শিরোনামঃ
নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ৫ আগস্ট জাতির সামনে উপস্থাপিত হবে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ছাত্রদলকে রুখে দেওয়ার মত ক্ষমতা কারও নেই: সমাবেশে সভাপতি রাকিবুল শাহবাগ অবরোধ: পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ, ৩২ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক চট্টগ্রামে ওএমএসের চাল-আটা চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না কমিউনিটি ক্লিনিক সংকট: গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়ছে কেন? সেমিফাইনালও বয়কট করলো ভারত, ফাইনালে পাকিস্তান কিডনি সুস্থ রাখতে খেতে পারেন এই দুই খাবার মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার, ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিজেই নিজেকে ট্রল করলেন উর্বশী

আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যান, পর্যটন সম্ভবনার নবদিকগন্ত

#
news image

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা নওগাঁ জেলার অন্যতম আর্কষণ ধামইরহাটের শালবন জাতীয় উদ্যান। মাঝে নয়নাভিরাম চিরহরিৎ অরণ্য ঘেরা আলতাদিঘী। ২০২১ সালে প.ব.ম.বন.শা-২-৪৮, প্রজ্ঞাপন মুলে আলতাদিঘীর শাল বনকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

নওগাঁ জেলা শহর থেকে প্রায় ৬১ কিলোমিটার উত্তরে ভারতীয় সীমান্তের কোলঘেঁষে এবং জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার পশ্চিমে এই জাতীয় উদ্যানের অবস্থান। নওগাঁ জেলার সর্ব বৃহৎ এই দিঘীর পাড় সহ মোট জমির আয়তন ৫৫.৪৬ একর। যার দৈর্ঘ্য ১.২০ কিলোমিটার। এবং প্রস্থ ০.২০ কিলোমিটার। দিঘীর পাড়ের আয়তন ১২.২১ একর। বহুমুখী গাছের ভরা এই ভু-সম্পত্তির মালিকানা বন বিভাগের। এবং এই ৬.১৩ একর ভু-সম্পত্তি ১ নং খাশ খতিয়ান ভুক্ত। দৃষ্টি নন্দন আলতাদিঘী শুধু জলাশয়ের আয়তন ৪২.২১ একর। দিঘীর পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাড়ে রয়েছে বিভিন্ন জাতের বনজ গাছের অপূর্ব সারি। নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরা সারি সারি শাল গাছের নিপাট গাঁথুনি দক্ষিন পাড়ে মহীশুর গ্রাম থেকে পশ্চিম দিকে দাদনপুর গ্রাম পর্যন্ত। 

সংস্কারঃ ২০২১ সালে আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যান খননের মাধ্যমে উদ্যানের জীববৈচিত্র্য পুনুরুদ্ধার ও সংরক্ষণ প্রকল্প বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। ৭ কোটি ৩৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়েছে। আরও বেশী দৃষ্টি নন্দন ও আগত পর্যটকদের জন্য আর্কষণীয় হয়ে গড়ে উঠেছে এই উদ্যান। প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালে। নওগাঁ জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে ও বরেন্দ্র ভুমির ইতিহাস ঐতিহ্য বিষয়ে গবেষক ও লেখক প্রভাষক মো. আব্দুর রাজজাক (রাজু) জানান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বন অধিদপ্তর এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পে "ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড"। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দিঘীকে সাবেক আকৃতি প্রদান সহ দিঘীর গভীরতা বৃদ্ধি করে এর জলকে সচ্ছ নয়নাভিরাম ও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হবে। (সুত্র দৈনিক জবাব দিহি- ১১.০৪.২০২২। 

ইতিহাসঃ প্রচলিত কল্প-কাহিনীর ঐতিহাসিক ভিত্তি অপ্রতুল। মৌলিক তথ্য মতে-পাল বংশের রাজা রামপাল (১০৭৭-১১৩০) সেনাপতির গুরুর মিশ্রয়ে পরামর্শে ও ১৬ জন সামন্ত রাজার সহযোগিতায় কৈবর্ত রাজভীম, রানী সংঙ্খমালা ও সেনাপতি হরিহর বাবুকে যুদ্ধে পরাজিত এবং নিহত করে পিতা মহিপালের (১০৭০-১০৭৫) হারানো এই বরেন্দ্র ভুমি পুনরুদ্ধার করেন।

সিংহাসনে বসে রাজা রামপাল প্রজাদের আস্তা ফিরিয়ে আন্তে অনেক পুকুর ও দিঘী খনন করেন। নতুন নতুন রাস্তা ঘাট নির্মাণ বহু নগর স্থাপন, জন শিক্ষার উদ্যেশ্যে মহাবিদ্যালয় বা বিহার স্থাপন এবং নতুন করে একটি নান্দনিক কারুকার্যে ভরা সুরম্য রাজধানী "রামাবতী" তৈরী করেন। এবং এই রাজধানীর মধ্যখানে জগদ্দল স্থাপন করেন।অতপর এই বিহারের মাঝখানে দেবী মহাতারা ও দেবতা আলোকিতেশ্বর এর মন্দির স্থাপন করেন। মুলত রাজধানী রামাবতীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপনে যে সকল বৃহত্তর জলধারা স্থাপন করা হয়- তক্কেমারি দিঘী, আলতাদিঘী, ভাংগাদিঘী, দারুকাদিঘী তারই অন্তভুক্ত। ঐতিহাসিক গণ-১০১০-১১৩০ সালের মধ্যে রাজধানী স্থাপন, বিহার নির্মাণ, নতুন নতুন নগর পত্তন ও দিঘী গুলো খনন করা হয়েছে বলে মনে করেন।

মাসুদ সরকার, ধামইরহাট (নওগাঁ)

১৯ মে, ২০২৩,  12:42 PM

news image

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা নওগাঁ জেলার অন্যতম আর্কষণ ধামইরহাটের শালবন জাতীয় উদ্যান। মাঝে নয়নাভিরাম চিরহরিৎ অরণ্য ঘেরা আলতাদিঘী। ২০২১ সালে প.ব.ম.বন.শা-২-৪৮, প্রজ্ঞাপন মুলে আলতাদিঘীর শাল বনকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

নওগাঁ জেলা শহর থেকে প্রায় ৬১ কিলোমিটার উত্তরে ভারতীয় সীমান্তের কোলঘেঁষে এবং জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার পশ্চিমে এই জাতীয় উদ্যানের অবস্থান। নওগাঁ জেলার সর্ব বৃহৎ এই দিঘীর পাড় সহ মোট জমির আয়তন ৫৫.৪৬ একর। যার দৈর্ঘ্য ১.২০ কিলোমিটার। এবং প্রস্থ ০.২০ কিলোমিটার। দিঘীর পাড়ের আয়তন ১২.২১ একর। বহুমুখী গাছের ভরা এই ভু-সম্পত্তির মালিকানা বন বিভাগের। এবং এই ৬.১৩ একর ভু-সম্পত্তি ১ নং খাশ খতিয়ান ভুক্ত। দৃষ্টি নন্দন আলতাদিঘী শুধু জলাশয়ের আয়তন ৪২.২১ একর। দিঘীর পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাড়ে রয়েছে বিভিন্ন জাতের বনজ গাছের অপূর্ব সারি। নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরা সারি সারি শাল গাছের নিপাট গাঁথুনি দক্ষিন পাড়ে মহীশুর গ্রাম থেকে পশ্চিম দিকে দাদনপুর গ্রাম পর্যন্ত। 

সংস্কারঃ ২০২১ সালে আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যান খননের মাধ্যমে উদ্যানের জীববৈচিত্র্য পুনুরুদ্ধার ও সংরক্ষণ প্রকল্প বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। ৭ কোটি ৩৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়েছে। আরও বেশী দৃষ্টি নন্দন ও আগত পর্যটকদের জন্য আর্কষণীয় হয়ে গড়ে উঠেছে এই উদ্যান। প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালে। নওগাঁ জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে ও বরেন্দ্র ভুমির ইতিহাস ঐতিহ্য বিষয়ে গবেষক ও লেখক প্রভাষক মো. আব্দুর রাজজাক (রাজু) জানান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বন অধিদপ্তর এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পে "ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড"। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দিঘীকে সাবেক আকৃতি প্রদান সহ দিঘীর গভীরতা বৃদ্ধি করে এর জলকে সচ্ছ নয়নাভিরাম ও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হবে। (সুত্র দৈনিক জবাব দিহি- ১১.০৪.২০২২। 

ইতিহাসঃ প্রচলিত কল্প-কাহিনীর ঐতিহাসিক ভিত্তি অপ্রতুল। মৌলিক তথ্য মতে-পাল বংশের রাজা রামপাল (১০৭৭-১১৩০) সেনাপতির গুরুর মিশ্রয়ে পরামর্শে ও ১৬ জন সামন্ত রাজার সহযোগিতায় কৈবর্ত রাজভীম, রানী সংঙ্খমালা ও সেনাপতি হরিহর বাবুকে যুদ্ধে পরাজিত এবং নিহত করে পিতা মহিপালের (১০৭০-১০৭৫) হারানো এই বরেন্দ্র ভুমি পুনরুদ্ধার করেন।

সিংহাসনে বসে রাজা রামপাল প্রজাদের আস্তা ফিরিয়ে আন্তে অনেক পুকুর ও দিঘী খনন করেন। নতুন নতুন রাস্তা ঘাট নির্মাণ বহু নগর স্থাপন, জন শিক্ষার উদ্যেশ্যে মহাবিদ্যালয় বা বিহার স্থাপন এবং নতুন করে একটি নান্দনিক কারুকার্যে ভরা সুরম্য রাজধানী "রামাবতী" তৈরী করেন। এবং এই রাজধানীর মধ্যখানে জগদ্দল স্থাপন করেন।অতপর এই বিহারের মাঝখানে দেবী মহাতারা ও দেবতা আলোকিতেশ্বর এর মন্দির স্থাপন করেন। মুলত রাজধানী রামাবতীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপনে যে সকল বৃহত্তর জলধারা স্থাপন করা হয়- তক্কেমারি দিঘী, আলতাদিঘী, ভাংগাদিঘী, দারুকাদিঘী তারই অন্তভুক্ত। ঐতিহাসিক গণ-১০১০-১১৩০ সালের মধ্যে রাজধানী স্থাপন, বিহার নির্মাণ, নতুন নতুন নগর পত্তন ও দিঘী গুলো খনন করা হয়েছে বলে মনে করেন।