তাহিরপুরে সময় বাড়লেও শেষ হয়নি বাঁধের কাজ, অনিয়মের অভিযোগ স্থানীয়দের 

#
news image

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের অতিরিক্ত সময়ের আর মাত্র এক দিন বাকি। শেষ পর্যায়ে এসেও বাঁধের অনেক কাজ বাকি রয়েগেছে। দুুর্বা-দুরমুজ, প্যালাসেটিং দূরের কথা, এখনও মাটি ফেলার কাজই শেষ হয়নি কোন কোন বাঁধে। ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারও রয়েছে অরক্ষিত অবস্থায়। যেখানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহজে পৌঁছাতে পারছেন, সেখানে কাজের গতি একধরণের, প্রত্যন্ত  হাওররক্ষা বাঁধে আরেক অবস্থা।

এখন পর্যন্ত উপজেলায় ৮৫ ভাগ বাঁধের কাজ হয়েছে বলে দাবি করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাহিরপুর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা হাওররক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব শওকত উজ্জামান। তবে বাস্তবে সেটি আরও অনেক কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাই বোরো ফসলের উপর নিভরশীল লাখো কৃষকের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে তাহিরপুর উপজেলায় ১১২টি পিআইসি গঠন করা হয়েছে। এসব প্রকল্পে কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা। কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) নীতিমালা-২০১৭ অনুসারে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রাক্কলন শেষ করে ১৫ ডিসেম্বর হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

কিন্তু দেখা গেছে চলতি বছরে ১১ জানুয়ারি প্রথম ধাপে ৩০টি ও ২১ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৮৩টি পিআইসি ঘোষণা করে পাউবো। এর ফলে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার সরকারি নির্দেশ থাকলেও তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে পানিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শনে এসে বলেছিলেন, আগামী ৭ মার্চের মধ্যে হাওড়ের সব ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করা হবে। সোমবার সরেজমিন মাটিয়ান হাওরের বিভিন্ন বাঁধ পরিদর্শন করে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ বাঁধসহ অধিকাংশ বাঁধের কাজে ধীরগতি ও দায়সারা ভাবে কাজ করছেন পিআইসিরা। কোন কোন বাঁধে মাটি ফেলার কাজ চলছে আবার কোনটিতে সঠিক নিয়মে দুরমুজ না করেই দুর্বা লাগানো হচ্ছে।

এছাড়াও বাঁধের উপর দিয়ে একবার এক্সভেটর মেশিন (মাটিকাটার মেশিন) চালিয়ে নেয়াটাকেই দুরমুজ বলে দাবি করছেন পিআইসিরা। আর এভাবেই দুরমুজের কাজ করছেন তারা। ৪২নং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি মাহবুবুল আলম মুরাদ বলেন, হাওরের পানি দেরিতে কমেছে। এতে মাটি সংকটের কারনে   কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। এখনও মাটির কাজ করেই শেষ করতে পারছিনা। ৫৬ নং প্রকল্পের শ্রীপুর গ্রাম সংলগ্ন স্থানে মাটি ফেলার কাজ শুরু করতে দেখা যায় তখন পিআইসির সভাপতি সাহেব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার প্রকল্পে মাটি ভরাটের কাজ শেষ। এই জায়গাটা প্ল্যানে ছিলোনা পরে পাউবোর এসও সাহেব এই জায়গাটায় বাঁধ নির্মাণ করতে বলেন। তাই এখানে কাজ শুরু করেছি।

দুরমুজের বিষয়ে জানতে চাইলে জানান, প্রকল্পের বাকি বাঁধের উপর দিয়ে একবার এক্সভেটর মেশিন (মাটিকাটার মেশিন) চালিয়ে নিয়ে দুরমুজের কাজ করেছি। অনেকেই এভাবেই দুরমুজের কাজ করছেন। এছাড়াও অন্যান্য পিআইসিরা জানান, আর্থিক সংকটের কারণে কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। সরকারি বরাদ্দের টাকা পরিমানে খুব কম পেয়েছি। তাই ধারদেনা করে বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিকাংশ বাঁধেই ফিলিং চার্ট অনুযায়ী যতটুক উঁচু হওয়ার কথা ছিলো তা হচ্ছে। পরিমাণে উচ্চতা অনেক কম হচ্ছে। বাঁধে সঠিক নিয়মে দুরমুজের কাজও হচ্ছে না বলে জানিয়েন তারা।

তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওর পাড়ের এনামুল, শাহিন মিয়া ও সামায়ূন কবির সহ অধিকাংশ কৃষক জানান, সময় অতিবাহিত হলেও এখনো বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এখনোও অনেক বাঁধে মাটির কাজ চলছে। যে সকল বাঁধে মাটির কাজ স¤পন্ন হয়েছে তার অধিকাংশ বাঁধেই সঠিক দুরমুজ হচ্ছে না। এবারের নির্মাণ কাজ খুবই দূর্বল করা হচ্ছে। এতে আমরা কৃষকরা আগাম বন্যায় বাঁধগুলো টিকে থাকবে কিনা আশঙ্কায় আছি। তারা আরও বলেন, সরকার প্রতিবছর বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ঠিকমতো কাজ হয় না। সারাবছর কষ্ট করে জমিতে ফসল ফলাই।

সেই ফসলগুলো যদি অকাল বন্যায় তলিয়ে যায়, তাহলে আমাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই সঠিক নিয়মে দ্রুত হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করতে অনুরোধ জানান তারা। উপজেলার শনির হাওর পাড়ের কৃষক ইয়াছিন মিয়া বলেন, বৃষ্টিপাতের দিন আসার আগেই দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ করতে হবে। তা না হলে বাঁধ দূর্বল হবে নদীতে পানি আসলে বাঁধ টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবেনা। হাওর বাঁচাও আন্দোলন তাহিরপুর উপজেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক সাইদুল কিবরিয়া বলেন, এবারো গুরুত্বপূর্ণ বাঁধের কাজে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। পাউবো বরাবরই নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করে না। সঠিক সময়ে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় দেরিতে তড়িগড়ি করে বাঁধের কাজ করতে গিয়ে প্রতিটি বাঁধই ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্বল হয়।

ফলে বৃষ্টির পানি ও সামান্য পাহাড়ি ঢলের চাপে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করে। এবারো লাখ লাখ কৃষক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কের মধ্যে সময় পার করছেন। এবার হাওরের কোনো ক্ষতি হলে এর দায়ভার পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাহিরপুর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা হাওররক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব শওকত উজ্জামান বলেন, শতকরা ৮৫ ভাগ কাজ স¤পন্ন হয়েছে। ৭ মার্চের মধ্যেই প্রতিটি বাঁধে মাটি ভরাটের কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে দু’একটা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তাদের বিষয়ে ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, উপমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ মার্চের মধ্যেই ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করা হবে। আমি বিভিন্ন হাওরে বাঁধের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে পিআইসিদের দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দিচ্ছি। বাঁধের কাজ প্রায় শেষের দিকে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অরুন চক্রবর্তী, সুনামগঞ্জ

০৬ মার্চ, ২০২৩,  7:22 PM

news image

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের অতিরিক্ত সময়ের আর মাত্র এক দিন বাকি। শেষ পর্যায়ে এসেও বাঁধের অনেক কাজ বাকি রয়েগেছে। দুুর্বা-দুরমুজ, প্যালাসেটিং দূরের কথা, এখনও মাটি ফেলার কাজই শেষ হয়নি কোন কোন বাঁধে। ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারও রয়েছে অরক্ষিত অবস্থায়। যেখানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহজে পৌঁছাতে পারছেন, সেখানে কাজের গতি একধরণের, প্রত্যন্ত  হাওররক্ষা বাঁধে আরেক অবস্থা।

এখন পর্যন্ত উপজেলায় ৮৫ ভাগ বাঁধের কাজ হয়েছে বলে দাবি করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাহিরপুর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা হাওররক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব শওকত উজ্জামান। তবে বাস্তবে সেটি আরও অনেক কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাই বোরো ফসলের উপর নিভরশীল লাখো কৃষকের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে তাহিরপুর উপজেলায় ১১২টি পিআইসি গঠন করা হয়েছে। এসব প্রকল্পে কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা। কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) নীতিমালা-২০১৭ অনুসারে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রাক্কলন শেষ করে ১৫ ডিসেম্বর হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

কিন্তু দেখা গেছে চলতি বছরে ১১ জানুয়ারি প্রথম ধাপে ৩০টি ও ২১ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৮৩টি পিআইসি ঘোষণা করে পাউবো। এর ফলে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার সরকারি নির্দেশ থাকলেও তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে পানিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শনে এসে বলেছিলেন, আগামী ৭ মার্চের মধ্যে হাওড়ের সব ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করা হবে। সোমবার সরেজমিন মাটিয়ান হাওরের বিভিন্ন বাঁধ পরিদর্শন করে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ বাঁধসহ অধিকাংশ বাঁধের কাজে ধীরগতি ও দায়সারা ভাবে কাজ করছেন পিআইসিরা। কোন কোন বাঁধে মাটি ফেলার কাজ চলছে আবার কোনটিতে সঠিক নিয়মে দুরমুজ না করেই দুর্বা লাগানো হচ্ছে।

এছাড়াও বাঁধের উপর দিয়ে একবার এক্সভেটর মেশিন (মাটিকাটার মেশিন) চালিয়ে নেয়াটাকেই দুরমুজ বলে দাবি করছেন পিআইসিরা। আর এভাবেই দুরমুজের কাজ করছেন তারা। ৪২নং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি মাহবুবুল আলম মুরাদ বলেন, হাওরের পানি দেরিতে কমেছে। এতে মাটি সংকটের কারনে   কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। এখনও মাটির কাজ করেই শেষ করতে পারছিনা। ৫৬ নং প্রকল্পের শ্রীপুর গ্রাম সংলগ্ন স্থানে মাটি ফেলার কাজ শুরু করতে দেখা যায় তখন পিআইসির সভাপতি সাহেব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার প্রকল্পে মাটি ভরাটের কাজ শেষ। এই জায়গাটা প্ল্যানে ছিলোনা পরে পাউবোর এসও সাহেব এই জায়গাটায় বাঁধ নির্মাণ করতে বলেন। তাই এখানে কাজ শুরু করেছি।

দুরমুজের বিষয়ে জানতে চাইলে জানান, প্রকল্পের বাকি বাঁধের উপর দিয়ে একবার এক্সভেটর মেশিন (মাটিকাটার মেশিন) চালিয়ে নিয়ে দুরমুজের কাজ করেছি। অনেকেই এভাবেই দুরমুজের কাজ করছেন। এছাড়াও অন্যান্য পিআইসিরা জানান, আর্থিক সংকটের কারণে কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। সরকারি বরাদ্দের টাকা পরিমানে খুব কম পেয়েছি। তাই ধারদেনা করে বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিকাংশ বাঁধেই ফিলিং চার্ট অনুযায়ী যতটুক উঁচু হওয়ার কথা ছিলো তা হচ্ছে। পরিমাণে উচ্চতা অনেক কম হচ্ছে। বাঁধে সঠিক নিয়মে দুরমুজের কাজও হচ্ছে না বলে জানিয়েন তারা।

তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওর পাড়ের এনামুল, শাহিন মিয়া ও সামায়ূন কবির সহ অধিকাংশ কৃষক জানান, সময় অতিবাহিত হলেও এখনো বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এখনোও অনেক বাঁধে মাটির কাজ চলছে। যে সকল বাঁধে মাটির কাজ স¤পন্ন হয়েছে তার অধিকাংশ বাঁধেই সঠিক দুরমুজ হচ্ছে না। এবারের নির্মাণ কাজ খুবই দূর্বল করা হচ্ছে। এতে আমরা কৃষকরা আগাম বন্যায় বাঁধগুলো টিকে থাকবে কিনা আশঙ্কায় আছি। তারা আরও বলেন, সরকার প্রতিবছর বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ঠিকমতো কাজ হয় না। সারাবছর কষ্ট করে জমিতে ফসল ফলাই।

সেই ফসলগুলো যদি অকাল বন্যায় তলিয়ে যায়, তাহলে আমাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই সঠিক নিয়মে দ্রুত হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করতে অনুরোধ জানান তারা। উপজেলার শনির হাওর পাড়ের কৃষক ইয়াছিন মিয়া বলেন, বৃষ্টিপাতের দিন আসার আগেই দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ করতে হবে। তা না হলে বাঁধ দূর্বল হবে নদীতে পানি আসলে বাঁধ টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবেনা। হাওর বাঁচাও আন্দোলন তাহিরপুর উপজেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক সাইদুল কিবরিয়া বলেন, এবারো গুরুত্বপূর্ণ বাঁধের কাজে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। পাউবো বরাবরই নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করে না। সঠিক সময়ে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় দেরিতে তড়িগড়ি করে বাঁধের কাজ করতে গিয়ে প্রতিটি বাঁধই ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্বল হয়।

ফলে বৃষ্টির পানি ও সামান্য পাহাড়ি ঢলের চাপে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করে। এবারো লাখ লাখ কৃষক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কের মধ্যে সময় পার করছেন। এবার হাওরের কোনো ক্ষতি হলে এর দায়ভার পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাহিরপুর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা হাওররক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব শওকত উজ্জামান বলেন, শতকরা ৮৫ ভাগ কাজ স¤পন্ন হয়েছে। ৭ মার্চের মধ্যেই প্রতিটি বাঁধে মাটি ভরাটের কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে দু’একটা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তাদের বিষয়ে ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, উপমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ মার্চের মধ্যেই ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করা হবে। আমি বিভিন্ন হাওরে বাঁধের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে পিআইসিদের দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দিচ্ছি। বাঁধের কাজ প্রায় শেষের দিকে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।