শিরোনামঃ
নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ৫ আগস্ট জাতির সামনে উপস্থাপিত হবে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ছাত্রদলকে রুখে দেওয়ার মত ক্ষমতা কারও নেই: সমাবেশে সভাপতি রাকিবুল শাহবাগ অবরোধ: পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ, ৩২ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক চট্টগ্রামে ওএমএসের চাল-আটা চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না কমিউনিটি ক্লিনিক সংকট: গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়ছে কেন? সেমিফাইনালও বয়কট করলো ভারত, ফাইনালে পাকিস্তান কিডনি সুস্থ রাখতে খেতে পারেন এই দুই খাবার মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার, ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিজেই নিজেকে ট্রল করলেন উর্বশী

সোনালী ব্যাংকে বিডিবিএল  আর সিটি ব্যাংকে একীভূত হচ্ছে বেসিক ব্যাংক

#
news image

বেসরকারি খাতের পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংকের মার্জারের পর এবার রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) একীভূত হচ্ছে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে। সোমবার (৮ এপ্রিল) দুই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদই মার্জারের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেলেই বিডিবিএল অধিগ্রহণের বাকি কাজ এগিয়ে নেবে সোনালী ব্যাংক।

বিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান কাজী বলেন, ‘মার্জারের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে নির্দেশনা ছিল, সেটা বোর্ডকে জানানো হয়েছে। পর্ষদ একমত হয়েছে যে, সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ হবে বিডিবিএল।’ এখন বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা হবে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রক্রিয়া হবে।” অপরদিকে,  রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে। সোমবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।

এর আগে গত মাসে সিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে বেসিক ব্যাংককে একীভূত করার বিষয়ে পরামর্শ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকাল ১০টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিনের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে বেসিক ব্যাংককে সিটির সঙ্গে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে, বেসিক ব্যাংক তার অন্যতম। অন্যদিকে সিটি ব্যাংক দেশের প্রথম সারির একটি ব্যাংক। এ বিষয়ে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, স্বতঃপ্রণোদিত একত্রীকরণ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের নীতি সহায়তা যেহেতু অনেক বেশি, তাই সবল ব্যাংক হিসেবে কোনো দুর্বল ব্যাংককে সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা যায় কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।

যেটাই করি না কেন, আগে ওই দুর্বল ব্যাংক পুনর্গঠন করব এবং ৩ বছর বা তার বেশি সময় পরে দুই ব্যালান্সশিট এক করব। এটাই আমাদের ইচ্ছা। তিনি আরও বলেন, পলিসিতে বলা আছে ব্যাংক পুনর্গঠনে ৩ বছর সময় পাব। ভালো পথে এই তিনটা বছর গেলে আমি আশাবাদী সময় আরও বাড়বে। দুর্বল ব্যাংকগুলো নিয়ে আমাদের বিশ্লেষণ চলছেÑ এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।

জানা গেছে, সিটি ব্যাংকের সঙ্গে বেসিক ব্যাংকের একীভূতকরণ হবে স্বেচ্ছায়। বেসিক ব্যাংক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংক। সম্প্রতি ব্যাংক একীভূতকরণের নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে স্বেচ্ছায় এবং বাধ্যতামূলকভাবে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণের বিস্তারিত দিকনির্দেশনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় এরই মধ্যে বেসরকারি খাতের এক্সিমের সঙ্গে পদ্মা একীভূত হওয়ার বিষয়ে এমওইউ সই করেছে। আর গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক থেকে রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে বিডিবিএল এবং

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বেসিক ব্যাংক ১৯৮৯ সালে কার্যক্রম শুরু করে। বেসরকারি খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ে অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা থেকে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শুরুতে ব্যাংকটি বিসিসি ফাউন্ডেশনের ৭০ শতাংশ শেয়ার এবং বাংলাদেশ সরকারের ৩০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে একটি যৌথ উদ্যোগে শুরু করে। বিসিসি ফাউন্ডেশন অকার্যকর হওয়ায় এবং বিসিসিআই বন্ধ হওয়ার পর ১৯৯২ সালের জুন মাসে সরকার ব্যাংকের শতভাগ মালিকানা গ্রহণ করে। বেসিক ব্যাংক এক সময় ভালো ব্যাংক ছিল। ব্যাংকটি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দুদকের তদন্তে বেরিয়ে আসে। ওই সময় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন বাগেরহাটের একটি আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আবদুল হাই বাচ্চু। এ বিষয়ে মামলা ও বিচারিক কার্যক্রম এখনো চলছে।

ব্যাংক একীভূতকরণ নীতিমালা অনুযায়ী, পারস্পরিক সম্মতিতে একীভূত হতে আগ্রহী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে প্রাথমিক সম্মতি নেওয়ার আগে তাদের পরিচালনা পর্ষদের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরে যথাযথ মূল্যায়নের জন্য একীভূত প্রস্তাবের নিরীক্ষার জন্য একজন নিরীক্ষক নিয়োগ দেবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন চাওয়ার আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতির জন্য একটি বিশেষ সভা করতে হবে।

নাগরিক প্রতিবেদন

০৯ এপ্রিল, ২০২৪,  11:10 AM

news image

বেসরকারি খাতের পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংকের মার্জারের পর এবার রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) একীভূত হচ্ছে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে। সোমবার (৮ এপ্রিল) দুই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদই মার্জারের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেলেই বিডিবিএল অধিগ্রহণের বাকি কাজ এগিয়ে নেবে সোনালী ব্যাংক।

বিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান কাজী বলেন, ‘মার্জারের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে নির্দেশনা ছিল, সেটা বোর্ডকে জানানো হয়েছে। পর্ষদ একমত হয়েছে যে, সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ হবে বিডিবিএল।’ এখন বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা হবে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রক্রিয়া হবে।” অপরদিকে,  রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে। সোমবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।

এর আগে গত মাসে সিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে বেসিক ব্যাংককে একীভূত করার বিষয়ে পরামর্শ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকাল ১০টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিনের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে বেসিক ব্যাংককে সিটির সঙ্গে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে, বেসিক ব্যাংক তার অন্যতম। অন্যদিকে সিটি ব্যাংক দেশের প্রথম সারির একটি ব্যাংক। এ বিষয়ে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, স্বতঃপ্রণোদিত একত্রীকরণ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের নীতি সহায়তা যেহেতু অনেক বেশি, তাই সবল ব্যাংক হিসেবে কোনো দুর্বল ব্যাংককে সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা যায় কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।

যেটাই করি না কেন, আগে ওই দুর্বল ব্যাংক পুনর্গঠন করব এবং ৩ বছর বা তার বেশি সময় পরে দুই ব্যালান্সশিট এক করব। এটাই আমাদের ইচ্ছা। তিনি আরও বলেন, পলিসিতে বলা আছে ব্যাংক পুনর্গঠনে ৩ বছর সময় পাব। ভালো পথে এই তিনটা বছর গেলে আমি আশাবাদী সময় আরও বাড়বে। দুর্বল ব্যাংকগুলো নিয়ে আমাদের বিশ্লেষণ চলছেÑ এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।

জানা গেছে, সিটি ব্যাংকের সঙ্গে বেসিক ব্যাংকের একীভূতকরণ হবে স্বেচ্ছায়। বেসিক ব্যাংক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংক। সম্প্রতি ব্যাংক একীভূতকরণের নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে স্বেচ্ছায় এবং বাধ্যতামূলকভাবে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণের বিস্তারিত দিকনির্দেশনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় এরই মধ্যে বেসরকারি খাতের এক্সিমের সঙ্গে পদ্মা একীভূত হওয়ার বিষয়ে এমওইউ সই করেছে। আর গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক থেকে রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে বিডিবিএল এবং

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বেসিক ব্যাংক ১৯৮৯ সালে কার্যক্রম শুরু করে। বেসরকারি খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ে অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা থেকে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শুরুতে ব্যাংকটি বিসিসি ফাউন্ডেশনের ৭০ শতাংশ শেয়ার এবং বাংলাদেশ সরকারের ৩০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে একটি যৌথ উদ্যোগে শুরু করে। বিসিসি ফাউন্ডেশন অকার্যকর হওয়ায় এবং বিসিসিআই বন্ধ হওয়ার পর ১৯৯২ সালের জুন মাসে সরকার ব্যাংকের শতভাগ মালিকানা গ্রহণ করে। বেসিক ব্যাংক এক সময় ভালো ব্যাংক ছিল। ব্যাংকটি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দুদকের তদন্তে বেরিয়ে আসে। ওই সময় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন বাগেরহাটের একটি আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আবদুল হাই বাচ্চু। এ বিষয়ে মামলা ও বিচারিক কার্যক্রম এখনো চলছে।

ব্যাংক একীভূতকরণ নীতিমালা অনুযায়ী, পারস্পরিক সম্মতিতে একীভূত হতে আগ্রহী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে প্রাথমিক সম্মতি নেওয়ার আগে তাদের পরিচালনা পর্ষদের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরে যথাযথ মূল্যায়নের জন্য একীভূত প্রস্তাবের নিরীক্ষার জন্য একজন নিরীক্ষক নিয়োগ দেবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন চাওয়ার আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতির জন্য একটি বিশেষ সভা করতে হবে।