ঈদে লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি দেবে শহর পাড়ি

নাগরিক প্রতিবেদন
১৮ মার্চ, ২০২৪, 1:18 PM

ঈদে লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি দেবে শহর পাড়ি
আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে যাত্রী পরিবহনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরিবহন মালিকরা। নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে পুরোনো পরিবহনগুলোকে। জোড়াতালি দিয়ে দ্রুতই মেরামত করা হচ্ছে দুর্ঘটনা আক্রান্ত গাড়ি। কোনো কোনো গাড়ির রং, সিট, চাকা ও বডি মেরামত করা হচ্ছে। তবে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, আনফিট গাড়ি, দুর্ঘটনা আক্রান্ত গাড়ি অথবা অনেক দিন বসে থাকা গাড়ি যখন রাস্তায় নামে-তখন এর স্থায়িত্ব আছে কি না কিংবা চলাচলের উপযোগী কি না এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যেসব সরঞ্জাম ও মেকানিজম দরকার এটি কিন্তু গ্যারেজগুলোর নেই। ফলে এসব গাড়ি মেরামত হলেও দুর্ঘটনা রোধে যাত্রীদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা নেই। দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যায়।
রাজধানীর কয়েকটি এলাকার ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখা যায়, কর্মব্যস্ততায় সময় পার করছেন ওয়ার্কশপের মিস্ত্রিরা। ওয়ার্কশপগুলোতে মেরামতের জন্য গাড়ি ঢুকছে আবার কোনো কোনো গাড়ি মেরামত শেষে বের হয়েও যাচ্ছে। কোথাও চলছে রঙের কাজ, কোথাও গাড়ির বডি ফিনিশিং এবং সিট ও চাকার কাজ। সবারই টার্গেট আসন্ন ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের নিয়ে ব্যবসা করা।আমিনবাজার এলাকায় সাকুরা ও সেন্টমার্টিন পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির নিজস্ব ওয়ার্কশপ রয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত মালিকানায়ও রয়েছে আরও ৮-১০টি ওয়ার্কশপ। প্রায় সব ওয়ার্কশপেই চলছে মেরামত কর্মযজ্ঞ।
আমিনবাজার পাম্পের পাশেই রয়েছে সাকুরা পরিবহনের ওয়ার্কশপ। সেখানে দেখা যায়, ছাউনির বাইরে তিনটি সেলফি পরিবহন মেরামতের কাজ চলছে যেগুলো ঢাকা-পাটুরিয়া রুটে চলাচল করলেও ঈদের সময় দূরপাল্লার যাত্রীও পরিবহন করে তারা। তাই ঈদের আগে গাড়িগুলো মেরামত করে নেওয়ার কথা জানান শ্রমিকরা। অন্যদিকে ছাউনির ভেতরে বেশ কয়েকটি শাকুরা পরিবহনের গাড়ি মেরামতের কাজ করছেন মিস্ত্রিরা। এর মধ্যে একটি গাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ। গাড়ির বডি ছাড়া সবকিছু দুমড়ে-মুচড়ে আছে ভেতরে সব সিট ভাঙা। ধুলো ময়লার আস্তরণ দেখে মনে হবে কোনো ভুতুড়ে গাড়ি। গাড়ির সামনে ঝালাইয়ের কাজ করছেন মিস্ত্রিরা। এই গাড়িও নাকি চলবে ঈদে। সেখানে কথা হয় গাড়ির বডি মিস্ত্রি মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে।
তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে গাড়িটি বরিশালে ব্রেকফেল হয়ে অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। তাই সবকিছু দুমড়ে-মুচড়ে আছে। এই ঈদে এটি মেরামত করে নামানো হবে। এ জন্য দ্রুত কাজ চলছে। তিনি বলেন, গাড়িতে ব্যবহার উপযোগী কোনো কিছুই নেই। নতুন মাল লাগাতে হবে। তবে সময় কম। তাই যেভাবে পারি জোড়াতালি দিয়েই মেরামত করতে হবে। তিনি বলেন, এই গাড়ি বাদেও আরও তিনটি গাড়ি আছে যেগুলো একদম নতুন শুধু বডি ফিটিং করতে হবে। এগুলোও ঈদে নামানো হবে। প্রতিদিনই গাড়ি আসছে। আবার ঠিক করে নিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে সাতটি গাড়ি গ্যারেজে মেরামত করা হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এগুলো মেরামত করা হয়ে যাবে।
আমিনবাজার ওভারব্রিজ থেকে একটু সামনে রয়েছে নিউ ডিসেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ। ভেতরে ঢুকতে দেখা যায় এনা পরিবহনের দুটি নতুন গাড়ি ঘিরে ব্যস্ত কয়েকজন ব্যক্তি। জানতে চাইলে ওয়ার্কশপের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এনা পরিবহন বরিশাল রুটে ১০টি নতুন বাস নামাবে। এর মধ্যে দুটি বাসের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এগুলো এখন কাউন্টারে নেওয়া হচ্ছে। বাকিগুলোর কাজও চলমান রয়েছে যা ঈদের আগে শেষ হবে। তিনি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে কাজের চাপ একটু বেড়েছে। যেসব গাড়িতে সমস্যা আছে সেগুলো মালিকরা মেরামত করে নিচ্ছে-যাতে যাত্রীদের কাছে নতুন মনে হয়।
ঢাকা-বরিশাল ও কুয়াকাটা রুটে চলাচল করা লাবিবা পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৪৫১৫)। এটি মেরামত করাতে নিয়ে এসেছেন এর চালক আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, গাড়ির ছাদ ফুটো হয়ে গেছে, বৃষ্টিতে গাড়ির ভেতরে পানি পড়ে। এ ছাড়া কয়েক জায়গায় রং উঠে গেছে। আরও কিছু সমস্যা আছে-যেগুলো ঠিক করাতে নিয়ে এসেছি। ঈদের আগে এগুলো ঠিক না করলে যাত্রী পরিবহনে সমস্যা হতে পারে। তাই সবকিছু ঠিক করে নিচ্ছি। এই গ্যারেজে আমাদের আরও বেশ কয়েকটি গাড়ি আছে। আমরা ঈদের আগে সবই ঠিক করে সড়কে নামাব।
অন্যদিকে আনোয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপেও চলছে মেরামত কার্যক্রম। এটি সেন্টমার্টিন পরিবহনের নিজস্ব গ্যারেজ। এখানেও বেশ কয়েকটি গাড়ির মেরামত করতে দেখা গেছে। ওয়ার্কশপের সামনে হামিম পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৯৩২৮) নামে একটি গাড়িতে রং করছিলেন মিস্ত্রিরা। পরিবহনটির চালক জানান, এটি ঢাকা
নাগরিক প্রতিবেদন
১৮ মার্চ, ২০২৪, 1:18 PM

আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে যাত্রী পরিবহনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরিবহন মালিকরা। নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে পুরোনো পরিবহনগুলোকে। জোড়াতালি দিয়ে দ্রুতই মেরামত করা হচ্ছে দুর্ঘটনা আক্রান্ত গাড়ি। কোনো কোনো গাড়ির রং, সিট, চাকা ও বডি মেরামত করা হচ্ছে। তবে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, আনফিট গাড়ি, দুর্ঘটনা আক্রান্ত গাড়ি অথবা অনেক দিন বসে থাকা গাড়ি যখন রাস্তায় নামে-তখন এর স্থায়িত্ব আছে কি না কিংবা চলাচলের উপযোগী কি না এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যেসব সরঞ্জাম ও মেকানিজম দরকার এটি কিন্তু গ্যারেজগুলোর নেই। ফলে এসব গাড়ি মেরামত হলেও দুর্ঘটনা রোধে যাত্রীদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা নেই। দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যায়।
রাজধানীর কয়েকটি এলাকার ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখা যায়, কর্মব্যস্ততায় সময় পার করছেন ওয়ার্কশপের মিস্ত্রিরা। ওয়ার্কশপগুলোতে মেরামতের জন্য গাড়ি ঢুকছে আবার কোনো কোনো গাড়ি মেরামত শেষে বের হয়েও যাচ্ছে। কোথাও চলছে রঙের কাজ, কোথাও গাড়ির বডি ফিনিশিং এবং সিট ও চাকার কাজ। সবারই টার্গেট আসন্ন ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের নিয়ে ব্যবসা করা।আমিনবাজার এলাকায় সাকুরা ও সেন্টমার্টিন পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির নিজস্ব ওয়ার্কশপ রয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত মালিকানায়ও রয়েছে আরও ৮-১০টি ওয়ার্কশপ। প্রায় সব ওয়ার্কশপেই চলছে মেরামত কর্মযজ্ঞ।
আমিনবাজার পাম্পের পাশেই রয়েছে সাকুরা পরিবহনের ওয়ার্কশপ। সেখানে দেখা যায়, ছাউনির বাইরে তিনটি সেলফি পরিবহন মেরামতের কাজ চলছে যেগুলো ঢাকা-পাটুরিয়া রুটে চলাচল করলেও ঈদের সময় দূরপাল্লার যাত্রীও পরিবহন করে তারা। তাই ঈদের আগে গাড়িগুলো মেরামত করে নেওয়ার কথা জানান শ্রমিকরা। অন্যদিকে ছাউনির ভেতরে বেশ কয়েকটি শাকুরা পরিবহনের গাড়ি মেরামতের কাজ করছেন মিস্ত্রিরা। এর মধ্যে একটি গাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ। গাড়ির বডি ছাড়া সবকিছু দুমড়ে-মুচড়ে আছে ভেতরে সব সিট ভাঙা। ধুলো ময়লার আস্তরণ দেখে মনে হবে কোনো ভুতুড়ে গাড়ি। গাড়ির সামনে ঝালাইয়ের কাজ করছেন মিস্ত্রিরা। এই গাড়িও নাকি চলবে ঈদে। সেখানে কথা হয় গাড়ির বডি মিস্ত্রি মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে।
তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে গাড়িটি বরিশালে ব্রেকফেল হয়ে অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। তাই সবকিছু দুমড়ে-মুচড়ে আছে। এই ঈদে এটি মেরামত করে নামানো হবে। এ জন্য দ্রুত কাজ চলছে। তিনি বলেন, গাড়িতে ব্যবহার উপযোগী কোনো কিছুই নেই। নতুন মাল লাগাতে হবে। তবে সময় কম। তাই যেভাবে পারি জোড়াতালি দিয়েই মেরামত করতে হবে। তিনি বলেন, এই গাড়ি বাদেও আরও তিনটি গাড়ি আছে যেগুলো একদম নতুন শুধু বডি ফিটিং করতে হবে। এগুলোও ঈদে নামানো হবে। প্রতিদিনই গাড়ি আসছে। আবার ঠিক করে নিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে সাতটি গাড়ি গ্যারেজে মেরামত করা হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এগুলো মেরামত করা হয়ে যাবে।
আমিনবাজার ওভারব্রিজ থেকে একটু সামনে রয়েছে নিউ ডিসেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ। ভেতরে ঢুকতে দেখা যায় এনা পরিবহনের দুটি নতুন গাড়ি ঘিরে ব্যস্ত কয়েকজন ব্যক্তি। জানতে চাইলে ওয়ার্কশপের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এনা পরিবহন বরিশাল রুটে ১০টি নতুন বাস নামাবে। এর মধ্যে দুটি বাসের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এগুলো এখন কাউন্টারে নেওয়া হচ্ছে। বাকিগুলোর কাজও চলমান রয়েছে যা ঈদের আগে শেষ হবে। তিনি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে কাজের চাপ একটু বেড়েছে। যেসব গাড়িতে সমস্যা আছে সেগুলো মালিকরা মেরামত করে নিচ্ছে-যাতে যাত্রীদের কাছে নতুন মনে হয়।
ঢাকা-বরিশাল ও কুয়াকাটা রুটে চলাচল করা লাবিবা পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৪৫১৫)। এটি মেরামত করাতে নিয়ে এসেছেন এর চালক আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, গাড়ির ছাদ ফুটো হয়ে গেছে, বৃষ্টিতে গাড়ির ভেতরে পানি পড়ে। এ ছাড়া কয়েক জায়গায় রং উঠে গেছে। আরও কিছু সমস্যা আছে-যেগুলো ঠিক করাতে নিয়ে এসেছি। ঈদের আগে এগুলো ঠিক না করলে যাত্রী পরিবহনে সমস্যা হতে পারে। তাই সবকিছু ঠিক করে নিচ্ছি। এই গ্যারেজে আমাদের আরও বেশ কয়েকটি গাড়ি আছে। আমরা ঈদের আগে সবই ঠিক করে সড়কে নামাব।
অন্যদিকে আনোয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপেও চলছে মেরামত কার্যক্রম। এটি সেন্টমার্টিন পরিবহনের নিজস্ব গ্যারেজ। এখানেও বেশ কয়েকটি গাড়ির মেরামত করতে দেখা গেছে। ওয়ার্কশপের সামনে হামিম পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৯৩২৮) নামে একটি গাড়িতে রং করছিলেন মিস্ত্রিরা। পরিবহনটির চালক জানান, এটি ঢাকা