উৎপাদন অধিক হলেও দাম নিয়ে বিপাকে ভুট্টা চাষিরা

মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
০৬ এপ্রিল, ২০২৩, 10:36 AM

উৎপাদন অধিক হলেও দাম নিয়ে বিপাকে ভুট্টা চাষিরা
* বাজার নিম্নমুখী থাকায় মাঠেই পড়ে আছে ভুট্টা।
* উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা কম।
* সরকারী ভাবে ভুট্টা ক্রয়ের দাবি কৃষকদের।
মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভুট্টার বাম্পার ফলন হলেও ভুট্টার বাজার নিম্নমুখী। শুরুর দিকে ২২শ টাকা বস্তা (৮২কেজি) থাকলেও কয়েক দিনের ব্যবধানে সেই দাম ১৬০০ টাকায় নেমে এসেছে। বাজার নিম্নমুখী থাকায় লোকসানের ঝুঁকি এড়াতে ভুট্টা ভাঙতে পারছেন না কৃষকরা। ফলে মাঠের পর মাঠ শুকনো গাছসহ পড়ে রয়েছে ভুট্টা।
সরেজমিনে উপজেলার শিবনগর, আলাদিপুর, খয়েরবাড়ি, এলুয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভুট্টা ভাঙার যথেষ্ট উপযোগী হলেও মাঠেই পড়ে রয়েছে ভুট্টা। গাছসহ ভুট্টা শুকনো ঝনঝনে হলেও ভাঙার আগ্রহ নেই কৃষকের। বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় ক্রেতারাও ভুট্টা ক্রয়ের আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন ভুট্টা চাষিরা।
একাধিক চাষির সাথে কথা বলে জানা যায়, ভুট্টার বাজার দর প্রতিদিনই কমছে। এজন্য ক্রেতারও ভুট্টা কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ভুট্টা মারাই করার পর না শুকিয়ে রাখাও সম্ভব হয়না। আবার শুকাতে অনেক জায়গা ও শ্রমিকের দরকার হয়। অন্যদিকে ঝড় বৃষ্টি না হলে মোচাসহ কিছুদিন রাখা সম্ভব। তাই ক্ষেতেই মোচাসহ রেখে বাজার স্থিতিশীল হওয়ার অপেক্ষা করছেন অনেকে।
উপজেলার শিবনগর ইউপির পুরাতন বন্দর এলাকার কৃষক মামুনুর রশীদ বলেন, এবছর ১৫ বিঘা (৫একর) জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। ৭দিন আগেও প্রতিবস্তা (৮২কেজি) ভুট্টা বিক্রি হয়েছে ২২শ টাকায়। তারপর দাম কমতে শুরু করে এখন ১৭০০টাকায় এসেছে। আমি ৬বিঘা জমির ভুট্টা প্রতিবস্তা ১৭৩০টাকা দরে বিক্রি করেছি। বাজারের অবস্থা বোঝা যাচ্ছেনা। তাই একটু সময় নিচ্ছি ভাঙতে।
দাদপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, আড়াই একর জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। তার মধ্যে ১একর জমির ভুট্টা ৮৫০টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। সরকারী ভাবে ভুট্টা ক্রয় না করায় ব্যবসায়ীদের বেঁধে দেয়া দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে ভুট্টা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ভুট্টা বেশির ভাগ ব্যবহৃত হয় গোখাদ্য ও বেকারি পণ্য তৈরিতে। কাঁচা ভুট্টা ক্রয় করার পর তা শুকাতে হয়। এতে অনেক ওজন কমে যায়। মিলারদের চাহিদার উপর নির্ভর করে ভুট্টার দাম। উৎপাদন বেশি হওয়ায় ভুট্টার দাম গত বছরের চেয়ে কিছুটা কম।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, গত বছর উপজেলায় ৩ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ করা হয়েছিল। ভুট্টা উৎপাদন হয়েছিল ৩৯ হাজার ১৮০ টন। যা গড় ফলন হেক্টর প্রতি প্রতি ১২ টন। চলতি বছরে ৩ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়। এবছর ভুট্টার উৎপাদন ৪৫ হাজার ৫৭৬ টন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফুলবাড়ী উপজেলায় ভুট্টার উৎপাদন এটিই সর্বোচ্চ।
মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
০৬ এপ্রিল, ২০২৩, 10:36 AM

* বাজার নিম্নমুখী থাকায় মাঠেই পড়ে আছে ভুট্টা।
* উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা কম।
* সরকারী ভাবে ভুট্টা ক্রয়ের দাবি কৃষকদের।
মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভুট্টার বাম্পার ফলন হলেও ভুট্টার বাজার নিম্নমুখী। শুরুর দিকে ২২শ টাকা বস্তা (৮২কেজি) থাকলেও কয়েক দিনের ব্যবধানে সেই দাম ১৬০০ টাকায় নেমে এসেছে। বাজার নিম্নমুখী থাকায় লোকসানের ঝুঁকি এড়াতে ভুট্টা ভাঙতে পারছেন না কৃষকরা। ফলে মাঠের পর মাঠ শুকনো গাছসহ পড়ে রয়েছে ভুট্টা।
সরেজমিনে উপজেলার শিবনগর, আলাদিপুর, খয়েরবাড়ি, এলুয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভুট্টা ভাঙার যথেষ্ট উপযোগী হলেও মাঠেই পড়ে রয়েছে ভুট্টা। গাছসহ ভুট্টা শুকনো ঝনঝনে হলেও ভাঙার আগ্রহ নেই কৃষকের। বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় ক্রেতারাও ভুট্টা ক্রয়ের আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন ভুট্টা চাষিরা।
একাধিক চাষির সাথে কথা বলে জানা যায়, ভুট্টার বাজার দর প্রতিদিনই কমছে। এজন্য ক্রেতারও ভুট্টা কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ভুট্টা মারাই করার পর না শুকিয়ে রাখাও সম্ভব হয়না। আবার শুকাতে অনেক জায়গা ও শ্রমিকের দরকার হয়। অন্যদিকে ঝড় বৃষ্টি না হলে মোচাসহ কিছুদিন রাখা সম্ভব। তাই ক্ষেতেই মোচাসহ রেখে বাজার স্থিতিশীল হওয়ার অপেক্ষা করছেন অনেকে।
উপজেলার শিবনগর ইউপির পুরাতন বন্দর এলাকার কৃষক মামুনুর রশীদ বলেন, এবছর ১৫ বিঘা (৫একর) জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। ৭দিন আগেও প্রতিবস্তা (৮২কেজি) ভুট্টা বিক্রি হয়েছে ২২শ টাকায়। তারপর দাম কমতে শুরু করে এখন ১৭০০টাকায় এসেছে। আমি ৬বিঘা জমির ভুট্টা প্রতিবস্তা ১৭৩০টাকা দরে বিক্রি করেছি। বাজারের অবস্থা বোঝা যাচ্ছেনা। তাই একটু সময় নিচ্ছি ভাঙতে।
দাদপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, আড়াই একর জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। তার মধ্যে ১একর জমির ভুট্টা ৮৫০টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। সরকারী ভাবে ভুট্টা ক্রয় না করায় ব্যবসায়ীদের বেঁধে দেয়া দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে ভুট্টা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ভুট্টা বেশির ভাগ ব্যবহৃত হয় গোখাদ্য ও বেকারি পণ্য তৈরিতে। কাঁচা ভুট্টা ক্রয় করার পর তা শুকাতে হয়। এতে অনেক ওজন কমে যায়। মিলারদের চাহিদার উপর নির্ভর করে ভুট্টার দাম। উৎপাদন বেশি হওয়ায় ভুট্টার দাম গত বছরের চেয়ে কিছুটা কম।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, গত বছর উপজেলায় ৩ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ করা হয়েছিল। ভুট্টা উৎপাদন হয়েছিল ৩৯ হাজার ১৮০ টন। যা গড় ফলন হেক্টর প্রতি প্রতি ১২ টন। চলতি বছরে ৩ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়। এবছর ভুট্টার উৎপাদন ৪৫ হাজার ৫৭৬ টন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফুলবাড়ী উপজেলায় ভুট্টার উৎপাদন এটিই সর্বোচ্চ।