শিরোনামঃ
শহীদ মিনারে এনসিপির ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা জুলাই মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ৫ আগস্ট জাতির সামনে উপস্থাপিত হবে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ছাত্রদলকে রুখে দেওয়ার মত ক্ষমতা কারও নেই: সমাবেশে সভাপতি রাকিবুল শাহবাগ অবরোধ: পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ, ৩২ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক চট্টগ্রামে ওএমএসের চাল-আটা চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না কমিউনিটি ক্লিনিক সংকট: গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়ছে কেন? সেমিফাইনালও বয়কট করলো ভারত, ফাইনালে পাকিস্তান কিডনি সুস্থ রাখতে খেতে পারেন এই দুই খাবার

সংস্কার কমিশনের সুপারিশে রাজনীতিবিদদের অপাংক্তেয় করার চেষ্টা: মির্জা ফখরুল

#
news image

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা পর্যালোচনা করে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, রাজনীতিবিদদের অপাংক্তেয় করে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের নামে এমন কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গণতন্ত্রের মূল চেতনাকে ক্ষুণ্ন করে। 

শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, রাজনীতিবিদদের অপাংক্তেয় করে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক চরিত্র ও জনগণের মালিকানার প্রতিফলন ঘটে নির্বাচিত সংসদ ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে। কিন্তু সংস্কার কমিশনের সুপারিশে তা উপেক্ষিত হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশে সাংবিধানিক কমিশনসহ (এনসিসি) নতুন নতুন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব কমিশনের এখতিয়ার ও কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে মনে হয়, আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করে একটি অকার্যকর সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। এর ফলে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো ক্ষুণ্ন হবে।

সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে চলমান বিতর্ককে ‘অনাবশ্যক’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কার ও নির্বাচন—দুটোই একসঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘সংস্কার সনদ’ প্রণয়ন করা যেতে পারে, যা নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে। তিনি বলেন, এখন অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয় হলো, প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা রাজনৈতিক দল গঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করার লক্ষণ ও প্রমাণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য সুখকর নয়। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখতে হবে। কোনো পক্ষ যেন রাজনৈতিক সুবিধা লুটতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পাঠানো স্প্রেডশিট নিয়েও বিএনপি মহাসচিবের সমালোচনার অন্ত নেই। তিনি বলেন, স্প্রেডশিটে যে অপশন বা পছন্দগুলোর ঘরে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে, তাতে একটি বিষয় প্রতিভাত হয়েছে যে, যে বিষয়গুলো প্রস্তাব আকারে আসতে পারত, তা প্রস্তাব না রেখে হ্যাঁ/না উত্তর দিতে বলা হয়েছে। যেমন—প্রস্তাবগুলো গণপরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন চাই কি না। হ্যাঁ অথবা না বলুন। কিন্তু প্রথমে সিদ্ধান্ত আসতে হবে যে, গণপরিষদের প্রস্তাবে আমরা একমত কি না। একইভাবে ‘গণভোট’, ‘গণপরিষদ ও আইন সভা’ হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন চাই কি না ইত্যাদি হ্যাঁ/না বলুন।

তিনি আরও বলেন, সংবিধানের ‘প্রস্তাবনার’ মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশে থাকলেও তা স্প্রেডশিটে উল্লেখ করা হয়নি। স্প্রেডশিটে ৭০টির মতো প্রস্তাব উল্লেখ করা হলেও মূল প্রতিবেদনে সুপারিশের সংখ্যা ১২৩টির মতো। একইভাবে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের মূল প্রতিবেদনে ১৫০টির মতো সুপারিশ তুলে ধরা হলেও স্প্রেডশিটে মাত্র ২৭টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশই সংবিধান সংস্কারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তিনি বলেন, স্প্রেডশিটের সঙ্গে মূল সুপারিশমালার ওপর আমাদের মতামত সংযুক্ত করে দিলে বিভ্রান্তি এড়ানো যাবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। এই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের জনগণ অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রেখে রাষ্ট্র পরিচালনার বিকল্প নেই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদ-উত্তর রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব উঠে এসেছে সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে। তবে এর মূল ভিত্তি রচনা করেছে বিএনপি প্রস্তাবিত ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কার কর্মসূচি, যা ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই উপস্থাপিত হয়েছিল। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক শক্তির অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী, এসব প্রস্তাবের সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য একটি নির্বাচিত সংসদই উপযুক্ত ফোরাম।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান এবং জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনের নিশ্চয়তা বিধান করা। তিনি বলেন, সংস্কার আগে-নির্বাচন পরে, কিংবা নির্বাচন আগে-সংস্কার পরে এ ধরনের অনাবশ্যক বিতর্কের কোনো প্রয়োজন নেই। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এবং সংস্কার ও নির্বাচন—দুটোই একসঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সংস্কার সনদ তৈরি করা যেতে পারে, যা নির্বাচিত সরকার পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করবে।

অনলাইন ডেস্ক

২৩ মার্চ, ২০২৫,  2:26 AM

news image

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা পর্যালোচনা করে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, রাজনীতিবিদদের অপাংক্তেয় করে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের নামে এমন কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গণতন্ত্রের মূল চেতনাকে ক্ষুণ্ন করে। 

শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, রাজনীতিবিদদের অপাংক্তেয় করে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক চরিত্র ও জনগণের মালিকানার প্রতিফলন ঘটে নির্বাচিত সংসদ ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে। কিন্তু সংস্কার কমিশনের সুপারিশে তা উপেক্ষিত হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশে সাংবিধানিক কমিশনসহ (এনসিসি) নতুন নতুন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব কমিশনের এখতিয়ার ও কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে মনে হয়, আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করে একটি অকার্যকর সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। এর ফলে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো ক্ষুণ্ন হবে।

সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে চলমান বিতর্ককে ‘অনাবশ্যক’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কার ও নির্বাচন—দুটোই একসঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘সংস্কার সনদ’ প্রণয়ন করা যেতে পারে, যা নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে। তিনি বলেন, এখন অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয় হলো, প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা রাজনৈতিক দল গঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করার লক্ষণ ও প্রমাণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য সুখকর নয়। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখতে হবে। কোনো পক্ষ যেন রাজনৈতিক সুবিধা লুটতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পাঠানো স্প্রেডশিট নিয়েও বিএনপি মহাসচিবের সমালোচনার অন্ত নেই। তিনি বলেন, স্প্রেডশিটে যে অপশন বা পছন্দগুলোর ঘরে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে, তাতে একটি বিষয় প্রতিভাত হয়েছে যে, যে বিষয়গুলো প্রস্তাব আকারে আসতে পারত, তা প্রস্তাব না রেখে হ্যাঁ/না উত্তর দিতে বলা হয়েছে। যেমন—প্রস্তাবগুলো গণপরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন চাই কি না। হ্যাঁ অথবা না বলুন। কিন্তু প্রথমে সিদ্ধান্ত আসতে হবে যে, গণপরিষদের প্রস্তাবে আমরা একমত কি না। একইভাবে ‘গণভোট’, ‘গণপরিষদ ও আইন সভা’ হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন চাই কি না ইত্যাদি হ্যাঁ/না বলুন।

তিনি আরও বলেন, সংবিধানের ‘প্রস্তাবনার’ মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশে থাকলেও তা স্প্রেডশিটে উল্লেখ করা হয়নি। স্প্রেডশিটে ৭০টির মতো প্রস্তাব উল্লেখ করা হলেও মূল প্রতিবেদনে সুপারিশের সংখ্যা ১২৩টির মতো। একইভাবে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের মূল প্রতিবেদনে ১৫০টির মতো সুপারিশ তুলে ধরা হলেও স্প্রেডশিটে মাত্র ২৭টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশই সংবিধান সংস্কারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তিনি বলেন, স্প্রেডশিটের সঙ্গে মূল সুপারিশমালার ওপর আমাদের মতামত সংযুক্ত করে দিলে বিভ্রান্তি এড়ানো যাবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। এই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের জনগণ অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রেখে রাষ্ট্র পরিচালনার বিকল্প নেই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদ-উত্তর রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব উঠে এসেছে সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে। তবে এর মূল ভিত্তি রচনা করেছে বিএনপি প্রস্তাবিত ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কার কর্মসূচি, যা ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই উপস্থাপিত হয়েছিল। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক শক্তির অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী, এসব প্রস্তাবের সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য একটি নির্বাচিত সংসদই উপযুক্ত ফোরাম।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান এবং জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনের নিশ্চয়তা বিধান করা। তিনি বলেন, সংস্কার আগে-নির্বাচন পরে, কিংবা নির্বাচন আগে-সংস্কার পরে এ ধরনের অনাবশ্যক বিতর্কের কোনো প্রয়োজন নেই। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এবং সংস্কার ও নির্বাচন—দুটোই একসঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সংস্কার সনদ তৈরি করা যেতে পারে, যা নির্বাচিত সরকার পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করবে।