্রিযাপনের গুঞ্জন লামিনে ইয়ামালের! সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন তামান্না বাংলাদেশের ওপর  ১৫ শতাংশ শুল্ক কমালো যুক্তরাষ্ট্র প্রিজাইডিং অফিসারদের ক্ষমতায়ন ও নিরাপত্তায় ইসির সাত দফা সুপারিশ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচন : প্রধান উপদেষ্টা ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ রচনার মতো হয়ে গেছে—হতাশ নায়েবে আমীর সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাবে গণঅভ্যুত্থান, আইনি সুরক্ষা পাবেন আন্দোলনকারীরা: ঘোষণাপত্র পাঠ  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৫

পাহাড় ধস: অবৈধভাবে বন্ধহোক পাহাড় কাটা

#
news image

বর্ষাকালে বা অতিবৃষ্টিতে পাহাড় বা টিলাধসের ঘটনা এ দেশে নতুন নয়। অতীতে চট্টগ্রাম ও সিলেটে একাধিক ঘটনা বিপুল প্রাণহানি ঘটেছে। এ নিয়ে নানা পদক্ষেপ এবং উদ্যোগ নেওয়া হলেও বন্ধ নেই পাহাড় ও টিলা কাটা থেমে নেই ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসও। নির্বিচারে পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন এবং বন-জঙ্গল ও গাছপালা উজাড় করার কারণেই চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ঘনঘন পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে।

পাহাড় ধসের অন্যতম কারণ পাহাড় কাটা, যার ফলে পাহাড়ের গাঠনিক শক্তি ক্ষয়ে যায়। পাহাড়ের গায়ে জন্মানো বন-জঙ্গল ও গাছপালা এর অভ্যন্তরীণ বন্ধন মজবুত রাখে। এতে করে একদিকে যেমন উজাড় হচ্ছে পাহাড়, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ,অন্যদিকে ঘটছে প্রাণহানি। পাহাড় কাঁটার কারণে পাহাড়ের বন্ধন দুর্বল হয়ে যায়, এর ফলে পাহাড় ধসের পথ সুগম হয়। পরিণতিতে প্রতি বছরই প্রাণ হারায় মানুষ। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তালিকা থেকে দেখা যায় ৩০টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস রয়েছে, এর মধ্যে ১৫টি পাহাড় অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, গত বছরের হিসাব অনুযায়ী, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের সংখ্যা ৮৩৫। এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত ১৩ বছরে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে ২০০৭ সালে।

সেবার ১২৭ জনের প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। পাহাড় ধসের প্রধান কারণ পাহাড়ি বন, নির্বিচারে গাছপালা কেটে ফেলা। আবার প্রভাবশালী মহলও পাহাড় কেটে বাড়িঘর তৈরি করে ভাড়া দিয়ে থাকে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে পাহাড় কাঁটার অভিযোগ রয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশের মাটি কেটে বসতি স্থাপন করে হত-দরিদ্র অনেকেই সেখানে বসবাস করে। এইসব পাহাড় কেটে অস্থায়ী বাড়ি নির্মাণ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের কাছে সেগুলোকে ভাড়াও দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ভাড়াটেদের নিরাপত্তার কথা বিন্দুমাত্রও ভাবা হচ্ছে না। প্রায় এক লাখ মানুষ বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাহাড় ও পাহাড়ি ঢালগুলোতে বসবাস করে। কিন্তু এ ব্যাপারে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়না,ফলে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জেলাগুলোয় পাহাড় কাটা, অবৈধ স্থাপনা ও বসতি নির্মাণ বন্ধ হচ্ছেনা।

পাহাড় কাঁটার পেছনে শুধু দখলদাররাই দায়ী নয়, বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে নিয়ম না মেনে সরকারিভাবেই পাহাড় কাটা হয়। আবার বাণিজ্যিক কারণে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে, ফলে পাহাড় প্রাকৃতিকভাবে ধস প্রতিরোধের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। নির্বিচারে পাহাড় কাঁটার কারণে শুধু পাহাড় ধস নয়, এর ফলে একদিকে চট্টগ্রাম নগরী দিন দিন শ্রীহীন হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে পাহাড় থেকে নেমে আসা বালিতে নগরীর নালা-নর্দমা ভরাট হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরানোর স্থায়ী উদ্যোগ নিতে হবে। অস্থায়ী ব্যবস্থা নিয়ে পাহাড় ধসে প্রাণহানি এড়ানো যাবে না। বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টি হবে, পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটবে।

পাহাড় ধসে এবার যেন হতাহতের ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি পাহাড়কে যারা অর্থলাভের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। পাশাপাশি পাহাড়কে যারা অর্থলাভের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

নাগরিক ডেস্ক

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩,  11:05 AM

news image

বর্ষাকালে বা অতিবৃষ্টিতে পাহাড় বা টিলাধসের ঘটনা এ দেশে নতুন নয়। অতীতে চট্টগ্রাম ও সিলেটে একাধিক ঘটনা বিপুল প্রাণহানি ঘটেছে। এ নিয়ে নানা পদক্ষেপ এবং উদ্যোগ নেওয়া হলেও বন্ধ নেই পাহাড় ও টিলা কাটা থেমে নেই ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসও। নির্বিচারে পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন এবং বন-জঙ্গল ও গাছপালা উজাড় করার কারণেই চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ঘনঘন পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে।

পাহাড় ধসের অন্যতম কারণ পাহাড় কাটা, যার ফলে পাহাড়ের গাঠনিক শক্তি ক্ষয়ে যায়। পাহাড়ের গায়ে জন্মানো বন-জঙ্গল ও গাছপালা এর অভ্যন্তরীণ বন্ধন মজবুত রাখে। এতে করে একদিকে যেমন উজাড় হচ্ছে পাহাড়, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ,অন্যদিকে ঘটছে প্রাণহানি। পাহাড় কাঁটার কারণে পাহাড়ের বন্ধন দুর্বল হয়ে যায়, এর ফলে পাহাড় ধসের পথ সুগম হয়। পরিণতিতে প্রতি বছরই প্রাণ হারায় মানুষ। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তালিকা থেকে দেখা যায় ৩০টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস রয়েছে, এর মধ্যে ১৫টি পাহাড় অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, গত বছরের হিসাব অনুযায়ী, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের সংখ্যা ৮৩৫। এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত ১৩ বছরে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে ২০০৭ সালে।

সেবার ১২৭ জনের প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। পাহাড় ধসের প্রধান কারণ পাহাড়ি বন, নির্বিচারে গাছপালা কেটে ফেলা। আবার প্রভাবশালী মহলও পাহাড় কেটে বাড়িঘর তৈরি করে ভাড়া দিয়ে থাকে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে পাহাড় কাঁটার অভিযোগ রয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশের মাটি কেটে বসতি স্থাপন করে হত-দরিদ্র অনেকেই সেখানে বসবাস করে। এইসব পাহাড় কেটে অস্থায়ী বাড়ি নির্মাণ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের কাছে সেগুলোকে ভাড়াও দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ভাড়াটেদের নিরাপত্তার কথা বিন্দুমাত্রও ভাবা হচ্ছে না। প্রায় এক লাখ মানুষ বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাহাড় ও পাহাড়ি ঢালগুলোতে বসবাস করে। কিন্তু এ ব্যাপারে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়না,ফলে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জেলাগুলোয় পাহাড় কাটা, অবৈধ স্থাপনা ও বসতি নির্মাণ বন্ধ হচ্ছেনা।

পাহাড় কাঁটার পেছনে শুধু দখলদাররাই দায়ী নয়, বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে নিয়ম না মেনে সরকারিভাবেই পাহাড় কাটা হয়। আবার বাণিজ্যিক কারণে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে, ফলে পাহাড় প্রাকৃতিকভাবে ধস প্রতিরোধের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। নির্বিচারে পাহাড় কাঁটার কারণে শুধু পাহাড় ধস নয়, এর ফলে একদিকে চট্টগ্রাম নগরী দিন দিন শ্রীহীন হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে পাহাড় থেকে নেমে আসা বালিতে নগরীর নালা-নর্দমা ভরাট হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরানোর স্থায়ী উদ্যোগ নিতে হবে। অস্থায়ী ব্যবস্থা নিয়ে পাহাড় ধসে প্রাণহানি এড়ানো যাবে না। বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টি হবে, পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটবে।

পাহাড় ধসে এবার যেন হতাহতের ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি পাহাড়কে যারা অর্থলাভের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। পাশাপাশি পাহাড়কে যারা অর্থলাভের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।