শিরোনামঃ
শাহবাগ অবরোধ: পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ, ৩২ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক চট্টগ্রামে ওএমএসের চাল-আটা চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না কমিউনিটি ক্লিনিক সংকট: গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়ছে কেন? সেমিফাইনালও বয়কট করলো ভারত, ফাইনালে পাকিস্তান কিডনি সুস্থ রাখতে খেতে পারেন এই দুই খাবার মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার, ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিজেই নিজেকে ট্রল করলেন উর্বশী গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ গঠনে নারী সমাজের অংশগ্রহণ অপরিহার্য: তারেক রহমান আগামী কিছুদিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে : আইন উপদেষ্টা সংসদের উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসনের, সদস্য মনোনীত হবেন পিআর পদ্ধতিতে

সেন্ট মার্টিনের সামুদ্রিক কচ্ছপ বাঁচাতে উদ্যোগ নিন

#
news image

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন বেশ কয়েক প্রজাতির কচ্ছপের প্রজননক্ষেত্র। কয়েক বছর আগেও ডিম পাড়ার জন্য গভীর সমুদ্র থেকে ছুটে আসত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মা কচ্ছপ। তবে নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার, বেওয়ারিস কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত পর্যটকের উপস্থিতি ও দূষণের কারণে কচ্ছপের নিরাপদ প্রজননক্ষেত্রটি ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। এর মধ্যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে মা কচ্ছপ ডিম পাড়তে আসতে শুরু করেছে। তবে নিরাপদ পরিবেশ না থাকায় মা কচ্ছপের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

সাধারণত দ্বীপের উত্তর, উত্তরপশ্চিম, পূর্ব ও পূর্ব-দক্ষিণ দিকের প্রবাল এলাকায় জেলেরা জাল ফেলেন। এসব জালে আটকে সামুদ্রিক প্রাণী মারা যায়। প্রচুর সামুদ্রিক ঘাস, সিউইড ও শৈবাল থাকায় এটি কচ্ছপের খাবারের ভালো জায়গা। প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে মা কচ্ছপরা ডিম পাড়তে আসার সময় জালে আটকা পড়ে মারা যায়। সেন্টমার্টিন দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ।

জনশ্রুতি বলছে এ দ্বীপে মানুষের বাস আনুমানিক ৩০০ বছর। সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রবাল দ্বীপের প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সমুদ্রের তলদেশে তাদের বাস। প্রজনন উদ্দেশ্যে শুধু ডিম পাড়ার জন্য সমুদ্রের বালিময় নিরাপদ এলাকায় আসে। পৃথিবীর চৌম্বকীয় আকর্ষণ অনুসরণ করে তারা ডিম পাড়ার উপযুক্ত তীর বেছে নেয়।

এজন্য তাদের হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে হয়। প্রজাতিভেদে মা কচ্ছপ মাত্র একদিন (বা কয়েক ঘণ্টা) ডাঙায় অবস্থান করে কয়েক ডজন বা শ’খানেক ডিম পাড়ে এবং প্রাকৃতিক উপায়ে সমুদ্রে ফিরে। পরিবেশ ও প্রজাতিভেদে ডিমগুলো ৬০ দিনের মধ্যে হ্যাচ করে এবং একদিন বয়সী বাচ্চা কচ্ছপ দিনে সূর্যের আলো বা রাতে চাঁদের আলোয় নিরাপদে সমুদ্রে ফিরে যায়।

শুধু মা কচ্ছপ শত শত মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ডাঙ্গায় এসে ডিম পাড়ে এবং অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো মা-কচ্ছপ কর্তৃক বাচ্চা কচ্ছপদের লালনপালন, সুরক্ষার প্রয়োজন পড়ে না। প্রাকৃতিকভাবে সমুদ্রতল বিচরণক্ষেত্র করে। স্পষ্টত কচ্ছপ স্তন্যপায়ী প্রাণী নয়, সরীসৃপ। দেশের বঙ্গোপসাগর অববাহিকায় পাওয়া পাঁচ প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপের মধ্যে তিন প্রজাতির দেখতে পাওয়া যায় সেন্টমার্টিনে। দ্বীপের শিলবুনিয়া, গলাচিপা ও কোণাপাড়া সমুদ্র সৈকতে দেখতে পাওয়া তিন প্রজাতির স্ট্যাটাস তিন ধরনের।

সবুজ কচ্ছপ বিপন্ন, হকসবিল অত্যন্ত বিপন্ন এবং অলিভ রিডলি ঝুঁকিপূর্ণ  অবস্থায় আছে। গ্রিন কচ্ছপের (৭০-৮০ বছর) আয়ুষ্কাল সবচেয়ে বেশি; হকসবিল ও অলিভ রিডলের জীবনকাল প্রায় সমান (৫০-৬০ বছর)। সবুজ কচ্ছপের ডিম পাড়ার সময়কাল জুন-নভেম্বর, হকসবিলের এপ্রিল-নভেম্বর, আর অলিভ রিডলের নভেম্বর-মার্চ। সবুজ কচ্ছপ ১০০টির বেশী ডিম পাড়ে। বাংলাদেশে সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রজাতি এবং তাদের অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। দ্বীপে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সৈকতে সামুদ্রিক কচ্ছপ মৃত্যু বাড়ছে।

এভাবে চলতে থাকলে কচ্ছপ হারিয়ে যাবে। তাই এ ব্যাপারে সরকারের গুরুত্ব দেয়া দরকার।’ যত দ্রুত সম্ভব সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্যোগ নিতে হবে।

নাগরিক নিউজ ডেস্ক

২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪,  10:37 PM

news image

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন বেশ কয়েক প্রজাতির কচ্ছপের প্রজননক্ষেত্র। কয়েক বছর আগেও ডিম পাড়ার জন্য গভীর সমুদ্র থেকে ছুটে আসত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মা কচ্ছপ। তবে নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার, বেওয়ারিস কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত পর্যটকের উপস্থিতি ও দূষণের কারণে কচ্ছপের নিরাপদ প্রজননক্ষেত্রটি ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। এর মধ্যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে মা কচ্ছপ ডিম পাড়তে আসতে শুরু করেছে। তবে নিরাপদ পরিবেশ না থাকায় মা কচ্ছপের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

সাধারণত দ্বীপের উত্তর, উত্তরপশ্চিম, পূর্ব ও পূর্ব-দক্ষিণ দিকের প্রবাল এলাকায় জেলেরা জাল ফেলেন। এসব জালে আটকে সামুদ্রিক প্রাণী মারা যায়। প্রচুর সামুদ্রিক ঘাস, সিউইড ও শৈবাল থাকায় এটি কচ্ছপের খাবারের ভালো জায়গা। প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে মা কচ্ছপরা ডিম পাড়তে আসার সময় জালে আটকা পড়ে মারা যায়। সেন্টমার্টিন দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ।

জনশ্রুতি বলছে এ দ্বীপে মানুষের বাস আনুমানিক ৩০০ বছর। সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রবাল দ্বীপের প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সমুদ্রের তলদেশে তাদের বাস। প্রজনন উদ্দেশ্যে শুধু ডিম পাড়ার জন্য সমুদ্রের বালিময় নিরাপদ এলাকায় আসে। পৃথিবীর চৌম্বকীয় আকর্ষণ অনুসরণ করে তারা ডিম পাড়ার উপযুক্ত তীর বেছে নেয়।

এজন্য তাদের হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে হয়। প্রজাতিভেদে মা কচ্ছপ মাত্র একদিন (বা কয়েক ঘণ্টা) ডাঙায় অবস্থান করে কয়েক ডজন বা শ’খানেক ডিম পাড়ে এবং প্রাকৃতিক উপায়ে সমুদ্রে ফিরে। পরিবেশ ও প্রজাতিভেদে ডিমগুলো ৬০ দিনের মধ্যে হ্যাচ করে এবং একদিন বয়সী বাচ্চা কচ্ছপ দিনে সূর্যের আলো বা রাতে চাঁদের আলোয় নিরাপদে সমুদ্রে ফিরে যায়।

শুধু মা কচ্ছপ শত শত মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ডাঙ্গায় এসে ডিম পাড়ে এবং অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো মা-কচ্ছপ কর্তৃক বাচ্চা কচ্ছপদের লালনপালন, সুরক্ষার প্রয়োজন পড়ে না। প্রাকৃতিকভাবে সমুদ্রতল বিচরণক্ষেত্র করে। স্পষ্টত কচ্ছপ স্তন্যপায়ী প্রাণী নয়, সরীসৃপ। দেশের বঙ্গোপসাগর অববাহিকায় পাওয়া পাঁচ প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপের মধ্যে তিন প্রজাতির দেখতে পাওয়া যায় সেন্টমার্টিনে। দ্বীপের শিলবুনিয়া, গলাচিপা ও কোণাপাড়া সমুদ্র সৈকতে দেখতে পাওয়া তিন প্রজাতির স্ট্যাটাস তিন ধরনের।

সবুজ কচ্ছপ বিপন্ন, হকসবিল অত্যন্ত বিপন্ন এবং অলিভ রিডলি ঝুঁকিপূর্ণ  অবস্থায় আছে। গ্রিন কচ্ছপের (৭০-৮০ বছর) আয়ুষ্কাল সবচেয়ে বেশি; হকসবিল ও অলিভ রিডলের জীবনকাল প্রায় সমান (৫০-৬০ বছর)। সবুজ কচ্ছপের ডিম পাড়ার সময়কাল জুন-নভেম্বর, হকসবিলের এপ্রিল-নভেম্বর, আর অলিভ রিডলের নভেম্বর-মার্চ। সবুজ কচ্ছপ ১০০টির বেশী ডিম পাড়ে। বাংলাদেশে সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রজাতি এবং তাদের অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। দ্বীপে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সৈকতে সামুদ্রিক কচ্ছপ মৃত্যু বাড়ছে।

এভাবে চলতে থাকলে কচ্ছপ হারিয়ে যাবে। তাই এ ব্যাপারে সরকারের গুরুত্ব দেয়া দরকার।’ যত দ্রুত সম্ভব সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্যোগ নিতে হবে।