বহুমাত্রিক প্রতারণা থেকে বাঁচতে জনসচেতনতার বিকল্প নেই

#
news image

ইতিপূর্বে জ্বিনের বাদশাহদের দৌরত্ব আমরা কমবেশি অনেকেই দেখেছি। রাত আড়াইটা বা তিনটার সময় মোবাইলে ফোন করে ভারী গলায় 'কিরে ঘুমচ্ছিস? ওঠ নামাজ পড় তাহাজ্জুদের সময় এখন, আমি জি¦নের বাদশাহ বলছি, তোর কপাল ভালো' ইত্যাকার নানারূপ আকর্ষণীয়, অদ্ভুত ও উদ্ভট কথাবার্তা দিয়ে আলাপ শুরু করা দু'একজনের সাথে বাক্যালাপ করার সৌভাগ্য(!) কালেভদ্রে আমাদের অনেকেরই কমবেশি হয়েছে।

যেনতেন কথা না, সাধারণ কোন জি¦ন না, তিনি জি¦নের বাদশাহ। তার উপরে আবার যে সে ধরণের সাদামাটা কিসিমের বাদশাহও না। প্রতারণা যে এখন কত ধরণের, কত সিস্টেমের তার ইয়ত্তা নেই। প্রতারণার পরিধি ও ব্যাপ্তি আজ আর নির্দিষ্ট গণ্ডির ভেতরে সীমাবদ্ধ নেই। অনলাইন অফলাইন সবখানে এখন প্রতারণা। অনলাইনে অধিক ছাড়ে পণ্য কেনাকাটা করতে গিয়ে অর্থ খুইয়ে দিশেহারা অনেকেই। মাল্টিলেবেল মার্কেটিং বা বহুস্তর পণ্য বিপণনের নামেও দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে ব্যাপক নৈরাজ্য। ভদ্রবেশী সুটেট বুটেড প্রতারকদের অতি লোভের খপ্পরে তথাকথিত এসব মার্কেটিং কোম্পানি নামের সাইনবোর্ডের আড়ালে প্রতারকদের কাছে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

যুবক, ডেস্টিনিসহ প্রতারণায় যুক্ত গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কিছু ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আইনানুগ বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও এদের অধস্তন শিষ্য, শাগরেদ ও অনুগামী প্রশিক্ষিত হাজার হাজার সাঙ্গপাঙ্গ সারা দেশে নতুন নতুন নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতে চলেছেন ঠিকঠিক ভাবেই। তারাও বিভিন্ন কৌশলে নামকাওয়াস্তে এইজাতীয় সেবামূলক(!) প্রতিষ্ঠান খুলে বহাল তবিয়তে প্রতারণার কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন বহাল তবিয়তে। কথা হচ্ছে, এদের রুখবে কে? এই প্রবঞ্চকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দায়িত্বটা মূলত: কাদের, সেটাই ভাবনার বিষয়। সাধারণ মানুষ তো প্রতারকচক্রের খপ্পরে পড়ে নিত্যই সর্বস্ব হারাচ্ছেন।

সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। সমাজের স্তরে স্তরে এখন নিত্য নতুন প্রতারণার কৌশল। পথে-ঘাটে, হাটে-মাঠে কোথায় নেই এখন প্রতারকদের অবাধ বিচরণ? সমাজ-দেহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘাপটি মেরে আছে প্রতারকদের নানান চক্র। ছদ্মবেশে ভদ্রলোকের চেহারায় ওত পেতে থাকা এসব চক্র নিত্য নতুন রূপ পাল্টায়। কখনও ছিনতাইকারী, কখনও ডাকাত, কখনও ধর্ষক, কখনও অপহরণকারী, কখনও বিকাশ হ্যাকার, কখনও মাল্টিলেবেল মার্কেটিং এর নাম ব্যবহার করে প্রতারণায় যুক্ত হয়ে থাকেন এরা। বহুমাত্রিক রূপপরিগ্রহকারী এই প্রতারকদেরকে চিহ্নিত করা এখন সময়ের দাবি। এদের খপ্পরে পড়া থেকে সাধারণ মানুষদের বাঁচাতে হলে প্রথমেই আমাদের পরিহার করতে হবে লোভ। প্রয়োজন আমাদের সর্বোচ্চ সচেতনতা ও সাবধানতা। প্রতিটি নাগরিককে সচেতন হতে হবে।

ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে ঘরে ঘরে যাতে এই সচেতনতা কার্যক্রম জোরালো করা যায় সে জন্য সমাজের প্রতিটি পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ ও ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে প্রতারকদের বিভিন্ন অপকৌশল সম্বন্ধে ধারণা দিতে হবে এবং তাদেরকে সজাগ করে তুলতে হবে। জাগিয়ে তুলতে হবে। প্রতারণা আর দুর্নীতির ভয়াবহ এবং ধ্বংসাত্মক পরিণাম ও পরিণতি জানিয়ে পুরো সমাজকে, পুরো দেশ ও জাতিকে সজাগ করে তুলতে হবে। সেটা করা সম্ভব হলেই এদের থেকে বাঁচার কিছুটা হলেও আশা অন্ততঃ করা যাবে।

নাগরিক ডেস্ক

২৮ মার্চ, ২০২৩,  3:16 PM

news image

ইতিপূর্বে জ্বিনের বাদশাহদের দৌরত্ব আমরা কমবেশি অনেকেই দেখেছি। রাত আড়াইটা বা তিনটার সময় মোবাইলে ফোন করে ভারী গলায় 'কিরে ঘুমচ্ছিস? ওঠ নামাজ পড় তাহাজ্জুদের সময় এখন, আমি জি¦নের বাদশাহ বলছি, তোর কপাল ভালো' ইত্যাকার নানারূপ আকর্ষণীয়, অদ্ভুত ও উদ্ভট কথাবার্তা দিয়ে আলাপ শুরু করা দু'একজনের সাথে বাক্যালাপ করার সৌভাগ্য(!) কালেভদ্রে আমাদের অনেকেরই কমবেশি হয়েছে।

যেনতেন কথা না, সাধারণ কোন জি¦ন না, তিনি জি¦নের বাদশাহ। তার উপরে আবার যে সে ধরণের সাদামাটা কিসিমের বাদশাহও না। প্রতারণা যে এখন কত ধরণের, কত সিস্টেমের তার ইয়ত্তা নেই। প্রতারণার পরিধি ও ব্যাপ্তি আজ আর নির্দিষ্ট গণ্ডির ভেতরে সীমাবদ্ধ নেই। অনলাইন অফলাইন সবখানে এখন প্রতারণা। অনলাইনে অধিক ছাড়ে পণ্য কেনাকাটা করতে গিয়ে অর্থ খুইয়ে দিশেহারা অনেকেই। মাল্টিলেবেল মার্কেটিং বা বহুস্তর পণ্য বিপণনের নামেও দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে ব্যাপক নৈরাজ্য। ভদ্রবেশী সুটেট বুটেড প্রতারকদের অতি লোভের খপ্পরে তথাকথিত এসব মার্কেটিং কোম্পানি নামের সাইনবোর্ডের আড়ালে প্রতারকদের কাছে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

যুবক, ডেস্টিনিসহ প্রতারণায় যুক্ত গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কিছু ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আইনানুগ বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও এদের অধস্তন শিষ্য, শাগরেদ ও অনুগামী প্রশিক্ষিত হাজার হাজার সাঙ্গপাঙ্গ সারা দেশে নতুন নতুন নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতে চলেছেন ঠিকঠিক ভাবেই। তারাও বিভিন্ন কৌশলে নামকাওয়াস্তে এইজাতীয় সেবামূলক(!) প্রতিষ্ঠান খুলে বহাল তবিয়তে প্রতারণার কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন বহাল তবিয়তে। কথা হচ্ছে, এদের রুখবে কে? এই প্রবঞ্চকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দায়িত্বটা মূলত: কাদের, সেটাই ভাবনার বিষয়। সাধারণ মানুষ তো প্রতারকচক্রের খপ্পরে পড়ে নিত্যই সর্বস্ব হারাচ্ছেন।

সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। সমাজের স্তরে স্তরে এখন নিত্য নতুন প্রতারণার কৌশল। পথে-ঘাটে, হাটে-মাঠে কোথায় নেই এখন প্রতারকদের অবাধ বিচরণ? সমাজ-দেহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘাপটি মেরে আছে প্রতারকদের নানান চক্র। ছদ্মবেশে ভদ্রলোকের চেহারায় ওত পেতে থাকা এসব চক্র নিত্য নতুন রূপ পাল্টায়। কখনও ছিনতাইকারী, কখনও ডাকাত, কখনও ধর্ষক, কখনও অপহরণকারী, কখনও বিকাশ হ্যাকার, কখনও মাল্টিলেবেল মার্কেটিং এর নাম ব্যবহার করে প্রতারণায় যুক্ত হয়ে থাকেন এরা। বহুমাত্রিক রূপপরিগ্রহকারী এই প্রতারকদেরকে চিহ্নিত করা এখন সময়ের দাবি। এদের খপ্পরে পড়া থেকে সাধারণ মানুষদের বাঁচাতে হলে প্রথমেই আমাদের পরিহার করতে হবে লোভ। প্রয়োজন আমাদের সর্বোচ্চ সচেতনতা ও সাবধানতা। প্রতিটি নাগরিককে সচেতন হতে হবে।

ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে ঘরে ঘরে যাতে এই সচেতনতা কার্যক্রম জোরালো করা যায় সে জন্য সমাজের প্রতিটি পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ ও ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে প্রতারকদের বিভিন্ন অপকৌশল সম্বন্ধে ধারণা দিতে হবে এবং তাদেরকে সজাগ করে তুলতে হবে। জাগিয়ে তুলতে হবে। প্রতারণা আর দুর্নীতির ভয়াবহ এবং ধ্বংসাত্মক পরিণাম ও পরিণতি জানিয়ে পুরো সমাজকে, পুরো দেশ ও জাতিকে সজাগ করে তুলতে হবে। সেটা করা সম্ভব হলেই এদের থেকে বাঁচার কিছুটা হলেও আশা অন্ততঃ করা যাবে।