সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাশ, ১ জুলাই থেকে কার্যকর

#
news image

জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পাশ হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৩’ পাশের প্রস্তাব উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিতে তা পাশ হয়। আগামী ১ জুলাই শনিবার নতুন অর্থবছরের প্রথম দিন থেকে এই বাজেট কার্যকর হবে।

সোমবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে জাতীয় বাজেট পাশের কার্যক্রম শুরু হয়। সরকারি ও বিরোধী দলের অধিকাংশ সদস্যের উপস্থিতিতে বাজেটের ওপর ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে ৫০২টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনা হয়। সরকার ও বিরোধী দলের হুইপের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী দুইটি মঞ্জুরি দাবি আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। আলোচনা শেষে মঞ্জুরি দাবিগুলো কণ্ঠভোটে সংসদে গৃহীত হয়। এরপর অর্থমন্ত্রী সর্বোচ্চ ১১ লাখ ১০ হাজার ৮৪০ কোটি ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ব্যয়ের অনুমোদন নিতে ‘নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৩’ পাশের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পরে কণ্ঠভোটে তা পাশ হয়।

এ সময় সংসদ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদনেতা শেখ হাসিনাসহ সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ-সদস্যরা টেবিল চাপড়িয়ে দেশের বাজেট বাস্তবায়নের যাত্রাকে স্বাগত জানান। 

এর আগে মঞ্জুরি দাবির ৪২ নম্বর- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জন্য আগামী জুন ২০২৪ সমাপ্য অর্থবছরের জন্য এক হাজার ৬৩৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রপতির অনুকুলে মঞ্জুরের প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদ সদস্যদের সর্বসম্মতিতে এ প্রস্তাব সংসদে গ্রহণ করা হয়।

প্রস্তাবিত বাজেটে মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, রুস্তম আলী ফরাজী, শামীম হায়দার পাটোয়ারি, রওশন আরা মান্নান ও পীর ফজলুর রহমান, গণফোরামের মোকাব্বির হোসেন খান এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। তবে ওই ছাটাই প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল পহেলা জুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপত্থাপন করেন। এবার শিরোনাম দেওয়া হয় ‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’। এরপর গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাশের পর ৭ জুন পর্যন্ত প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। সংসদনেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ২৫ জুন এই আলোচনা সমাপ্ত হয়। আলোচনা শেষে অর্থ বিল-২০২৩ পাসের মাধ্যমে বাজেটের আর্থিক ও কর প্রস্তাব সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুমোদন করা হয়।

বাজেট কাঠামো : নতুন বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে পরিচালনা ব্যয় ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ কোটি টাকা এবং মূলধনী ব্যয় ৩৯ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।

মোট আয় : নতুন বাজেটের মোট আয়ের আকার ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে কর রাজস্ব ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৫০ হাজার টাকা ও বৈদেশিক অনুদান ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। মোট করের মধ্যে এনবিআর কর হচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং নন এনবিআর হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা।

ঘাটতি : মোট ঘাটতি (অনুদানসহ) ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা এবং অনুদান ছাড়া ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এই ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ১৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এ অভ্যন্তীরণ খাতের ঋণ আসবে ব্যাংক থেকে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি এবং অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা।

বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, যোগাযোগ অবকাঠামো, ভৌত অবকাঠামো, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, কৃষি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের সময়.কম

নাগরিক অনলাইন ডেস্ক

২৬ জুন, ২০২৩,  4:05 PM

news image
ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পাশ হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৩’ পাশের প্রস্তাব উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিতে তা পাশ হয়। আগামী ১ জুলাই শনিবার নতুন অর্থবছরের প্রথম দিন থেকে এই বাজেট কার্যকর হবে।

সোমবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে জাতীয় বাজেট পাশের কার্যক্রম শুরু হয়। সরকারি ও বিরোধী দলের অধিকাংশ সদস্যের উপস্থিতিতে বাজেটের ওপর ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে ৫০২টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনা হয়। সরকার ও বিরোধী দলের হুইপের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী দুইটি মঞ্জুরি দাবি আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। আলোচনা শেষে মঞ্জুরি দাবিগুলো কণ্ঠভোটে সংসদে গৃহীত হয়। এরপর অর্থমন্ত্রী সর্বোচ্চ ১১ লাখ ১০ হাজার ৮৪০ কোটি ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ব্যয়ের অনুমোদন নিতে ‘নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৩’ পাশের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পরে কণ্ঠভোটে তা পাশ হয়।

এ সময় সংসদ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদনেতা শেখ হাসিনাসহ সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ-সদস্যরা টেবিল চাপড়িয়ে দেশের বাজেট বাস্তবায়নের যাত্রাকে স্বাগত জানান। 

এর আগে মঞ্জুরি দাবির ৪২ নম্বর- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জন্য আগামী জুন ২০২৪ সমাপ্য অর্থবছরের জন্য এক হাজার ৬৩৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রপতির অনুকুলে মঞ্জুরের প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদ সদস্যদের সর্বসম্মতিতে এ প্রস্তাব সংসদে গ্রহণ করা হয়।

প্রস্তাবিত বাজেটে মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, রুস্তম আলী ফরাজী, শামীম হায়দার পাটোয়ারি, রওশন আরা মান্নান ও পীর ফজলুর রহমান, গণফোরামের মোকাব্বির হোসেন খান এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। তবে ওই ছাটাই প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল পহেলা জুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপত্থাপন করেন। এবার শিরোনাম দেওয়া হয় ‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’। এরপর গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাশের পর ৭ জুন পর্যন্ত প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। সংসদনেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ২৫ জুন এই আলোচনা সমাপ্ত হয়। আলোচনা শেষে অর্থ বিল-২০২৩ পাসের মাধ্যমে বাজেটের আর্থিক ও কর প্রস্তাব সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুমোদন করা হয়।

বাজেট কাঠামো : নতুন বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে পরিচালনা ব্যয় ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ কোটি টাকা এবং মূলধনী ব্যয় ৩৯ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।

মোট আয় : নতুন বাজেটের মোট আয়ের আকার ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে কর রাজস্ব ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৫০ হাজার টাকা ও বৈদেশিক অনুদান ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। মোট করের মধ্যে এনবিআর কর হচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং নন এনবিআর হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা।

ঘাটতি : মোট ঘাটতি (অনুদানসহ) ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা এবং অনুদান ছাড়া ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এই ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ১৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এ অভ্যন্তীরণ খাতের ঋণ আসবে ব্যাংক থেকে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি এবং অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা।

বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, যোগাযোগ অবকাঠামো, ভৌত অবকাঠামো, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, কৃষি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের সময়.কম