আলাদিন'স পার্কে বিনোদনের নামে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ

এস এম মনিরুল ইসলাম, সাভার (ঢাকা)
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 10:39 AM

আলাদিন'স পার্কে বিনোদনের নামে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ
সাভারের বংশী নদীর কুল ঘেষে ধামরাইয়ে কুল্লা ইউনিয়নে গড়ে উঠা আলাদিন'স পার্ক নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র। এই বিনোদন কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছে শিশু থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষের বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবে। কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করেই দেখা যায় নানা ধরনের অপরাধ কেন্দ্র। চলছে মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপ। তবে ওই বিনোদন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের দাবী প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বাড়তি মোনাফা আয়ের জন্য অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে । সরেজমিনে ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের সীতিপল্লি গ্রামের আলাদিন’স পার্কে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে।
আলাদিন’স পার্কে প্রবেশের পর দেখা গেছে বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন রাইডস। কিন্তু এগলোর অধিকাংশই অকেজো। নামমাত্র এসব অকেজো রাইটস এর আড়ালে চলছে অশ্লীলতা থেকে শুরু করে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই পার্কটিতে অসংখ্য প্রেমিক যুগলের ভীড় জমে। ৩৫০ টাকার টিকেটে দর্শনার্থীদের ঘন্টার পর ঘন্টা এসব অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকতে দেখা গেছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-কিশোরী। ভিতরে তৈরি করা হয়েছে বিলাসবহুল কটেজ। আলাদিন’স এর এ কটেজে সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় ২৪ ঘন্টার জন্য রুম ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে যুবক-যুবতীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, পার্কের ভিতরে বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য রাইড থাকলেও সেগুলো সচল নেই। ভিতরে প্রবেশ করলে চোখে পড়ে ঝোপঝাড়ের ভিতরে যুবক-যুবতী ও কিশোর-কিশোরীরা আপত্তিকর অবস্থায়। এতে করে সামাজিক অবক্ষয়ের ভয়ে এলাকার মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও কটেজ ভাড়া নিয়েও চলছে দেহব্যবসাসহ মাদক ব্যবসা। এসবের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে পার্ক কর্তৃপক্ষের ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে বিভিন্ন সময় হুমকি দেয়া হয়। তাই পরিবারের কথা চিন্তা করে কাউকে কিছু বলি না।
দর্শনার্থী সেজে পার্কে ঘুরতে যাওয়ায় কি কি সুভিধা আছে জানতে চাওয়ায় আলাদিন’স পার্কের ব্যবস্থাপক (রিসোর্ট) কামরুল ইসলাম নেওয়াজ জানান, তাদের তৃতীয় তলার রিসোর্টে ২০টি রুম রয়েছে। ২৪ ঘন্টার জন্য সাড়ে ৩ হাজার টাকার প্যাকেজের রুমে মেয়েদের বাহির থেকে নিয়ে আসতে হয়, আর সাড়ে ৪হাজার টাকার প্যাকেজে ভিতরেই ব্যবস্থা আছে। আপনি ছবি দেখে পছন্দ করলেই রুমে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এছাড়ও আনন্দ ফুর্তির (মদ, বিয়ারের) ব্যবস্থাও রয়েছে এ কটেজগুলোতে।
রিসোর্টের কর্মচারী মো: সোহেল জানায়, আমি এক বছর ধরে এখানে কাজ করছি। তবে পার্কে দর্শনার্থী একবার আসলে সে দ্বিতীয়বার আসতে চায়না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখানে কোন রাইড সচল নাই। এখানে ছেলেরা মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করতে আসে। এতো টাকা দিয়ে রুম ভাড়া নিয়ে ভিতরে কি করে আপনি বুঝেন না!রেগে গিয়ে উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেয় কর্মচারী সোহেল।
সাংবাদিক পরিচয়ে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে আলাদিন’স পার্কের ওই ব্যবস্থাপক (রিসোর্ট) কামরুল ইসলাম নেওয়াজ জানান, এখানে অসামাজিক কোনো কার্যকলাপ হয়না। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তবে আপনি নিজেইতো জানালেন এখানকার সুবিধাসমূহ (অসামাজিক) বলায় সাথে সাথে লাইনটি কেটে দেন। তবে পুনরায় ওই কর্মকর্তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টায় কল করায় তিনি আর কল রিসিভ করেন নি।
এ বিষয় স্থানীয় কুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লুৎফর রহমান জানান, পার্কের ভিতরে মাদক ব্যবসা ও নারী দিয়ে ব্যবসা করার বিষয়টি এখনও আমার নলেজে আসেনি। এমনকি সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আমাকে কেউ করেনি। তবে এখানে অনেক বড় বড় লোকের আসা যাওয়া আছে তাই যেহেতু কেউ আমাকে কোনো অভিযোগ করেনি সেহেতু আমি ওদেরকে কিভাবে বলি!
এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে আলাদিন’স পার্কের ব্যবস্থাপক কোরবান আলী জানান, আমাদের এখানে কোন মাদকের ব্যবসা হয়না। এটা পার্ক, বিনোদনের জন্য লোকজন আসেন। কিন্তু পার্কের একটি রাইডও চালু করে দেখাতে পারেননি তিনি।
কর্মচারী ও এক কর্মকর্তার দেয়া বক্তব্যের বিষয়টি তুলে ধরলে তিনি পরে সব স্বীকার করে বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে পার্ক করা হয়েছে। ওইসব না চললে চালান উঠবে কিভাবে।
পরে সাংবাদিক পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এ প্রতিবেদককে বিভিন্ন লোক দিয়ে তদবির করেন।
ঘটনার সত্যতা জানতে কাস্টমার সেজে আলাদিন'স পার্কের মালিক আলাউদ্দিন এর মুঠোফোনে কল করি,, কাকা শ্যামলী থেকে আমরা কয়েকজন বান্ধবীকে নিয়ে আসতে চাই, রুম লাগবে ৩টি দামটাম একটু কম রাইখেন, তিনি (আলাউদ্দিন) বললেন, আসেন। এরপর কোনো ঝামেলা হবে কি-না বলায় তিনি বললেন, কোনো সমস্যা নাই- আসেন।"
তবে সাংবাদিক পরিচয়ে এ বিষয় জানতে আলাদিন'স পার্কের মালিক আলাউদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রতিবেদককে মুঠো ফোনে বাইরে থেকে মেয়ে নিয়ে থাকাসহ অসামাজিক কার্যকলাপের সত্যতা অস্বীকার করে পার্কে তিনি থাকাকালীন সময়ে এসে দেখা করতে অনুরোধ জানান।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আতিকুর রহমান,বিপিএম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স। এ বিষয় আমার জানা নাই, তবে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা ব্যাবস্থা নিবো।
এস এম মনিরুল ইসলাম, সাভার (ঢাকা)
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 10:39 AM

সাভারের বংশী নদীর কুল ঘেষে ধামরাইয়ে কুল্লা ইউনিয়নে গড়ে উঠা আলাদিন'স পার্ক নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র। এই বিনোদন কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছে শিশু থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষের বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবে। কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করেই দেখা যায় নানা ধরনের অপরাধ কেন্দ্র। চলছে মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপ। তবে ওই বিনোদন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের দাবী প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বাড়তি মোনাফা আয়ের জন্য অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে । সরেজমিনে ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের সীতিপল্লি গ্রামের আলাদিন’স পার্কে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে।
আলাদিন’স পার্কে প্রবেশের পর দেখা গেছে বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন রাইডস। কিন্তু এগলোর অধিকাংশই অকেজো। নামমাত্র এসব অকেজো রাইটস এর আড়ালে চলছে অশ্লীলতা থেকে শুরু করে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই পার্কটিতে অসংখ্য প্রেমিক যুগলের ভীড় জমে। ৩৫০ টাকার টিকেটে দর্শনার্থীদের ঘন্টার পর ঘন্টা এসব অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকতে দেখা গেছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-কিশোরী। ভিতরে তৈরি করা হয়েছে বিলাসবহুল কটেজ। আলাদিন’স এর এ কটেজে সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় ২৪ ঘন্টার জন্য রুম ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে যুবক-যুবতীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, পার্কের ভিতরে বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য রাইড থাকলেও সেগুলো সচল নেই। ভিতরে প্রবেশ করলে চোখে পড়ে ঝোপঝাড়ের ভিতরে যুবক-যুবতী ও কিশোর-কিশোরীরা আপত্তিকর অবস্থায়। এতে করে সামাজিক অবক্ষয়ের ভয়ে এলাকার মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও কটেজ ভাড়া নিয়েও চলছে দেহব্যবসাসহ মাদক ব্যবসা। এসবের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে পার্ক কর্তৃপক্ষের ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে বিভিন্ন সময় হুমকি দেয়া হয়। তাই পরিবারের কথা চিন্তা করে কাউকে কিছু বলি না।
দর্শনার্থী সেজে পার্কে ঘুরতে যাওয়ায় কি কি সুভিধা আছে জানতে চাওয়ায় আলাদিন’স পার্কের ব্যবস্থাপক (রিসোর্ট) কামরুল ইসলাম নেওয়াজ জানান, তাদের তৃতীয় তলার রিসোর্টে ২০টি রুম রয়েছে। ২৪ ঘন্টার জন্য সাড়ে ৩ হাজার টাকার প্যাকেজের রুমে মেয়েদের বাহির থেকে নিয়ে আসতে হয়, আর সাড়ে ৪হাজার টাকার প্যাকেজে ভিতরেই ব্যবস্থা আছে। আপনি ছবি দেখে পছন্দ করলেই রুমে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এছাড়ও আনন্দ ফুর্তির (মদ, বিয়ারের) ব্যবস্থাও রয়েছে এ কটেজগুলোতে।
রিসোর্টের কর্মচারী মো: সোহেল জানায়, আমি এক বছর ধরে এখানে কাজ করছি। তবে পার্কে দর্শনার্থী একবার আসলে সে দ্বিতীয়বার আসতে চায়না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখানে কোন রাইড সচল নাই। এখানে ছেলেরা মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করতে আসে। এতো টাকা দিয়ে রুম ভাড়া নিয়ে ভিতরে কি করে আপনি বুঝেন না!রেগে গিয়ে উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেয় কর্মচারী সোহেল।
সাংবাদিক পরিচয়ে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে আলাদিন’স পার্কের ওই ব্যবস্থাপক (রিসোর্ট) কামরুল ইসলাম নেওয়াজ জানান, এখানে অসামাজিক কোনো কার্যকলাপ হয়না। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তবে আপনি নিজেইতো জানালেন এখানকার সুবিধাসমূহ (অসামাজিক) বলায় সাথে সাথে লাইনটি কেটে দেন। তবে পুনরায় ওই কর্মকর্তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টায় কল করায় তিনি আর কল রিসিভ করেন নি।
এ বিষয় স্থানীয় কুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লুৎফর রহমান জানান, পার্কের ভিতরে মাদক ব্যবসা ও নারী দিয়ে ব্যবসা করার বিষয়টি এখনও আমার নলেজে আসেনি। এমনকি সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আমাকে কেউ করেনি। তবে এখানে অনেক বড় বড় লোকের আসা যাওয়া আছে তাই যেহেতু কেউ আমাকে কোনো অভিযোগ করেনি সেহেতু আমি ওদেরকে কিভাবে বলি!
এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে আলাদিন’স পার্কের ব্যবস্থাপক কোরবান আলী জানান, আমাদের এখানে কোন মাদকের ব্যবসা হয়না। এটা পার্ক, বিনোদনের জন্য লোকজন আসেন। কিন্তু পার্কের একটি রাইডও চালু করে দেখাতে পারেননি তিনি।
কর্মচারী ও এক কর্মকর্তার দেয়া বক্তব্যের বিষয়টি তুলে ধরলে তিনি পরে সব স্বীকার করে বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে পার্ক করা হয়েছে। ওইসব না চললে চালান উঠবে কিভাবে।
পরে সাংবাদিক পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এ প্রতিবেদককে বিভিন্ন লোক দিয়ে তদবির করেন।
ঘটনার সত্যতা জানতে কাস্টমার সেজে আলাদিন'স পার্কের মালিক আলাউদ্দিন এর মুঠোফোনে কল করি,, কাকা শ্যামলী থেকে আমরা কয়েকজন বান্ধবীকে নিয়ে আসতে চাই, রুম লাগবে ৩টি দামটাম একটু কম রাইখেন, তিনি (আলাউদ্দিন) বললেন, আসেন। এরপর কোনো ঝামেলা হবে কি-না বলায় তিনি বললেন, কোনো সমস্যা নাই- আসেন।"
তবে সাংবাদিক পরিচয়ে এ বিষয় জানতে আলাদিন'স পার্কের মালিক আলাউদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রতিবেদককে মুঠো ফোনে বাইরে থেকে মেয়ে নিয়ে থাকাসহ অসামাজিক কার্যকলাপের সত্যতা অস্বীকার করে পার্কে তিনি থাকাকালীন সময়ে এসে দেখা করতে অনুরোধ জানান।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আতিকুর রহমান,বিপিএম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স। এ বিষয় আমার জানা নাই, তবে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা ব্যাবস্থা নিবো।