জয়পুরহাটের সজনে ডাটা যাচ্ছে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে

আহসান হাবীব আরমান, জয়পুরহাট
১২ এপ্রিল, ২০২৩, 11:26 AM

জয়পুরহাটের সজনে ডাটা যাচ্ছে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে
গ্রীস্মীকালীন সবজি সজনে ডাটার জয়পুরহাট জেলায় বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় এবার গত বছরের চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে। তরকারি হিসেবে সজনের জুড়ি নেই, তাইতো এর কদর রয়েছে সর্বত্র। নতুন ফল হিসবে সমগ্র দেশে সজনের জাহিদা ব্যাপক। এই মৌসুমে জয়পুরহাটে আগাম সজনে ডাটা হাটে বাজারে বেশী মূল্য পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
কিছু পেশাদার ব্যাবসিক সজনে ডাটা এই মৌসুমে ক্রয় করে অন্য এলাকায় বিক্রয় করে আয় করছেন। জয়পুরহাট সদর,পাঁচবিবি,কালাই,আক্কেলপুর,ক্ষেতলালসহ সবখানে প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমান সজনে ডাটা ধরেছে। প্রতি হাট-বাজারে দ্বিগুণ আমদানি ও বেড়েছে। নিজ এলাকায় চাহিদা মিটিয়ে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সর্বরাহ হচ্ছে। সজনে ডাটা মুখোরচক ও পুষ্টিগুনে ভরপুর। এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন জেলায় উপজেলায় যে কোন হাট-বাজার থেকে শত শত মণ সজনে ডাটা আমদানি হচ্ছে। নতুন উঠায় স্থানীয় বাজারে সজনে ডাটা পাইকারি ৪০/৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দুর্গাদহ বাজারে গোফফার হোসেন ৫টি গাছ থেকে সজনে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
এছাড়া বিশ্বাসপাড় এলাকায় সজনে ব্যাবসায়ী হাফিজুল হক জানান সমগ্র দেশে সজনের ব্যাপক চাহিদা থাকায় গতবছরের চেয়ে এবছর ব্যাবসাায় লাভ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। জয়পুরহাটে মৌসুমী সাজনে ডাটা ব্যবসায়ীরা নবাব, নারায়ন বিজলুসহ এরা মাছবাজার নতুনহাট দুর্গাদহবাজার থেকে প্রতিদিন ট্রাককে ট্রাক ভর্তি সজনে ডাটা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। গত কয়েক দিন যাবৎ উত্তরাঞ্চলে গাইবান্দা,রংপুর,দিনাজপুর,লালমনিহাট,পাবনা,সিরাজগঞ্জ,যশোহর, কিশরগঞ্জ,জামালপুর, ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সজনে পাঠাতে শুরু করেছি। তাছাড়া সজনে চাষিরা ও এবার লাভবান হয়েছেন। অন্যান্য সবজির চেয়ে সজনে ডাটা পুষ্টিগুণ,ও স্বাদে বেশী হওয়ায় যে কোন বয়সের মানুষ এই তরকারি খেতে ভালবাসে। চিকিৎসাবিদদের মতে সজনে ডাটাতে ক্যালসিয়াম,খনিজ লবং,আয়রনসহ প্রোটিন ও শর্করা জাতীয় খাদ্য রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন এ বি সি সমৃদ্ধ সজনে ডাটা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শরীরের পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে বলে ডাটা ঔষধি সবজি হিসাবে ও ব্যাপক সমাদৃত। এছাড়া সজনে গাছের ছাল এবং পাতা রক্ত আমাশয় পেটের পীড়া ও উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ কার্যকর ভূমিকা রাখে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
সজনে ডাটা প্রধানত দুই প্রজাতির । এর মধ্যে এক প্রজাতির বছরে তিন থেকে চার বার পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে এর নাম বলা হয় রাইখঞ্জন। অন্য প্রজাতির সজনে বছরের গ্রীস্ম মৌসুমে একবারই পাওয়া যায়। সজনে চাষের জন্য বিশেষ কোন পদ্ধতি গ্রহন করতে হয় না। এর জন্য আলাদা কোন জমি ও প্রয়োজন হয় না। যে কোন পতিত জমি,পুকরপাড়,রাস্তা বা বাঁধের ধার,বাড়ী আঙ্গিনা এমনকি শহরে যে কোন ফাঁকা শুস্ক জায়গায় সজনে গাছ লাগানো যায়। এর কোন বীজ ও প্রয়োজন হয় না। গাছের ডাল কেটে মাঠিতে পুঁতে রাখলেই সজনে গাছ জম্মায়। এর জন্য কোন সার বা পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। অবহেলা অযত্নে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে সজনে গাছ। বড় ও মাঝারি ধরনে এক একটি সজনে গাছে ৬ থেকে ৮ মণ পর্যন্ত সজনে পাওয়া যায়। পতিত জমি,রাস্তার ধার,বাড়ী আঙ্গিনা বা শহরে বাসাবাড়ির আনাচে কানাচে সজনে ডাল লাগিয়ে অনেকেই নিজ চাহিদা মিটিয়ে ও লাভবান হচ্ছে। বিনা খরচে অধিক আয় পাওয়ায় অনেকেই বানিজ্যিকভাবে ও সজনে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে এই জেলায় মাটি ও আবহাওয়া সজনে চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এই এলাকায় সর্বত্রই প্রচুর পরিমান সজনে উৎপাদন হচ্ছে।
এই ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ রাহেলা পারভীন বলেন জয়পুরহাট জেলায় সর্বত্র সজনে চাষে উপযোগী মাঠি ও আবহাওয়া রয়েছে। এখানে বানিজ্যিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ফলে এই জেলায় অনেকে আম,কাঁঠাল,লিচুর বাগানের মত এখন সজনে ডাটার বাগান করতে শুরু করেছে। এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সৃষ্টির মাধ্যমে বেকার কৃষাণিদের কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে।
আহসান হাবীব আরমান, জয়পুরহাট
১২ এপ্রিল, ২০২৩, 11:26 AM

গ্রীস্মীকালীন সবজি সজনে ডাটার জয়পুরহাট জেলায় বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় এবার গত বছরের চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে। তরকারি হিসেবে সজনের জুড়ি নেই, তাইতো এর কদর রয়েছে সর্বত্র। নতুন ফল হিসবে সমগ্র দেশে সজনের জাহিদা ব্যাপক। এই মৌসুমে জয়পুরহাটে আগাম সজনে ডাটা হাটে বাজারে বেশী মূল্য পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
কিছু পেশাদার ব্যাবসিক সজনে ডাটা এই মৌসুমে ক্রয় করে অন্য এলাকায় বিক্রয় করে আয় করছেন। জয়পুরহাট সদর,পাঁচবিবি,কালাই,আক্কেলপুর,ক্ষেতলালসহ সবখানে প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমান সজনে ডাটা ধরেছে। প্রতি হাট-বাজারে দ্বিগুণ আমদানি ও বেড়েছে। নিজ এলাকায় চাহিদা মিটিয়ে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সর্বরাহ হচ্ছে। সজনে ডাটা মুখোরচক ও পুষ্টিগুনে ভরপুর। এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন জেলায় উপজেলায় যে কোন হাট-বাজার থেকে শত শত মণ সজনে ডাটা আমদানি হচ্ছে। নতুন উঠায় স্থানীয় বাজারে সজনে ডাটা পাইকারি ৪০/৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দুর্গাদহ বাজারে গোফফার হোসেন ৫টি গাছ থেকে সজনে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
এছাড়া বিশ্বাসপাড় এলাকায় সজনে ব্যাবসায়ী হাফিজুল হক জানান সমগ্র দেশে সজনের ব্যাপক চাহিদা থাকায় গতবছরের চেয়ে এবছর ব্যাবসাায় লাভ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। জয়পুরহাটে মৌসুমী সাজনে ডাটা ব্যবসায়ীরা নবাব, নারায়ন বিজলুসহ এরা মাছবাজার নতুনহাট দুর্গাদহবাজার থেকে প্রতিদিন ট্রাককে ট্রাক ভর্তি সজনে ডাটা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। গত কয়েক দিন যাবৎ উত্তরাঞ্চলে গাইবান্দা,রংপুর,দিনাজপুর,লালমনিহাট,পাবনা,সিরাজগঞ্জ,যশোহর, কিশরগঞ্জ,জামালপুর, ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সজনে পাঠাতে শুরু করেছি। তাছাড়া সজনে চাষিরা ও এবার লাভবান হয়েছেন। অন্যান্য সবজির চেয়ে সজনে ডাটা পুষ্টিগুণ,ও স্বাদে বেশী হওয়ায় যে কোন বয়সের মানুষ এই তরকারি খেতে ভালবাসে। চিকিৎসাবিদদের মতে সজনে ডাটাতে ক্যালসিয়াম,খনিজ লবং,আয়রনসহ প্রোটিন ও শর্করা জাতীয় খাদ্য রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন এ বি সি সমৃদ্ধ সজনে ডাটা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শরীরের পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে বলে ডাটা ঔষধি সবজি হিসাবে ও ব্যাপক সমাদৃত। এছাড়া সজনে গাছের ছাল এবং পাতা রক্ত আমাশয় পেটের পীড়া ও উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ কার্যকর ভূমিকা রাখে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
সজনে ডাটা প্রধানত দুই প্রজাতির । এর মধ্যে এক প্রজাতির বছরে তিন থেকে চার বার পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে এর নাম বলা হয় রাইখঞ্জন। অন্য প্রজাতির সজনে বছরের গ্রীস্ম মৌসুমে একবারই পাওয়া যায়। সজনে চাষের জন্য বিশেষ কোন পদ্ধতি গ্রহন করতে হয় না। এর জন্য আলাদা কোন জমি ও প্রয়োজন হয় না। যে কোন পতিত জমি,পুকরপাড়,রাস্তা বা বাঁধের ধার,বাড়ী আঙ্গিনা এমনকি শহরে যে কোন ফাঁকা শুস্ক জায়গায় সজনে গাছ লাগানো যায়। এর কোন বীজ ও প্রয়োজন হয় না। গাছের ডাল কেটে মাঠিতে পুঁতে রাখলেই সজনে গাছ জম্মায়। এর জন্য কোন সার বা পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। অবহেলা অযত্নে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে সজনে গাছ। বড় ও মাঝারি ধরনে এক একটি সজনে গাছে ৬ থেকে ৮ মণ পর্যন্ত সজনে পাওয়া যায়। পতিত জমি,রাস্তার ধার,বাড়ী আঙ্গিনা বা শহরে বাসাবাড়ির আনাচে কানাচে সজনে ডাল লাগিয়ে অনেকেই নিজ চাহিদা মিটিয়ে ও লাভবান হচ্ছে। বিনা খরচে অধিক আয় পাওয়ায় অনেকেই বানিজ্যিকভাবে ও সজনে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে এই জেলায় মাটি ও আবহাওয়া সজনে চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এই এলাকায় সর্বত্রই প্রচুর পরিমান সজনে উৎপাদন হচ্ছে।
এই ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ রাহেলা পারভীন বলেন জয়পুরহাট জেলায় সর্বত্র সজনে চাষে উপযোগী মাঠি ও আবহাওয়া রয়েছে। এখানে বানিজ্যিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ফলে এই জেলায় অনেকে আম,কাঁঠাল,লিচুর বাগানের মত এখন সজনে ডাটার বাগান করতে শুরু করেছে। এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সৃষ্টির মাধ্যমে বেকার কৃষাণিদের কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে।