রুট পারমিটহীন বাসের রাজত্ব: রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে কবে?

নাগরিক সংবাদ সম্পাদকীয়
২৭ জুলাই, ২০২৫, 10:10 PM

রুট পারমিটহীন বাসের রাজত্ব: রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে কবে?
রাজধানী ঢাকার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার চিত্র দিন দিন আরও স্পষ্ট হচ্ছে। আইন থাকলেও বাস্তবায়নের অভাবে রুট পারমিট ছাড়া হাজারো বাস ও লেগুনা নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। ফলে একদিকে যেমন যাত্রী ভোগান্তি বাড়ছে, অন্যদিকে সড়কে তৈরি হচ্ছে অস্থির প্রতিযোগিতা, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে অনুমোদিত রুট রয়েছে ৩৮৮টি, অথচ তার মধ্যে মাত্র ১১০টি রুট সচল। বাকি রুটগুলোয় বাস না থাকায় কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। আরও উদ্বেগজনক তথ্য হলো, বর্তমানে ১ হাজার ৬৪৬টি বাস কোনো রুট পারমিট ছাড়াই ঢাকায় চলাচল করছে। অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও নির্ধারিত রুটে বাস না চালিয়ে অন্য রুটে চলে যাচ্ছে অনেক মালিকানাধীন পরিবহন-শুধু বেশি যাত্রী ও লাভের আশায়।
এতে নির্ধারিত রুটের বাস সংকট এবং অন্য রুটে অতিরিক্ত বাসের চাপে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক জট। এ সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠেছে যখন দেখা যায়, বিভিন্ন রুটে অনুমোদনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি বাস চলছে। প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, শ্রাবণী ট্রান্সপোর্টের অনুমোদন আছে ৩৫টি বাসের, অথচ চলছে ১০৩টি। একইভাবে এ-২২৫ নম্বর রুটে অনুমোদন ৪২টির হলেও বাস্তবে চলছে ১৮০টির মতো গাড়ি।
এসব বাসের বড় অংশই ফিটনেসবিহীন বা রুট পারমিটবিহীন। মূলত, পরিবহন মালিকদের প্রভাব, আরটিসি কমিটির নিষ্ক্রিয়তা ও ডিটিসিএর সীমিত কার্যকারিতার ফলে রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থায় গড়ে উঠেছে একধরনের ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট’। এই আরটিসি কমিটি গত পাঁচ বছরে একটি বৈঠকও করেনি-যেখানে কমিটির আহ্বায়ক ডিএমপি কমিশনার ও সদস্য সচিব বিআরটিএ পরিচালক। অথচ তাদের দায়িত্ব ছিল রুট পারমিট, ফিটনেস ও সড়ক শৃঙ্খলার দেখভাল করা।
রুট পারমিট ছাড়াই বাস চলার নেপথ্যে একটি বড় যুক্তি হিসেবে ডিটিসিএ বলছে, বাস রুট র্যাশনালাইজেশন প্রকল্প চলমান থাকার কারণে ২০১৮ সাল থেকে নতুন কোনো রুট পারমিট ইস্যু করা হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই অজুহাতে পুরো রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থাকে কীভাবে অরাজকতায় ছেড়ে দেওয়া যায়? যাত্রীসাধারণ কেন ভোগান্তির শিকার হবে? পরিবহন খাতে এই বিশৃঙ্খলার মূলে রয়েছে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা, জবাবদিহির অভাব এবং রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় পরিচালিত পরিবহন মালিকদের দাপট। ফলে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে নগরবাসী প্রতিদিন ভোগছে যানজট, দুর্ঘটনা আর সময় অপচয়ের বিড়ম্বনায়।
এই সংকট দ্রুত সমাধান না করলে নগরবাসি আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই দেরি না করে এসব অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে এখনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে জনমনে স্বস্তি ফিরাতে হবে।
নাগরিক সংবাদ সম্পাদকীয়
২৭ জুলাই, ২০২৫, 10:10 PM

রাজধানী ঢাকার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার চিত্র দিন দিন আরও স্পষ্ট হচ্ছে। আইন থাকলেও বাস্তবায়নের অভাবে রুট পারমিট ছাড়া হাজারো বাস ও লেগুনা নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। ফলে একদিকে যেমন যাত্রী ভোগান্তি বাড়ছে, অন্যদিকে সড়কে তৈরি হচ্ছে অস্থির প্রতিযোগিতা, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে অনুমোদিত রুট রয়েছে ৩৮৮টি, অথচ তার মধ্যে মাত্র ১১০টি রুট সচল। বাকি রুটগুলোয় বাস না থাকায় কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। আরও উদ্বেগজনক তথ্য হলো, বর্তমানে ১ হাজার ৬৪৬টি বাস কোনো রুট পারমিট ছাড়াই ঢাকায় চলাচল করছে। অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও নির্ধারিত রুটে বাস না চালিয়ে অন্য রুটে চলে যাচ্ছে অনেক মালিকানাধীন পরিবহন-শুধু বেশি যাত্রী ও লাভের আশায়।
এতে নির্ধারিত রুটের বাস সংকট এবং অন্য রুটে অতিরিক্ত বাসের চাপে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক জট। এ সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠেছে যখন দেখা যায়, বিভিন্ন রুটে অনুমোদনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি বাস চলছে। প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, শ্রাবণী ট্রান্সপোর্টের অনুমোদন আছে ৩৫টি বাসের, অথচ চলছে ১০৩টি। একইভাবে এ-২২৫ নম্বর রুটে অনুমোদন ৪২টির হলেও বাস্তবে চলছে ১৮০টির মতো গাড়ি।
এসব বাসের বড় অংশই ফিটনেসবিহীন বা রুট পারমিটবিহীন। মূলত, পরিবহন মালিকদের প্রভাব, আরটিসি কমিটির নিষ্ক্রিয়তা ও ডিটিসিএর সীমিত কার্যকারিতার ফলে রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থায় গড়ে উঠেছে একধরনের ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট’। এই আরটিসি কমিটি গত পাঁচ বছরে একটি বৈঠকও করেনি-যেখানে কমিটির আহ্বায়ক ডিএমপি কমিশনার ও সদস্য সচিব বিআরটিএ পরিচালক। অথচ তাদের দায়িত্ব ছিল রুট পারমিট, ফিটনেস ও সড়ক শৃঙ্খলার দেখভাল করা।
রুট পারমিট ছাড়াই বাস চলার নেপথ্যে একটি বড় যুক্তি হিসেবে ডিটিসিএ বলছে, বাস রুট র্যাশনালাইজেশন প্রকল্প চলমান থাকার কারণে ২০১৮ সাল থেকে নতুন কোনো রুট পারমিট ইস্যু করা হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই অজুহাতে পুরো রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থাকে কীভাবে অরাজকতায় ছেড়ে দেওয়া যায়? যাত্রীসাধারণ কেন ভোগান্তির শিকার হবে? পরিবহন খাতে এই বিশৃঙ্খলার মূলে রয়েছে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা, জবাবদিহির অভাব এবং রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় পরিচালিত পরিবহন মালিকদের দাপট। ফলে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে নগরবাসী প্রতিদিন ভোগছে যানজট, দুর্ঘটনা আর সময় অপচয়ের বিড়ম্বনায়।
এই সংকট দ্রুত সমাধান না করলে নগরবাসি আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই দেরি না করে এসব অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে এখনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে জনমনে স্বস্তি ফিরাতে হবে।