মাইকিং করে নকল টিকা, কঠোর নজরদারি প্রয়োজন

#
news image

দেশে করোনার টিকা দেওয়ার সময় নানা ধরনের প্রতারক চক্রের উত্থান ঘটে। তবে সে সময় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে টিকা প্রদানের বিশাল কর্মযজ্ঞ সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্য, গত কয়েক বছর ধরে রাজধানীতে মাইকিং করে নকল ভ্যাকসিনের প্রচারণা চালিয়েছে একটি চক্র।

জানা যায়, জরায়ু ক্যানসারের ভয়াবহতা, প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং টিকা নেওয়ার সময়সূচি উল্লেখ করে তৈরি করা হয়েছে লিফলেট। একটি প্রতিষ্ঠানের নামে তৈরি করা এই লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। একই প্রতিষ্ঠানের নামে হেপাটাইটিজ-বি (জন্ডিস) নিয়ে তৈরি করা হয় আলাদা লিফলেট। রীতিমতো মাইকিং করে বিতরণ করা হয়েছে এগুলো।

সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দাবি, তাদের নাম ব্যবহার করে চলছে প্রতারণা। জানা যায়, এ রকম আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের নামে চলছে প্রতারণা। গত তিন বছরে রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় কয়েক হাজার নারীকে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। জন্ডিসের টিকার সঙ্গে পানি মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে নকল টিকা। এভাবে হাজার হাজার নারীকে নকল ভ্যাকসিন দিয়ে প্রতারক চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। বছরের পর বছর ধরে চলেছে এমন প্রতারণা।

তিন বছর ধরে জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্স বাংলাদেশে আমদানি বন্ধ রয়েছে। সাধারণ মানুষ এমন বহু তথ্যই জানে না। প্রতারক চক্র এ সুযোগটি নিয়েছে। প্রশ্ন হলো, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তাদের কাজটা তাহলে কী? রাজধানীর অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালানো হয়েছে এই নকল টিকা প্রদানের কার্যক্রম। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হলে কিছু নিয়ম মানতে হয়।

এ ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা দরকার। উল্লিখিত চক্রটিকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা দরকার। এদিকে বেশি মুনাফার লোভে খুলনার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের মেডিকেল অক্সিজেনের বদলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। এ ধরনের অক্সিজেন শিল্পকারখানায় লোহা কাটাসহ ভারী কাজে ব্যবহৃত হয়, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অক্সিজেন রোগীর শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ধীরে ধীরে বিকল করে দেয়। যেহেতু এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত, সেহেতু এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নমনীয়তা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। অপরাধ করে মূল হোতারা পার পেয়ে গেলে পরে তারাই নতুন নতুন অপরাধ সংঘটনে ভূমিকা রাখবে।

সমাজে কোনো অপরাধী চক্র যাতে টিকে থাকতে না পারে, কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে প্রতারণা বন্ধে এসব প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর নজরদারি থাকতে হবে।

নাগরিক ডেস্ক

০৩ এপ্রিল, ২০২৩,  10:07 PM

news image

দেশে করোনার টিকা দেওয়ার সময় নানা ধরনের প্রতারক চক্রের উত্থান ঘটে। তবে সে সময় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে টিকা প্রদানের বিশাল কর্মযজ্ঞ সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্য, গত কয়েক বছর ধরে রাজধানীতে মাইকিং করে নকল ভ্যাকসিনের প্রচারণা চালিয়েছে একটি চক্র।

জানা যায়, জরায়ু ক্যানসারের ভয়াবহতা, প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং টিকা নেওয়ার সময়সূচি উল্লেখ করে তৈরি করা হয়েছে লিফলেট। একটি প্রতিষ্ঠানের নামে তৈরি করা এই লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। একই প্রতিষ্ঠানের নামে হেপাটাইটিজ-বি (জন্ডিস) নিয়ে তৈরি করা হয় আলাদা লিফলেট। রীতিমতো মাইকিং করে বিতরণ করা হয়েছে এগুলো।

সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দাবি, তাদের নাম ব্যবহার করে চলছে প্রতারণা। জানা যায়, এ রকম আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের নামে চলছে প্রতারণা। গত তিন বছরে রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় কয়েক হাজার নারীকে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। জন্ডিসের টিকার সঙ্গে পানি মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে নকল টিকা। এভাবে হাজার হাজার নারীকে নকল ভ্যাকসিন দিয়ে প্রতারক চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। বছরের পর বছর ধরে চলেছে এমন প্রতারণা।

তিন বছর ধরে জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্স বাংলাদেশে আমদানি বন্ধ রয়েছে। সাধারণ মানুষ এমন বহু তথ্যই জানে না। প্রতারক চক্র এ সুযোগটি নিয়েছে। প্রশ্ন হলো, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তাদের কাজটা তাহলে কী? রাজধানীর অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালানো হয়েছে এই নকল টিকা প্রদানের কার্যক্রম। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হলে কিছু নিয়ম মানতে হয়।

এ ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা দরকার। উল্লিখিত চক্রটিকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা দরকার। এদিকে বেশি মুনাফার লোভে খুলনার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের মেডিকেল অক্সিজেনের বদলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। এ ধরনের অক্সিজেন শিল্পকারখানায় লোহা কাটাসহ ভারী কাজে ব্যবহৃত হয়, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অক্সিজেন রোগীর শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ধীরে ধীরে বিকল করে দেয়। যেহেতু এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত, সেহেতু এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নমনীয়তা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। অপরাধ করে মূল হোতারা পার পেয়ে গেলে পরে তারাই নতুন নতুন অপরাধ সংঘটনে ভূমিকা রাখবে।

সমাজে কোনো অপরাধী চক্র যাতে টিকে থাকতে না পারে, কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে প্রতারণা বন্ধে এসব প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর নজরদারি থাকতে হবে।