বন্যাকবলিতদের দুর্ভোগ চরমে

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট ও সুনামগঞ্জ
২০ জুন, ২০২২, 1:43 AM

বন্যাকবলিতদের দুর্ভোগ চরমে
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সৃষ্ট বন্যায় বিপর্যস্ত সুনামগঞ্জ ও সিলেটবাসী। তবে এই দুই জেলার মধ্যে সিলেটে বন্যা পরি¯ি’তির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কাটেনি বন্যাকবলিত লাখো মানুষের। অপরদিকে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হ”েছ সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলার ৫ লাখ মানুষকে।
সিলেট অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ পাঁচ হাজারের মতো মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত বন্যায় মারা গেছেন দুজন।
গতকাল রোববার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যব¯’াপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সিলেটের ৬০ এবং সুনামগঞ্জের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। সবশেষ খবর অনুযায়ী সেনাবাহিনীর ৩২, নৌবাহিনীর ১২ এবং ফায়ার সার্ভিসের চারটি বোট কাজ করছে দু-জায়গায়। এরই মধ্যে তারা এক লাখ মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছে।
বানভাসি লাখো মানুষের আহাজারিতে ভারী সিলেটের বাতাস। বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, নেই নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জলযান। পরিবার-পরিজন নিয়ে দুঃসহ সময় পার করছেন পানিবন্দি মানুষজন। সময় যত যা”েছ বাড়ছে বিপদ, বাড়ছে উৎকণ্ঠা। বানের পানি গ্রাস করেছে সিলেট শহরের প্রায় সব সড়ক। পানিতে ভেসে গেছে বাড়িঘর।
বিদ্যুৎ না থাকায় ভুতুড়ে পরি¯ি’তি। বাজার-হাটে পানি উঠায় দেখা দিয়েছে খাদ্যপণ্যের সংকট। অনেকে না খেয়ে সময় পার করছেন। একদিন আগেই বিমান চলাচল বন্ধ হয়েছিল। সড়ক যোগাযোগ টিকে থাকায় হাজার হাজার মানুষ সিলেট ছেড়ে যা”েছন। বিভিন্ন উপজেলায় সমানতালে বানের পানি প্রবেশ করায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে মানুষ। উদ্ধারের অপেক্ষায় থাকা মানুষের অপেক্ষা বাড়ছে।
সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যা”েছন দুর্গত মানুষকে উদ্ধারে। টানা বৃষ্টির কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় বিঘ্ন ঘটছে। এ পর্যন্ত সিলেট জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে যারা আশ্রয় নিয়েছেন ,তারা গাঁদাগাঁদি করে সেখানে অব¯’ান করছেন। অনেকে নিজেদের গবাদিপশুও সঙ্গে নিয়ে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। বিপর্যয়ের মধ্যদিয়ে যা”েছ সিলেট। এ ধরনের পরি¯ি’তি সিলেটজুড়ে কেবল সাহায্যের আবেদন।
জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান জানিয়েছেন, সিলেটে সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজ চালা”েছ।এদিকে স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। জরুরি সেবাও চালু করা যা”েছ না। খাবার, পানি সংকট চরমে। অর্ধশতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হ”েছ না মানুষের। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। অভুক্ত অব¯’ায় করছেন দিন যাপন। টাকা দিয়েও মিলছে না খাদ্যপণ্য। সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে পানি হানা দি”েছ ।
এক দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল রোববার বিকেল থেকে আবারও সিলেট স্টেশন থেকে রেল চলাচল শুরু হয়েছে। ভারী বর্ষণ ও বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় আবারও রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার নুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বি”িছন্ন হয়ে পড়েছিল। বন্যা পরি¯ি’তিতে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রা বাতিল করে রুট পরিবর্তন করা হয়। সিলেট রেলস্টেশনের ম্যানেজার নুরুল ইসলাম বলেন, আজ (রবিবার) বেলা দুইটায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিলেট রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে একই ট্রেন অন্তত ৪০০ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় জেনারেটর দিয়ে সাময়িক কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল।
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২০০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পৌরশহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটে পানি উঠেছে। এছাড়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন।
এদিকে, বন্যার কারণে গত চার দিন সুনামগঞ্জে ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ ব্যব¯’া না থাকায় গতকালও খোলেনি ব্যাংকের শাখাগুলো। বিশেষ করে যেসব ব্যাংকের শাখা নিচতলায় সেগুলো। সেইসঙ্গে পানিতে তলিয়ে গেছে ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথ। যে কারণে ব্যাংক শাখার পাশাপাশি, এটিএম, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাও বন্ধ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যব¯’াপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সিলেট ও সুনামগঞ্জে আমাদের ৬টি শাখা, ৯৫টি এটিএম এবং ৩১টি টাকা জমার মেশিন আছে। তার সবই পানির নিচে। এ কারণে ১৫ থেকে ১৬ কোটি টাকা পানিতে ডুবে আছে। যোগাযোগ ব্যব¯’া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই সব এলাকায় রকেট, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবাও বন্ধ হয়ে গেছে।’
যোগাযোগ এবং ব্যাংকিং সেবা বন্ধের পাশাপাশি খাদ্য ও নিরাপদ পানির সংকটে পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ থাকায় অনেকে খাবার না পেয়ে কাঁঠাল কিনে নিয়ে যা”েছন। আবার অনেকে দ্বিগুণ দামে কলা-বিস্কিট কিনে নিয়ে খা”েছন। এমন উদ্ভুত পরি¯ি’তিতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছেন তারা।
অপরদিকে সিলেটে বন্যা পরি¯ি’তির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মনে আশা জেগেছে। কারণ গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ঢলের পানিতে শহর থেকে গ্রাম- সব জায়গা পানিতে টইটম্বুর ছিল। তবে শনিবার (১৮ জুন) রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় সকাল থেকে সিলেট নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করে। সেইসঙ্গে কিছু জায়গায় পানি ২ থেকে ৩ ইঞ্চি আবার কোথাও ১ থেকে দেড় ফুট কমেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, রবিবার সকাল থেকে সিলেটের আকাশ কিছুটা পরিষ্কার দেখা যায়। তুলনামূলক বৃষ্টিপাতও কম হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, গতকাল সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুব কম পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা আমরা রেকর্ড করতে পারিনি। বৃষ্টির পরিমাণ নিম্ন পর্যায়ে থাকলে তা রেকর্ড করা সম্ভব হয় না। এটি একটি ভালো লক্ষণ। এর আগে গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ৩০৪ মিলিমিটার।
জেলা প্রতিনিধি, সিলেট ও সুনামগঞ্জ
২০ জুন, ২০২২, 1:43 AM

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সৃষ্ট বন্যায় বিপর্যস্ত সুনামগঞ্জ ও সিলেটবাসী। তবে এই দুই জেলার মধ্যে সিলেটে বন্যা পরি¯ি’তির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কাটেনি বন্যাকবলিত লাখো মানুষের। অপরদিকে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হ”েছ সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলার ৫ লাখ মানুষকে।
সিলেট অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ পাঁচ হাজারের মতো মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত বন্যায় মারা গেছেন দুজন।
গতকাল রোববার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যব¯’াপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সিলেটের ৬০ এবং সুনামগঞ্জের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। সবশেষ খবর অনুযায়ী সেনাবাহিনীর ৩২, নৌবাহিনীর ১২ এবং ফায়ার সার্ভিসের চারটি বোট কাজ করছে দু-জায়গায়। এরই মধ্যে তারা এক লাখ মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছে।
বানভাসি লাখো মানুষের আহাজারিতে ভারী সিলেটের বাতাস। বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, নেই নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জলযান। পরিবার-পরিজন নিয়ে দুঃসহ সময় পার করছেন পানিবন্দি মানুষজন। সময় যত যা”েছ বাড়ছে বিপদ, বাড়ছে উৎকণ্ঠা। বানের পানি গ্রাস করেছে সিলেট শহরের প্রায় সব সড়ক। পানিতে ভেসে গেছে বাড়িঘর।
বিদ্যুৎ না থাকায় ভুতুড়ে পরি¯ি’তি। বাজার-হাটে পানি উঠায় দেখা দিয়েছে খাদ্যপণ্যের সংকট। অনেকে না খেয়ে সময় পার করছেন। একদিন আগেই বিমান চলাচল বন্ধ হয়েছিল। সড়ক যোগাযোগ টিকে থাকায় হাজার হাজার মানুষ সিলেট ছেড়ে যা”েছন। বিভিন্ন উপজেলায় সমানতালে বানের পানি প্রবেশ করায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে মানুষ। উদ্ধারের অপেক্ষায় থাকা মানুষের অপেক্ষা বাড়ছে।
সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যা”েছন দুর্গত মানুষকে উদ্ধারে। টানা বৃষ্টির কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় বিঘ্ন ঘটছে। এ পর্যন্ত সিলেট জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে যারা আশ্রয় নিয়েছেন ,তারা গাঁদাগাঁদি করে সেখানে অব¯’ান করছেন। অনেকে নিজেদের গবাদিপশুও সঙ্গে নিয়ে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। বিপর্যয়ের মধ্যদিয়ে যা”েছ সিলেট। এ ধরনের পরি¯ি’তি সিলেটজুড়ে কেবল সাহায্যের আবেদন।
জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান জানিয়েছেন, সিলেটে সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজ চালা”েছ।এদিকে স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। জরুরি সেবাও চালু করা যা”েছ না। খাবার, পানি সংকট চরমে। অর্ধশতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হ”েছ না মানুষের। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। অভুক্ত অব¯’ায় করছেন দিন যাপন। টাকা দিয়েও মিলছে না খাদ্যপণ্য। সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে পানি হানা দি”েছ ।
এক দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল রোববার বিকেল থেকে আবারও সিলেট স্টেশন থেকে রেল চলাচল শুরু হয়েছে। ভারী বর্ষণ ও বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় আবারও রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার নুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বি”িছন্ন হয়ে পড়েছিল। বন্যা পরি¯ি’তিতে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রা বাতিল করে রুট পরিবর্তন করা হয়। সিলেট রেলস্টেশনের ম্যানেজার নুরুল ইসলাম বলেন, আজ (রবিবার) বেলা দুইটায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিলেট রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে একই ট্রেন অন্তত ৪০০ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় জেনারেটর দিয়ে সাময়িক কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল।
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২০০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পৌরশহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটে পানি উঠেছে। এছাড়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন।
এদিকে, বন্যার কারণে গত চার দিন সুনামগঞ্জে ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ ব্যব¯’া না থাকায় গতকালও খোলেনি ব্যাংকের শাখাগুলো। বিশেষ করে যেসব ব্যাংকের শাখা নিচতলায় সেগুলো। সেইসঙ্গে পানিতে তলিয়ে গেছে ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথ। যে কারণে ব্যাংক শাখার পাশাপাশি, এটিএম, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাও বন্ধ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যব¯’াপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সিলেট ও সুনামগঞ্জে আমাদের ৬টি শাখা, ৯৫টি এটিএম এবং ৩১টি টাকা জমার মেশিন আছে। তার সবই পানির নিচে। এ কারণে ১৫ থেকে ১৬ কোটি টাকা পানিতে ডুবে আছে। যোগাযোগ ব্যব¯’া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই সব এলাকায় রকেট, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবাও বন্ধ হয়ে গেছে।’
যোগাযোগ এবং ব্যাংকিং সেবা বন্ধের পাশাপাশি খাদ্য ও নিরাপদ পানির সংকটে পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ থাকায় অনেকে খাবার না পেয়ে কাঁঠাল কিনে নিয়ে যা”েছন। আবার অনেকে দ্বিগুণ দামে কলা-বিস্কিট কিনে নিয়ে খা”েছন। এমন উদ্ভুত পরি¯ি’তিতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছেন তারা।
অপরদিকে সিলেটে বন্যা পরি¯ি’তির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মনে আশা জেগেছে। কারণ গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ঢলের পানিতে শহর থেকে গ্রাম- সব জায়গা পানিতে টইটম্বুর ছিল। তবে শনিবার (১৮ জুন) রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় সকাল থেকে সিলেট নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করে। সেইসঙ্গে কিছু জায়গায় পানি ২ থেকে ৩ ইঞ্চি আবার কোথাও ১ থেকে দেড় ফুট কমেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, রবিবার সকাল থেকে সিলেটের আকাশ কিছুটা পরিষ্কার দেখা যায়। তুলনামূলক বৃষ্টিপাতও কম হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, গতকাল সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুব কম পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা আমরা রেকর্ড করতে পারিনি। বৃষ্টির পরিমাণ নিম্ন পর্যায়ে থাকলে তা রেকর্ড করা সম্ভব হয় না। এটি একটি ভালো লক্ষণ। এর আগে গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ৩০৪ মিলিমিটার।