অভ্যন্তরীণ গম সংগ্রহ ব্যর্থ - ৫০ হাজার টন গম কেনা হচ্ছে

নাগরিক প্রতিবেদন
২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, 2:34 PM
অভ্যন্তরীণ গম সংগ্রহ ব্যর্থ - ৫০ হাজার টন গম কেনা হচ্ছে
দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে গত বছর (২০২৩) এক লাখ মেট্রিক টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিকূল দামের কারণে এক কেজি গমও সংগ্রহ করতে পারেনি সরকার। এ পরিস্থিতিতে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত ও সরকারি সরবরাহ ব্যবস্থা গতিশীল রাখতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে গম সংগ্রহ অব্যাহত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে চলতি অর্থবছরে সরকারি পর্যায়ে বিশ্ববাজার থেকে কয়েক দফায় ছয় লাখ মেট্রিক টন গম কেনা হয়েছে।
এখন আবার নতুন করে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এই গম আমদানি করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স অ্যাগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড এ গম সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম ৩০৩.১৯ ডলার হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানিতে বাংলাদেশী মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৬৬ কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রতি কেজি গমের দাম পড়বে প্রায় ৩৪ টাকা।
আজ অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিকূল বাজারমূল্যের কারণে গত বছর সরকারি পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ গম সংগ্রহ অভিযানে এক লাখ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কোনো গম সংগৃহীত হয়নি। খাদ্য অধিদফতরের এমআইএসঅ্যান্ডএম বিভাগের গত ৭ ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে গমের মজুদ মাত্র ২.১৩ লাখ মেট্রিক টন যা দেশের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এ প্রেক্ষাপটে জরুরি পরিষেবা হিসেবে সরকারি বিতরণব্যবস্থা সচল রাখা এবং সরকারি নিরাপত্তা মজুদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গম আমদানি করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, চাহিদার বিপরীতে ইতোমধ্যে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে তিন লাখ মেট্রিক টন এবং রাশিয়া থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে তিন লাখ মেট্রিক টনসহ মোট ছয় লাখ মেট্রিক টন গম ক্রয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এ ধারাবাহিকতায় বাজেটে গম আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক গম ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
জানা গেছে, মোট চারটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিয়েছে। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কোটেশনে অংশগ্রহণকারী চারটি প্রতিষ্ঠানকেই গ্রহণযোগ্য দরদাতা হিসেবে মনোনীত করেছে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স অ্যাগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রস্তাবিত দর হচ্ছে প্রতি মেট্রিক টন ৩০৩.১৯ মার্কিন ডলার। দুবাইভিত্তিক তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মেসার্স এমসি ফুড ডিএমসিসির প্রস্তাবিত দর হচ্ছে প্রতি মেট্রিক টন ৩০৭.০৭ ডলার, মেসার্স গ্রেইন ফ্লাওয়ার ডিএমসিসির প্রস্তাবিত দর হচ্ছে প্রতি মেট্রিক টন ৩১২ ডলার এবং মেসার্স সিরিয়াল ক্রপস ট্রেডিং এলএলসি প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম ৩১৫ ডলার উল্লেখ করে দরপত্র জমা দেয়।
সূত্র জানায়, খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক গঠিত বাজারদর যাচাই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ বন্দর পর্যন্ত প্রতি মেট্রিক টন গমের শুল্কপূর্ব দাম নির্ধারণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে রাশিয়া, রোমানিয়া, ব্ল্যাক সি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও আমেরিকার প্রতি মেট্রিক টন গমের গড় বাজারদর ৩৫৬.৮২ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাবে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স অ্যাগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড কর্তৃক দাখিলকৃত দরপত্রে গমের উদ্ধৃত দর খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক নির্ধারিত গড় বাজারদরের চেয়ে ৫৩.১৯ ডলার কম। আমদানিতব্য এই ৫০ হাজার মেট্রিক টন গমের ৬০ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দরে এবং বাকি ৪০ শতাংশ গম মংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা হবে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।
নাগরিক প্রতিবেদন
২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, 2:34 PM
দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে গত বছর (২০২৩) এক লাখ মেট্রিক টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিকূল দামের কারণে এক কেজি গমও সংগ্রহ করতে পারেনি সরকার। এ পরিস্থিতিতে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত ও সরকারি সরবরাহ ব্যবস্থা গতিশীল রাখতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে গম সংগ্রহ অব্যাহত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে চলতি অর্থবছরে সরকারি পর্যায়ে বিশ্ববাজার থেকে কয়েক দফায় ছয় লাখ মেট্রিক টন গম কেনা হয়েছে।
এখন আবার নতুন করে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এই গম আমদানি করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স অ্যাগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড এ গম সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম ৩০৩.১৯ ডলার হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানিতে বাংলাদেশী মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৬৬ কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রতি কেজি গমের দাম পড়বে প্রায় ৩৪ টাকা।
আজ অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিকূল বাজারমূল্যের কারণে গত বছর সরকারি পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ গম সংগ্রহ অভিযানে এক লাখ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কোনো গম সংগৃহীত হয়নি। খাদ্য অধিদফতরের এমআইএসঅ্যান্ডএম বিভাগের গত ৭ ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে গমের মজুদ মাত্র ২.১৩ লাখ মেট্রিক টন যা দেশের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এ প্রেক্ষাপটে জরুরি পরিষেবা হিসেবে সরকারি বিতরণব্যবস্থা সচল রাখা এবং সরকারি নিরাপত্তা মজুদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গম আমদানি করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, চাহিদার বিপরীতে ইতোমধ্যে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে তিন লাখ মেট্রিক টন এবং রাশিয়া থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে তিন লাখ মেট্রিক টনসহ মোট ছয় লাখ মেট্রিক টন গম ক্রয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এ ধারাবাহিকতায় বাজেটে গম আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক গম ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
জানা গেছে, মোট চারটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিয়েছে। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কোটেশনে অংশগ্রহণকারী চারটি প্রতিষ্ঠানকেই গ্রহণযোগ্য দরদাতা হিসেবে মনোনীত করেছে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স অ্যাগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রস্তাবিত দর হচ্ছে প্রতি মেট্রিক টন ৩০৩.১৯ মার্কিন ডলার। দুবাইভিত্তিক তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মেসার্স এমসি ফুড ডিএমসিসির প্রস্তাবিত দর হচ্ছে প্রতি মেট্রিক টন ৩০৭.০৭ ডলার, মেসার্স গ্রেইন ফ্লাওয়ার ডিএমসিসির প্রস্তাবিত দর হচ্ছে প্রতি মেট্রিক টন ৩১২ ডলার এবং মেসার্স সিরিয়াল ক্রপস ট্রেডিং এলএলসি প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম ৩১৫ ডলার উল্লেখ করে দরপত্র জমা দেয়।
সূত্র জানায়, খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক গঠিত বাজারদর যাচাই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ বন্দর পর্যন্ত প্রতি মেট্রিক টন গমের শুল্কপূর্ব দাম নির্ধারণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে রাশিয়া, রোমানিয়া, ব্ল্যাক সি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও আমেরিকার প্রতি মেট্রিক টন গমের গড় বাজারদর ৩৫৬.৮২ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাবে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স অ্যাগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড কর্তৃক দাখিলকৃত দরপত্রে গমের উদ্ধৃত দর খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক নির্ধারিত গড় বাজারদরের চেয়ে ৫৩.১৯ ডলার কম। আমদানিতব্য এই ৫০ হাজার মেট্রিক টন গমের ৬০ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দরে এবং বাকি ৪০ শতাংশ গম মংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা হবে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।