শিরোনামঃ
নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ৫ আগস্ট জাতির সামনে উপস্থাপিত হবে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ছাত্রদলকে রুখে দেওয়ার মত ক্ষমতা কারও নেই: সমাবেশে সভাপতি রাকিবুল শাহবাগ অবরোধ: পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ, ৩২ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক চট্টগ্রামে ওএমএসের চাল-আটা চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না কমিউনিটি ক্লিনিক সংকট: গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়ছে কেন? সেমিফাইনালও বয়কট করলো ভারত, ফাইনালে পাকিস্তান কিডনি সুস্থ রাখতে খেতে পারেন এই দুই খাবার মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার, ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিজেই নিজেকে ট্রল করলেন উর্বশী

রানা প্লাজা ধসের ১১ বছরেও শেষ হয়নি বিচার

#
news image

সাভারের রানা প্লাজা ধস ছিল দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ এক ট্রাজেডি, যে ঘটনা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নাড়া দিয়েছিল বিশ্ব মানবতাকেও। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে সোচ্চার হয়েছিল বিদেশিরাও। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৬ জন। এরপর পেরিয়ে গেছে এক দশক। এই সময়েও শেষ হয়নি বিচার।
উচ্চ আদালতের আদেশে প্রায় ছয় বছর স্থগিত থাকার পর গত বছর এই ঘটনায় হওয়া মূল মামলার বিচার শুরু হয়। এরপর বিচারে কিছুটা গতি এলেও মামলার মূল আসামি ভবন মালিক সোহেল রানা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। তবে আপিল বিভাগে সেই জামিন স্থগিত থাকায় এখনো তিনি মুক্তি পাননি।

 রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ভবন মালিক সোহেল রানা, তার পরিবার, সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়রসহ বিভিন্ন জনের নামে মোট পাঁচটি মামলা হয়। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে একটি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক একটি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিনটি মামলা দায়ের করে। বাণিজ্যিক এ ভবনে পাঁচটি পোশাক কারখানা ছিল। এসব কারখানায় বসানো হয় বৈদ্যুতিক ভারী জেনারেটর, ভারী সুইং মেশিন। রানা প্লাজা ধসের আগের দিন ভবনের তৃতীয় তলায় ফাটল দেখা দেয়। কিন্তু মালিকপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা না করে পরদিন পাঁচটি পোশাক কারখানা চালু করে।

  ঘটনার দিন সকাল ৯টায় রানা প্লাজায় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন একসঙ্গে পোশাক কারখানাগুলো তিনটি জেনারেটর চালু করে। ঠিক তখনই রানা প্লাজা ভবন বিকট শব্দ করে ধসে পড়ে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়।

হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণে গতি:
ভবন ধসের ঘটনায় প্রথমে ‘অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা’র অভিযোগে একটি মামলা করেন সাভার থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে এই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে রানার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়।

২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। রানা প্লাজা ধস হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৪১ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন কেবল ভবনের মালিক সোহেল রানা। আসামিদের মধ্যে সোহেল রানার বাবা আব্দুল খালেক, আবু বক্কর সিদ্দিক ও আবুল হোসেন মারা যান।

অভিযোগ গঠনের পরপর সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়র রেফায়েত উল্লাহ এবং তৎকালীন কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী খানসহ আটজন উচ্চ আদালতে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। তাদের পক্ষে মামলার কার্যক্রম স্থগিতসহ রুল ইস্যু করা হয়।

উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশে আটকে যায় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া। সম্প্রতি মোহাম্মদ আলী খান বাদে অন্য আসামিদের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। অভিযোগ গঠনের সাড়ে পাঁচ বছর পর ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি এই মামলায় ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত এক বছরে মামলাটিতে ৪৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে বলে  জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বিমল সমাদ্দার।  

কবে নাগাদ মামলাটির বিচার শেষ হবে বলে আশা করছেন জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিমল সমাদ্দার বলেন, প্রায় ছয় বছর উচ্চ আদালতের আদেশে এই মামলার বিচারকাজ স্থগিত ছিল। গত বছর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার পর এক বছরে অর্ধশত সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি মাসেই তারিখ হচ্ছে। আমরা ১০/১৫ জন সাক্ষীর প্রতি কোর্ট থেকে সমন ইস্যু করছি। অনেক সাক্ষীকে পাওয়া যাচ্ছে না। মামলার সময় তাদের বর্তমান ঠিকানা দেয়া হলেও তারা এখন সেই ঠিকানায় থাকছেন না। অনেকে অসুস্থ ও পঙ্গু হয়ে গেছেন বলে আদালতে আসতে পারছেন না। তবুও প্রতি তারিখে অন্তত ৫/৭ জন সাক্ষ্য দিচ্ছেন। সাক্ষী এলে কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, এই মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা ৫৯৪ জন। স্বাভাবিকভাবে বিচার শেষ করতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলাটি শেষ করার বিষয়ে আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। আমরা দ্রুত শেষ করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।

হাইকোর্টে সোহেল রানার জামিন, পরে স্থগিত হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন রানা প্লাজার ভবন মালিক সোহেল রানা। গত ৬ এপ্রিল বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। ২০২২ সালের ৬ মার্চ তার জামিন প্রশ্নে রুল ইস্যু করেছিলেন হাইকোর্ট। সেই রুল (অ্যাবসলিউট) যথাযথ ঘোষণা করে তার জামিন মঞ্জুর করা হয়। যদিও গত ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী সেই জামিনের আদেশ স্থগিত করে দেন। আগামী ৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।  

ইমারত আইনের মামলা ৭ বছর ধরে স্থগিত রানা প্লাজা ধসের পর ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন ওইদিন সাভার থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর ভবনের মালিক সোহেল রানাসহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৬ সালের ১৪ জুন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

অভিযোগ গঠনের ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন আসামি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন। যার মধ্যে নিউ ওয়েব বটমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বজলুস সামাদ ও সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের রিভিশন আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে। অন্যদিকে, ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামের রিভিশন মঞ্জুর করে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর আসামি রেফায়েত উল্লাহর পক্ষে উচ্চ আদালত মামলাটির ওপর এক বছরের স্থগিতাদেশ দেন। তাই দীর্ঘদিনেও মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়নি বলে জানান ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল।

এস এম মনিরুল ইসলাম, সাভার

২৩ এপ্রিল, ২০২৪,  5:08 PM

news image

সাভারের রানা প্লাজা ধস ছিল দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ এক ট্রাজেডি, যে ঘটনা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নাড়া দিয়েছিল বিশ্ব মানবতাকেও। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে সোচ্চার হয়েছিল বিদেশিরাও। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৬ জন। এরপর পেরিয়ে গেছে এক দশক। এই সময়েও শেষ হয়নি বিচার।
উচ্চ আদালতের আদেশে প্রায় ছয় বছর স্থগিত থাকার পর গত বছর এই ঘটনায় হওয়া মূল মামলার বিচার শুরু হয়। এরপর বিচারে কিছুটা গতি এলেও মামলার মূল আসামি ভবন মালিক সোহেল রানা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। তবে আপিল বিভাগে সেই জামিন স্থগিত থাকায় এখনো তিনি মুক্তি পাননি।

 রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ভবন মালিক সোহেল রানা, তার পরিবার, সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়রসহ বিভিন্ন জনের নামে মোট পাঁচটি মামলা হয়। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে একটি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক একটি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিনটি মামলা দায়ের করে। বাণিজ্যিক এ ভবনে পাঁচটি পোশাক কারখানা ছিল। এসব কারখানায় বসানো হয় বৈদ্যুতিক ভারী জেনারেটর, ভারী সুইং মেশিন। রানা প্লাজা ধসের আগের দিন ভবনের তৃতীয় তলায় ফাটল দেখা দেয়। কিন্তু মালিকপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা না করে পরদিন পাঁচটি পোশাক কারখানা চালু করে।

  ঘটনার দিন সকাল ৯টায় রানা প্লাজায় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন একসঙ্গে পোশাক কারখানাগুলো তিনটি জেনারেটর চালু করে। ঠিক তখনই রানা প্লাজা ভবন বিকট শব্দ করে ধসে পড়ে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়।

হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণে গতি:
ভবন ধসের ঘটনায় প্রথমে ‘অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা’র অভিযোগে একটি মামলা করেন সাভার থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে এই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে রানার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়।

২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। রানা প্লাজা ধস হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৪১ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন কেবল ভবনের মালিক সোহেল রানা। আসামিদের মধ্যে সোহেল রানার বাবা আব্দুল খালেক, আবু বক্কর সিদ্দিক ও আবুল হোসেন মারা যান।

অভিযোগ গঠনের পরপর সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়র রেফায়েত উল্লাহ এবং তৎকালীন কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী খানসহ আটজন উচ্চ আদালতে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। তাদের পক্ষে মামলার কার্যক্রম স্থগিতসহ রুল ইস্যু করা হয়।

উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশে আটকে যায় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া। সম্প্রতি মোহাম্মদ আলী খান বাদে অন্য আসামিদের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। অভিযোগ গঠনের সাড়ে পাঁচ বছর পর ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি এই মামলায় ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত এক বছরে মামলাটিতে ৪৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে বলে  জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বিমল সমাদ্দার।  

কবে নাগাদ মামলাটির বিচার শেষ হবে বলে আশা করছেন জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিমল সমাদ্দার বলেন, প্রায় ছয় বছর উচ্চ আদালতের আদেশে এই মামলার বিচারকাজ স্থগিত ছিল। গত বছর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার পর এক বছরে অর্ধশত সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি মাসেই তারিখ হচ্ছে। আমরা ১০/১৫ জন সাক্ষীর প্রতি কোর্ট থেকে সমন ইস্যু করছি। অনেক সাক্ষীকে পাওয়া যাচ্ছে না। মামলার সময় তাদের বর্তমান ঠিকানা দেয়া হলেও তারা এখন সেই ঠিকানায় থাকছেন না। অনেকে অসুস্থ ও পঙ্গু হয়ে গেছেন বলে আদালতে আসতে পারছেন না। তবুও প্রতি তারিখে অন্তত ৫/৭ জন সাক্ষ্য দিচ্ছেন। সাক্ষী এলে কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, এই মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা ৫৯৪ জন। স্বাভাবিকভাবে বিচার শেষ করতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলাটি শেষ করার বিষয়ে আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। আমরা দ্রুত শেষ করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।

হাইকোর্টে সোহেল রানার জামিন, পরে স্থগিত হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন রানা প্লাজার ভবন মালিক সোহেল রানা। গত ৬ এপ্রিল বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। ২০২২ সালের ৬ মার্চ তার জামিন প্রশ্নে রুল ইস্যু করেছিলেন হাইকোর্ট। সেই রুল (অ্যাবসলিউট) যথাযথ ঘোষণা করে তার জামিন মঞ্জুর করা হয়। যদিও গত ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী সেই জামিনের আদেশ স্থগিত করে দেন। আগামী ৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।  

ইমারত আইনের মামলা ৭ বছর ধরে স্থগিত রানা প্লাজা ধসের পর ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন ওইদিন সাভার থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর ভবনের মালিক সোহেল রানাসহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৬ সালের ১৪ জুন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

অভিযোগ গঠনের ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন আসামি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন। যার মধ্যে নিউ ওয়েব বটমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বজলুস সামাদ ও সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের রিভিশন আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে। অন্যদিকে, ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামের রিভিশন মঞ্জুর করে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর আসামি রেফায়েত উল্লাহর পক্ষে উচ্চ আদালত মামলাটির ওপর এক বছরের স্থগিতাদেশ দেন। তাই দীর্ঘদিনেও মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়নি বলে জানান ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল।