৫২ বছরেও শহীদের মর্যাদা মেলেনি শাহজাহানের

মাহমুদুল হাসান, চৌহালী (সিরাজগঞ্জ)
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 12:09 PM
৫২ বছরেও শহীদের মর্যাদা মেলেনি শাহজাহানের
১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর মহান মুক্তিযুদ্ধকালে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের বৈন্যা গ্রামে পাকহানাদার বাহিনীর নৃশংশ গণহত্যায় নিহতদের শহীদের মর্যাদা মেলেনি স্বাধীনতার ৫২ বছরেও।
ডিজিটাল যুগে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সময়ে চৌহালীতে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে গণহত্যায় শহীদের সর্বচ্চ মর্যাদার দাবি জানায় উন্নত বাংলাদেশ ও স্মার্ট যুগের মানুষ। ফলে যাদের আত্নত্যাগের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে সেই সব নিহতের পরিবারের সদস্যরা আজও অবহেলিত। প্রতিটা ক্ষেত্রে অবহেলা আর অবজ্ঞায় তারা বঞ্চিত ও লাঞ্ছিত হচ্ছে। অথচ তাদের সর্বচ্চ মর্যাদা পাওয়া উচিত ছিল। এমনি বঞ্চনার স্বীকার শহীদ শাহজাহানের স্ত্রী ফিরোজা বেগম, শহীদ নেরু সেকের স্ত্রী সোহাগি, শহীদ সামাদএর স্ত্রী রোজিনাসহ সকল শহীদ পরিবার ।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের বনগ্রাম (রসুলপুর) ও সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের বৈন্যা গ্রামের দুলাল সরকারের ফাঁকা বাড়িতে অর্ধশত নিরিহ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধা সমবেত হয়। রাজাকারদের গোপন সংবাদ পেয়ে পাক হানাদার বাহিনী নাগরপুর থেকে বনগ্রাম (রসুলপুর) এবং চৌহালীর বৈন্যা গ্রামে পৃথক দু‘টি অভিযান চালিয়ে শতাধিক বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এ আগুনে পুড়ে বেশ কিছু গবাদিপশুও মারা যায়। এছাড়া পাকবাহিনী ৭৫/৮০জন নিরিহ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাকে নৃশংশ ভাবে হত্যা করে। এর মধ্যে চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের বড় ভাই হারুন অর রশিদ, ভগ্নিপতি শাহজাহানসহ একই পরিবারের ৭ সদস্যকে নির্বাচনের হত্যা করা হয়। আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয় বনগ্রাম ও বৈন্যা গ্রামের বহু ঘরবাড়ি। পরবর্তীতে চৌহালী উপজেলার বৈন্যা গ্রামের গণহত্যায় নিহতদের বৈন্যা গ্রামের গণকবরে দাফন করা হয়। ২০১৭ সালে গণহত্যা অনুসন্ধান কমিটি সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ১৪ জন শহীদের নাম ঠিকানা উদ্ধার করেন চৌহালী উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান মওদুদ আহমেদ।
তিনি গণমাধ্যমকর্মীর প্রতিবেদনের আলোকে মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়দের হযোগিতায় বন্যা গ্রামের গণকবরে ১৪জন শহীদের নাম ফলক স্থাপন করা হয়।
এ ১৪ শহীদ হলেন, বৈন্যা গ্রামের মৃত ওসমান গণির ছেলে হারুন অর রশিদ, একই গ্রামের কুজতর আলী, সোনাউল্লাহ. আব্দুল লতিফ, তৈয়মুদ্দিন মুন্সী,আব্দুল মিয়া, আব্দুস সামাদ, মনির উদ্দীন, আব্দুল কুদ্দুস, আবু ফকির, নেরো শেখ, টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের বনগ্রাম(রসুলপুর) গ্রামের বাদশা ব্যাপারীর ছেলে শাহজাহান, আব্দুস ছাত্তার, সহবতপুর ইউনিয়নের কোকাদাইর গ্রামের গোবিন্দ পাটনির নাম জানা যায়। বাকিদের নাম পরিচয় আজও জানা যায়নি। এ হত্যাযজ্ঞের খবর পেয়ে মিত্রবাহিনী ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা যৌথ আক্রমণ চালায়। ফলে পাক হানাদারবাহিনীর সাথে যোথ বাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়। এছাড়া এ আক্রমণে পাকহানাদার বাহিনীর বেশ কয়েকজন নিহত হয়। আহত হয় অনেক পাক সেনা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পাকহানাদার বাহিনীর সদস্যরা আহত পাকসেনাদের নিয়ে ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওইদিন থেকে মূলত চৌহালী থানা হানাদার মুক্ত হয়। এ গণহত্যায় নিহত শহীদ ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আজও অবহেলিতই রয়ে গেছে।
শহীদ শাহজাহানের স্ত্রী ফিরোজা বেগম মুত্যুর আগে রাষ্ট্রীয় ভাবে তার স্বামীর শহীদ মর্যাদা দেখে যেতে চান। কান্না জনিত কণ্ঠ তিনি বলেন, ১৯৭১সালের ২৫ অক্টোবর পাকহানাদারদের হাতে নির্মম ভাবে হত্যার শিকার হন। লাশ আমরা পাইনি। পরে জানতে পারি বৈন্যা গণকবরে তাকে দাফন করা হয়েছে। স্বামীকে হারিয়ে অনেক কষ্টে দুই সন্তানকে মানুষ করেছি। মৃত্যুর আগে স্বামীর শহীদ মর্যাদা দেখে যেতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা। তার কাছে আমার স্বামীসহ বৈন্যা গ্রামের গণকবরের সকল শহীদদের শহীদ মর্যাদা প্রদানের জোর দাবী করছি।
শহীদ নেরো সেকের স্ত্রী মোছাঃ সোহাগী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকহানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে আমার স্বামী সহ ২৫-৩০ জন আমার বাবার বাড়িতে একত্র হয়ে পাকসেনাদের প্রতিহত করার আলোচনা চলা সময়ে ফাাঁকা বাড়ি গেরাও করে এবং ঘর থেকে বের করে লাইনে দারকরিয়ে গুলি করে হত্যা করে এবং মহিলারা ইজ্জত বাাঁচাতে পারেনি। এসময় আমার স্বামী ও পিতাকে প্রানভিক্কা চেয়েছিলাম প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে সামনে ধরে, ওরা ক্ষমা করেনি। আমি এখনও ভিক্কা করে সংসার চালিয়ে আসছি। সরকার আজ পর্যন্ত শহীদের মর্যাদা ও স্বকৃীতি দেয়নি। আমাদের দাবি শহীদের মর্যাদা নিয়ে কবরে যেচে চাই। শহীদ সামাদ এর স্ত্রী রোজিনা স্বামীর স্বকৃীতির জন্য আজও তাকিয়ে আছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকে।
শহীদ হারুন অর রশিদের ছেলে রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা শিশু কালে বাবা হারা হয়ে অবহেলা আর অনাদরে বড় হয়েছি। আমার মা অনেক কষ্ট করে আমাদের মানুষ করেছে। সন্তান হিসাবে আমাদের প্রাপ্য মর্যাদা পেলেই আমরা খুশি। শহীদ আব্দুল সরকারের শিশু সন্তান গুলি বৃদ্ধ আঃ রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আকুল আবেদন, আমার বাবাসহ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোষোরদের হাতে গণহত্যায় নিহত সকল শহীদদের অবিলম্বে রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদ মর্যাদা প্রদানের জোর দাবি করছি।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ওয়ারেন্ট অফিসার আফতাব উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধান করেছি। বঙ্গবন্ধু আমাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সনদ দিয়ে সম্মানিত করেছে। আমরা আমাদের প্রাপ্য মর্যাদা পেয়েছি। এখন আমার দাবি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যায় নিহতদের রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদ মর্যাদা প্রদানের দাবী জানাচ্ছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল আলম বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। অথচ মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যায় নিহদের এখনও রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদ মর্যাদা দেয়া হয়নি। এ সব শহীদদের পরিবার আজও অবহেলিত। তাদের অনেকেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎনায় ধুকে ধুকে মরছে। অনেকের ঘরে খাবার নেই। তারা অন্যের দ্বারে দ্বারে চেয়ে চিন্তে জীবন ধারণ করছে। অবিলম্বে তাদের প্রাপ্য মর্যাদা দেয়া হোক। খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন কমান্ডার মো,খুরচু মিয়া বলেন, এ বিষয়ে আমরা প্রধানমসবত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজারুর রহমান বলেন,বন্যা গ্রামের যুদ্ধে আমার বড় ভাইসহ আমাদের পরিবারের ৭জন নিহত হয়, তারা আজও সেই দৃশ্য বুলতে পারেনি। সকল নিহতদের সাথে ওই ৭জনকেও বৈন্যা গ্রামের ওই গণকবরে সমাহিত করা হয়। গণকবরে স্থাপিত স্মৃতি ফলকে তাদের নাম থাকলেও রাষ্ট্রীয় ভাবে তাদের শহীদ মর্যাদা না দেয়ায় আমরা মর্মাহত। আমরা বৈন্যা গণকবরের সকল শহীদদের রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদ মর্যাদা দেয়ার জোর দাবী যানাচ্ছি।
মাহমুদুল হাসান, চৌহালী (সিরাজগঞ্জ)
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 12:09 PM
১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর মহান মুক্তিযুদ্ধকালে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের বৈন্যা গ্রামে পাকহানাদার বাহিনীর নৃশংশ গণহত্যায় নিহতদের শহীদের মর্যাদা মেলেনি স্বাধীনতার ৫২ বছরেও।
ডিজিটাল যুগে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সময়ে চৌহালীতে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে গণহত্যায় শহীদের সর্বচ্চ মর্যাদার দাবি জানায় উন্নত বাংলাদেশ ও স্মার্ট যুগের মানুষ। ফলে যাদের আত্নত্যাগের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে সেই সব নিহতের পরিবারের সদস্যরা আজও অবহেলিত। প্রতিটা ক্ষেত্রে অবহেলা আর অবজ্ঞায় তারা বঞ্চিত ও লাঞ্ছিত হচ্ছে। অথচ তাদের সর্বচ্চ মর্যাদা পাওয়া উচিত ছিল। এমনি বঞ্চনার স্বীকার শহীদ শাহজাহানের স্ত্রী ফিরোজা বেগম, শহীদ নেরু সেকের স্ত্রী সোহাগি, শহীদ সামাদএর স্ত্রী রোজিনাসহ সকল শহীদ পরিবার ।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের বনগ্রাম (রসুলপুর) ও সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের বৈন্যা গ্রামের দুলাল সরকারের ফাঁকা বাড়িতে অর্ধশত নিরিহ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধা সমবেত হয়। রাজাকারদের গোপন সংবাদ পেয়ে পাক হানাদার বাহিনী নাগরপুর থেকে বনগ্রাম (রসুলপুর) এবং চৌহালীর বৈন্যা গ্রামে পৃথক দু‘টি অভিযান চালিয়ে শতাধিক বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এ আগুনে পুড়ে বেশ কিছু গবাদিপশুও মারা যায়। এছাড়া পাকবাহিনী ৭৫/৮০জন নিরিহ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাকে নৃশংশ ভাবে হত্যা করে। এর মধ্যে চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের বড় ভাই হারুন অর রশিদ, ভগ্নিপতি শাহজাহানসহ একই পরিবারের ৭ সদস্যকে নির্বাচনের হত্যা করা হয়। আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয় বনগ্রাম ও বৈন্যা গ্রামের বহু ঘরবাড়ি। পরবর্তীতে চৌহালী উপজেলার বৈন্যা গ্রামের গণহত্যায় নিহতদের বৈন্যা গ্রামের গণকবরে দাফন করা হয়। ২০১৭ সালে গণহত্যা অনুসন্ধান কমিটি সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ১৪ জন শহীদের নাম ঠিকানা উদ্ধার করেন চৌহালী উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান মওদুদ আহমেদ।
তিনি গণমাধ্যমকর্মীর প্রতিবেদনের আলোকে মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়দের হযোগিতায় বন্যা গ্রামের গণকবরে ১৪জন শহীদের নাম ফলক স্থাপন করা হয়।
এ ১৪ শহীদ হলেন, বৈন্যা গ্রামের মৃত ওসমান গণির ছেলে হারুন অর রশিদ, একই গ্রামের কুজতর আলী, সোনাউল্লাহ. আব্দুল লতিফ, তৈয়মুদ্দিন মুন্সী,আব্দুল মিয়া, আব্দুস সামাদ, মনির উদ্দীন, আব্দুল কুদ্দুস, আবু ফকির, নেরো শেখ, টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের বনগ্রাম(রসুলপুর) গ্রামের বাদশা ব্যাপারীর ছেলে শাহজাহান, আব্দুস ছাত্তার, সহবতপুর ইউনিয়নের কোকাদাইর গ্রামের গোবিন্দ পাটনির নাম জানা যায়। বাকিদের নাম পরিচয় আজও জানা যায়নি। এ হত্যাযজ্ঞের খবর পেয়ে মিত্রবাহিনী ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা যৌথ আক্রমণ চালায়। ফলে পাক হানাদারবাহিনীর সাথে যোথ বাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়। এছাড়া এ আক্রমণে পাকহানাদার বাহিনীর বেশ কয়েকজন নিহত হয়। আহত হয় অনেক পাক সেনা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পাকহানাদার বাহিনীর সদস্যরা আহত পাকসেনাদের নিয়ে ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওইদিন থেকে মূলত চৌহালী থানা হানাদার মুক্ত হয়। এ গণহত্যায় নিহত শহীদ ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আজও অবহেলিতই রয়ে গেছে।
শহীদ শাহজাহানের স্ত্রী ফিরোজা বেগম মুত্যুর আগে রাষ্ট্রীয় ভাবে তার স্বামীর শহীদ মর্যাদা দেখে যেতে চান। কান্না জনিত কণ্ঠ তিনি বলেন, ১৯৭১সালের ২৫ অক্টোবর পাকহানাদারদের হাতে নির্মম ভাবে হত্যার শিকার হন। লাশ আমরা পাইনি। পরে জানতে পারি বৈন্যা গণকবরে তাকে দাফন করা হয়েছে। স্বামীকে হারিয়ে অনেক কষ্টে দুই সন্তানকে মানুষ করেছি। মৃত্যুর আগে স্বামীর শহীদ মর্যাদা দেখে যেতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা। তার কাছে আমার স্বামীসহ বৈন্যা গ্রামের গণকবরের সকল শহীদদের শহীদ মর্যাদা প্রদানের জোর দাবী করছি।
শহীদ নেরো সেকের স্ত্রী মোছাঃ সোহাগী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকহানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে আমার স্বামী সহ ২৫-৩০ জন আমার বাবার বাড়িতে একত্র হয়ে পাকসেনাদের প্রতিহত করার আলোচনা চলা সময়ে ফাাঁকা বাড়ি গেরাও করে এবং ঘর থেকে বের করে লাইনে দারকরিয়ে গুলি করে হত্যা করে এবং মহিলারা ইজ্জত বাাঁচাতে পারেনি। এসময় আমার স্বামী ও পিতাকে প্রানভিক্কা চেয়েছিলাম প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে সামনে ধরে, ওরা ক্ষমা করেনি। আমি এখনও ভিক্কা করে সংসার চালিয়ে আসছি। সরকার আজ পর্যন্ত শহীদের মর্যাদা ও স্বকৃীতি দেয়নি। আমাদের দাবি শহীদের মর্যাদা নিয়ে কবরে যেচে চাই। শহীদ সামাদ এর স্ত্রী রোজিনা স্বামীর স্বকৃীতির জন্য আজও তাকিয়ে আছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকে।
শহীদ হারুন অর রশিদের ছেলে রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা শিশু কালে বাবা হারা হয়ে অবহেলা আর অনাদরে বড় হয়েছি। আমার মা অনেক কষ্ট করে আমাদের মানুষ করেছে। সন্তান হিসাবে আমাদের প্রাপ্য মর্যাদা পেলেই আমরা খুশি। শহীদ আব্দুল সরকারের শিশু সন্তান গুলি বৃদ্ধ আঃ রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আকুল আবেদন, আমার বাবাসহ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোষোরদের হাতে গণহত্যায় নিহত সকল শহীদদের অবিলম্বে রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদ মর্যাদা প্রদানের জোর দাবি করছি।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ওয়ারেন্ট অফিসার আফতাব উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধান করেছি। বঙ্গবন্ধু আমাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সনদ দিয়ে সম্মানিত করেছে। আমরা আমাদের প্রাপ্য মর্যাদা পেয়েছি। এখন আমার দাবি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যায় নিহতদের রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদ মর্যাদা প্রদানের দাবী জানাচ্ছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল আলম বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। অথচ মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যায় নিহদের এখনও রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদ মর্যাদা দেয়া হয়নি। এ সব শহীদদের পরিবার আজও অবহেলিত। তাদের অনেকেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎনায় ধুকে ধুকে মরছে। অনেকের ঘরে খাবার নেই। তারা অন্যের দ্বারে দ্বারে চেয়ে চিন্তে জীবন ধারণ করছে। অবিলম্বে তাদের প্রাপ্য মর্যাদা দেয়া হোক। খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন কমান্ডার মো,খুরচু মিয়া বলেন, এ বিষয়ে আমরা প্রধানমসবত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজারুর রহমান বলেন,বন্যা গ্রামের যুদ্ধে আমার বড় ভাইসহ আমাদের পরিবারের ৭জন নিহত হয়, তারা আজও সেই দৃশ্য বুলতে পারেনি। সকল নিহতদের সাথে ওই ৭জনকেও বৈন্যা গ্রামের ওই গণকবরে সমাহিত করা হয়। গণকবরে স্থাপিত স্মৃতি ফলকে তাদের নাম থাকলেও রাষ্ট্রীয় ভাবে তাদের শহীদ মর্যাদা না দেয়ায় আমরা মর্মাহত। আমরা বৈন্যা গণকবরের সকল শহীদদের রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদ মর্যাদা দেয়ার জোর দাবী যানাচ্ছি।