লাগামহীন বাজার,অস্বস্তিতে ক্রেতা

নাগরিক প্রতিবেদন
১২ মার্চ, ২০২৪, 4:02 PM

লাগামহীন বাজার,অস্বস্তিতে ক্রেতা
আজ মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগেই রোজায় বেশি ব্যবহার হওয়া পণ্যগুলোর দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বেশি অস্থিরতা দেখা দিয়েছে লেবু শসা ও বেগুনের দাম। সেই সাথে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে ইফতারের অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান খেজুর। পণ্যটির দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। রাজধানীর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইফতারির অন্যতম উপকরণ হাইব্রিড শসার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, দেশী ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। অথচ কয়েকদিন আগেও দেশী ও হাইব্রিড দুই জাতের শসা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। গত বছরও রোজার দুই দিন আগেই শতক ছুঁয়েছিল বেগুন। তবে এবার দর শতকে না গেলেও কাছাকাছি চলে এসেছে। বড় আকারের এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। আর ছোট লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হালি।
বিক্রেতারা বলছেন, বছরের এ সময়টাতে লেবুর দর কিছুটা বেশি থাকে। এ ছাড়া রমজান চলে আসায় চাহিদা বেড়েছে, সে তুলনায় সরবরাহ কম। সে কারণে দাম কিছুটা বেশি। এ দিকে রমজান মাস এলেই ভোক্তাদের চাহিদার শীর্ষে থাকে খেজুর। প্রতি বছরই রোজায় খেজুরের দাম কিছুটা বাড়ে। তবে এবারের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সাধারণ মানের বিভিন্ন জাতের খেজুরও সাধারণ মানুষের অনেকটা নাগালের বাইরে। বাজারে অন্য নিত্যপণ্যের দামে চিড়েচ্যাপ্টা মানুষের কাছে ইফতারিতে খেজুর হয়ে উঠেছে রীতিমতো বিলাসী পণ্য। বাজার ঘুরে দেখা যায়, সৌদি, মিসর, দুবাই, তিউনিসিয়া, ইরান থেকে আসা বিভিন্ন জাতের খেজুরে ভরা বাজার। আমদানি করা নানান জাতের খেজুরের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন জাতের মরিয়ম, মাবরুম, কালমি, দাবাস, জাহিদি, সায়ের, আজওয়া, মেডজুল, সুক্কারি ও মাশরুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বছর পাইকারিতে পাঁচ কেজি মরিয়ম খেজুর মানভেদে চার হাজার ৩০০ থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ছিল দুই হাজার ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ চার হাজার টাকা। কালমি খেজুর বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ২০০ টাকায়, যা বিগত বছর ছিল দুই হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি পাঁচ কেজি আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫০০ থেকে চার হাজার ২০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ২৬শ’ থেকে সর্বোচ্চ ৩২শ’ টাকা। এ বছর মাবরুম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩৫শ’ থেকে চার হাজার ৫০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ২২শ’ থেকে শুরু করে ৩২শ’ টাকা। গত বছর সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হওয়া মেডজুল এবার বিক্রি হচ্ছে সাড়ে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর দাম বাড়ায় মাবরুম, মরিয়ম, আজওয়া, কালমির যে চাহিদা ছিল সেটা কিছুটা কমেছে। সাধারণ মানুষ বাজারে তুলনামূলক কম দামি খেজুর খুঁজছেন। বাদামতলীতে পাঁচ কেজি ওজনের জাহিদি খেজুরের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ৬৫০ থেকে ৯০০ টাকা। ১৮শ’ টাকায় বিক্রি হওয়া দাবাস বিক্রি হচ্ছে চার হাজার টাকায়।
খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি খেজুরের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে এবার বিভিন্ন জাতের মরিয়ম, মাবরুম, কালমি খেজুর এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকার নিচে মিলছে না। মধ্যমমানের দাবাস, মাশরুখ, সুক্কারি ৫৫০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫০ টাকা কেজি দরের জাহিদি এবার ৩০০ টাকা হাঁকাচ্ছে দাম।
ব্যবসায়ীদের দাবি, আমদানিনির্ভর হওয়ায় আমদানি ব্যয়, ভ্যাট, করসহ নানা খরচের কারণে খেজুরের দাম এবার গতবারের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। এ ছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, কাস্টম ডিউটি ট্যাক্স ও রেগুলেটরি ডিউটি ট্যাক্স দাম বাড়ার প্রধান কারণ।
নাগরিক প্রতিবেদন
১২ মার্চ, ২০২৪, 4:02 PM

আজ মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগেই রোজায় বেশি ব্যবহার হওয়া পণ্যগুলোর দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বেশি অস্থিরতা দেখা দিয়েছে লেবু শসা ও বেগুনের দাম। সেই সাথে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে ইফতারের অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান খেজুর। পণ্যটির দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। রাজধানীর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইফতারির অন্যতম উপকরণ হাইব্রিড শসার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, দেশী ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। অথচ কয়েকদিন আগেও দেশী ও হাইব্রিড দুই জাতের শসা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। গত বছরও রোজার দুই দিন আগেই শতক ছুঁয়েছিল বেগুন। তবে এবার দর শতকে না গেলেও কাছাকাছি চলে এসেছে। বড় আকারের এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। আর ছোট লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হালি।
বিক্রেতারা বলছেন, বছরের এ সময়টাতে লেবুর দর কিছুটা বেশি থাকে। এ ছাড়া রমজান চলে আসায় চাহিদা বেড়েছে, সে তুলনায় সরবরাহ কম। সে কারণে দাম কিছুটা বেশি। এ দিকে রমজান মাস এলেই ভোক্তাদের চাহিদার শীর্ষে থাকে খেজুর। প্রতি বছরই রোজায় খেজুরের দাম কিছুটা বাড়ে। তবে এবারের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সাধারণ মানের বিভিন্ন জাতের খেজুরও সাধারণ মানুষের অনেকটা নাগালের বাইরে। বাজারে অন্য নিত্যপণ্যের দামে চিড়েচ্যাপ্টা মানুষের কাছে ইফতারিতে খেজুর হয়ে উঠেছে রীতিমতো বিলাসী পণ্য। বাজার ঘুরে দেখা যায়, সৌদি, মিসর, দুবাই, তিউনিসিয়া, ইরান থেকে আসা বিভিন্ন জাতের খেজুরে ভরা বাজার। আমদানি করা নানান জাতের খেজুরের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন জাতের মরিয়ম, মাবরুম, কালমি, দাবাস, জাহিদি, সায়ের, আজওয়া, মেডজুল, সুক্কারি ও মাশরুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বছর পাইকারিতে পাঁচ কেজি মরিয়ম খেজুর মানভেদে চার হাজার ৩০০ থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ছিল দুই হাজার ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ চার হাজার টাকা। কালমি খেজুর বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ২০০ টাকায়, যা বিগত বছর ছিল দুই হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি পাঁচ কেজি আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫০০ থেকে চার হাজার ২০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ২৬শ’ থেকে সর্বোচ্চ ৩২শ’ টাকা। এ বছর মাবরুম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩৫শ’ থেকে চার হাজার ৫০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ২২শ’ থেকে শুরু করে ৩২শ’ টাকা। গত বছর সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হওয়া মেডজুল এবার বিক্রি হচ্ছে সাড়ে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর দাম বাড়ায় মাবরুম, মরিয়ম, আজওয়া, কালমির যে চাহিদা ছিল সেটা কিছুটা কমেছে। সাধারণ মানুষ বাজারে তুলনামূলক কম দামি খেজুর খুঁজছেন। বাদামতলীতে পাঁচ কেজি ওজনের জাহিদি খেজুরের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ৬৫০ থেকে ৯০০ টাকা। ১৮শ’ টাকায় বিক্রি হওয়া দাবাস বিক্রি হচ্ছে চার হাজার টাকায়।
খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি খেজুরের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে এবার বিভিন্ন জাতের মরিয়ম, মাবরুম, কালমি খেজুর এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকার নিচে মিলছে না। মধ্যমমানের দাবাস, মাশরুখ, সুক্কারি ৫৫০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫০ টাকা কেজি দরের জাহিদি এবার ৩০০ টাকা হাঁকাচ্ছে দাম।
ব্যবসায়ীদের দাবি, আমদানিনির্ভর হওয়ায় আমদানি ব্যয়, ভ্যাট, করসহ নানা খরচের কারণে খেজুরের দাম এবার গতবারের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। এ ছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, কাস্টম ডিউটি ট্যাক্স ও রেগুলেটরি ডিউটি ট্যাক্স দাম বাড়ার প্রধান কারণ।