তাহিরপুরে ৫টি দোকান আগুনে পুড়ে চাঁই, আগুন নিভাতে গিয়ে ৩ জন আহত

#
news image

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আকস্মিক আগুন লেগে ৫টি দোকান পুড়ে চাঁই। এতে দোকান ঘরসহ ২০ লক্ষ টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে। আগুন নিভাতে গিয়ে এঘটনায় আহত হয়েছে ৩জন। বুধবার রাতে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর বাজারে আগুন পুড়ার ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার সময় বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান। কিছু ব্যবসায়ী বাড়ি যাওয়ার জন্য নৌকার অপেক্ষায় নদীর ঘাটে ছিলেন। হঠাৎ বাজারের নৈশ্য প্রহরী আজম খানকে আগুন লেগেছে বলে চিৎকার করতে শুনা যায়। চিৎকার শুনে তারা দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসেন এবং পার্শ্ববর্তী দোকানদারসহ গ্রামের লোকজন ও স্থানীয় যুবকরা এসে আগুন নিভাতে পানি ও বালু নিক্ষেপ করেন। এভাবে দুই প্রায় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে স্থানীয়রা। পরে দুএকটি দোকানে ধোয়া দেখা গেলে তাহিরপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দমকল দিয়ে পানি ঢেলে সম্পূর্ণ আগুন নিভে গেছে বলে নিশ্চিত করেন। আগুনে পুড়ে চাঁই হওয়া দোকান গুলো হলো- আংগুর আলম এর লেফটপ, মোবাইল মেরামতসহ ফটো কপি'র দোকান, ডাক্তার সুরেন্দ্র দাসের হোমিওপ্যাথিক ফার্মেসি, রতন মিয়ার ইলেকট্রনিক দোকান, মাহির বিকাশ ও মোবাইলের দোকান, মতি পালের মুদি দোকানের মালামাল।

এছাড়াও মুদির দোকানী নাসির ও সরকারি সবজি -মাছের ঘর ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের দোকানে থাকা কম্পিউটার, সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারী, মোবাইল, হিটার মেশিন, নগর অর্থসহ দোকানের আসবাবপত্র সব পুড়ে চাঁই হয়েগেছে। যার আনুমানিক মূল্য ২৫লক্ষ টাকা। স্থানীয়দের ধারনা আংগুর আলমের মোবাইল মেরামতের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত শুরু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত আংগুর আলমের বাবা জয়নাল আবেদীন জানান, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। দোকানে থাকা নগর টাকাসহ মালামাল সব পুড়ে চাঁই হয়েগেল। প্রায় ৪লক্ষ টাকার মালামালসহ নগদ ৫০হাজার টাকা পুড়ে গেছে। আমি এখন নিঃস্ব। আমি একজন মসজিদের ইমাম, আমার তেমন টাকা পয়সা নাই।

এ দোকানে যা আয় হয়, তা দিয়ে চলি। এখন আমার কিছু রইলনা। ইলেকট্রনিক দোকানের মালিক রতন মিয়া বলেন, আমি খুব কষ্ট করে এই দোকান দিয়েছি, নিজের বসত বিটাও নেই। থাকি সরকারের দেওয়া গুচ্ছ গ্রামে। ট্যাকেরঘাট গুচ্ছ গ্রাম থেকে প্রতিদিন আসি দোকানদারি করতে। আগুনে পুড়ে প্রায় দুইলক্ষ টাকার মালামাল শেষ। আমার সম্বল হাড়িয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম।

শ্রীপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামনূর আখঞ্জী বলেন, আগুন কি ভাবে লেগেছে জানি না। লোকজনের চিৎকার শোনে ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে দেখি আংগুর মিয়ার কম্পিউটারের দোকানে আগুন। দেখতে দেখতে ৫টি দোকান পুড়ে চাঁই হয়েগেছে। এতে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মালামালসহ নগদ অর্থ পুড়ে ভস্মীভূত হয়। জানাযায়, আগুন নিভাতে গিয়ে রিপন আখঞ্জী, সুজন মিয়া, নীরব মিয়া নামের তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই জন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে আছেন। নীরব নামের কিশোর গুরুতর আহত হয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের টিম সদস্য চান মিয়া বলেন, আমার ধারণা মতে বৈদ্যুতিক তারে সক খেয়ে এ আগুনের সূত্রপাত সৃষ্টি হয়েছে। তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকান গুলো পরিদর্শন করেছেন। তাদের ক্ষতিতে তিনি মর্মাহত বলেও জানিয়েছেন।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, খবর শোনা মাত্রই, ঘটনাস্থল এসে পরিদর্শন করেছি। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন খুবি মর্মাহত।

অরুণ চক্রবর্তী, সুনামগঞ্জ

২০ জুলাই, ২০২৩,  8:10 PM

news image

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আকস্মিক আগুন লেগে ৫টি দোকান পুড়ে চাঁই। এতে দোকান ঘরসহ ২০ লক্ষ টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে। আগুন নিভাতে গিয়ে এঘটনায় আহত হয়েছে ৩জন। বুধবার রাতে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর বাজারে আগুন পুড়ার ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার সময় বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান। কিছু ব্যবসায়ী বাড়ি যাওয়ার জন্য নৌকার অপেক্ষায় নদীর ঘাটে ছিলেন। হঠাৎ বাজারের নৈশ্য প্রহরী আজম খানকে আগুন লেগেছে বলে চিৎকার করতে শুনা যায়। চিৎকার শুনে তারা দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসেন এবং পার্শ্ববর্তী দোকানদারসহ গ্রামের লোকজন ও স্থানীয় যুবকরা এসে আগুন নিভাতে পানি ও বালু নিক্ষেপ করেন। এভাবে দুই প্রায় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে স্থানীয়রা। পরে দুএকটি দোকানে ধোয়া দেখা গেলে তাহিরপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দমকল দিয়ে পানি ঢেলে সম্পূর্ণ আগুন নিভে গেছে বলে নিশ্চিত করেন। আগুনে পুড়ে চাঁই হওয়া দোকান গুলো হলো- আংগুর আলম এর লেফটপ, মোবাইল মেরামতসহ ফটো কপি'র দোকান, ডাক্তার সুরেন্দ্র দাসের হোমিওপ্যাথিক ফার্মেসি, রতন মিয়ার ইলেকট্রনিক দোকান, মাহির বিকাশ ও মোবাইলের দোকান, মতি পালের মুদি দোকানের মালামাল।

এছাড়াও মুদির দোকানী নাসির ও সরকারি সবজি -মাছের ঘর ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের দোকানে থাকা কম্পিউটার, সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারী, মোবাইল, হিটার মেশিন, নগর অর্থসহ দোকানের আসবাবপত্র সব পুড়ে চাঁই হয়েগেছে। যার আনুমানিক মূল্য ২৫লক্ষ টাকা। স্থানীয়দের ধারনা আংগুর আলমের মোবাইল মেরামতের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত শুরু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত আংগুর আলমের বাবা জয়নাল আবেদীন জানান, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। দোকানে থাকা নগর টাকাসহ মালামাল সব পুড়ে চাঁই হয়েগেল। প্রায় ৪লক্ষ টাকার মালামালসহ নগদ ৫০হাজার টাকা পুড়ে গেছে। আমি এখন নিঃস্ব। আমি একজন মসজিদের ইমাম, আমার তেমন টাকা পয়সা নাই।

এ দোকানে যা আয় হয়, তা দিয়ে চলি। এখন আমার কিছু রইলনা। ইলেকট্রনিক দোকানের মালিক রতন মিয়া বলেন, আমি খুব কষ্ট করে এই দোকান দিয়েছি, নিজের বসত বিটাও নেই। থাকি সরকারের দেওয়া গুচ্ছ গ্রামে। ট্যাকেরঘাট গুচ্ছ গ্রাম থেকে প্রতিদিন আসি দোকানদারি করতে। আগুনে পুড়ে প্রায় দুইলক্ষ টাকার মালামাল শেষ। আমার সম্বল হাড়িয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম।

শ্রীপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামনূর আখঞ্জী বলেন, আগুন কি ভাবে লেগেছে জানি না। লোকজনের চিৎকার শোনে ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে দেখি আংগুর মিয়ার কম্পিউটারের দোকানে আগুন। দেখতে দেখতে ৫টি দোকান পুড়ে চাঁই হয়েগেছে। এতে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মালামালসহ নগদ অর্থ পুড়ে ভস্মীভূত হয়। জানাযায়, আগুন নিভাতে গিয়ে রিপন আখঞ্জী, সুজন মিয়া, নীরব মিয়া নামের তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই জন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে আছেন। নীরব নামের কিশোর গুরুতর আহত হয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের টিম সদস্য চান মিয়া বলেন, আমার ধারণা মতে বৈদ্যুতিক তারে সক খেয়ে এ আগুনের সূত্রপাত সৃষ্টি হয়েছে। তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকান গুলো পরিদর্শন করেছেন। তাদের ক্ষতিতে তিনি মর্মাহত বলেও জানিয়েছেন।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, খবর শোনা মাত্রই, ঘটনাস্থল এসে পরিদর্শন করেছি। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন খুবি মর্মাহত।