প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের এজেন্ডা বিনিয়োগ ও রোহিঙ্গা

#
news image

আসন্ন ২৯ ও ৩০ নভেম্বর জাপান সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে মেগা প্রকল্পে ‘বিনিয়োগ ও অর্থায়নের’ মাধ্যমে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে জাপানের ‘শক্তিশালী সম্পৃক্ততা’ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাপানের সক্রিয় ভৃমিকা চাওয়া হবে এই সফরে।

শেখ হাসিনার জাপান সফর সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন রবিবার (২৩ অক্টোবর) বলেন, “জাপান যেসব এলাকায় কাজ করছে (মেগা প্রকল্প) সেগুলো দেখে আমরা খুশি। জাপান বাংলাদেশের জন্য একটি ‘ভাল বিনিয়োগকারী’ এবং তারা বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ জাপানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য আরও অর্থায়ন প্রত্যাশা করে।”

ড.মোমেন বলেন, “মূলত জাপান অর্থায়নে সক্ষম এবং তারা সবসময় কঠিন শর্ত ছাড়াই অর্থায়ন করে। তাদের প্রযুক্তিও আছে।” তিনি বলেন, “হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এইচএসআইএ) তৃতীয় টার্মিনালের ব্যবস্থাপনায় জাপান ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশ আগ্রহী। আমরা (সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য) দেখব এবং মূল্যায়ন করব।”

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জাপানও বন্দর সুবিধা প্রদান ও ব্যবস্থাপনায় আগ্রহী। আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি।”

দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর জন্য বাংলাদেশ অর্থায়ন খুঁজবে কি-না জানতে চাইলে, ড. মোমেন বলেন, “এটা একটা সমস্যা হতে পারে, তবে এটা নির্ভর করে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের সিদ্ধান্তের ওপর।” তিনি বলেন, “ভূগর্ভস্থ রেল প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন ও প্রযুক্তি চাই। এটাও একটা সমস্যা হতে পারে। এর সবই আলোচনায় আছে। এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।”

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপানের ‘সরাসরি ভূমিকা’ চাইবে। কারণ তাদের প্রত্যাবাসন এখনও শুরু হয়নি।”

এদিকে, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের শুরু দেখতে চান এবং তার দেশ এ লক্ষ্যে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জাপান বাংলাদেশের কাছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি করতে আগ্রহী। তবে বাংলাদেশের সাধারণ নীতি হচ্ছে আগে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা।” তিনি বলেন, “আমরা প্রথমে আমাদের জনগণকে খাওয়াতে চাই, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা দিতে চাই। তারপর, আমরা অন্যান্য বিষয়গুলো দেখব।”

জাপান বাংলাদেশকে একটি ‘দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি’ এবং একটি ‘আকর্ষণীয়’ বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে মনে করে। একটি ‘মুক্ত ও উন্মুক্ত প্রশান্ত ভারত’ বাস্তবায়নে জাপান বাংলাদেশকে ‘গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার’ হিসাবে দেখে।

ড. মোমেন বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে ভারতীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল কোনো ধরনের ‘অবরোধ ছাড়াই সকলের জন্য ‘মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং চলাচলযোগ্য’ হওয়া উচিত।”

বাংলাদেশে মেট্রোরেলের আংশিক উদ্বোধনের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা-কে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি-না জানতে চাইলে, মোমেন বলেন, তারা বিষয়টি দেখবেন।

২০১৪ সালের মে মাসে জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টোকিওতে শীর্ষ বৈঠক করেন এবং তারা যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ-জাপান ব্যাপক অংশীদারিত্ব’ চালু করেন। একই বছরের সেপ্টেম্বরে শিনজো আবে ঢাকায় শেখ হাসিনার সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সম্প্রতি জাপান সফর করেন এবং টোকিওতে অনুষ্ঠিত শিনজো আবের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দান করে। বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।

 

অনলাইন ডেস্ক

২৫ অক্টোবর, ২০২২,  11:34 PM

news image

আসন্ন ২৯ ও ৩০ নভেম্বর জাপান সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে মেগা প্রকল্পে ‘বিনিয়োগ ও অর্থায়নের’ মাধ্যমে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে জাপানের ‘শক্তিশালী সম্পৃক্ততা’ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাপানের সক্রিয় ভৃমিকা চাওয়া হবে এই সফরে।

শেখ হাসিনার জাপান সফর সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন রবিবার (২৩ অক্টোবর) বলেন, “জাপান যেসব এলাকায় কাজ করছে (মেগা প্রকল্প) সেগুলো দেখে আমরা খুশি। জাপান বাংলাদেশের জন্য একটি ‘ভাল বিনিয়োগকারী’ এবং তারা বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ জাপানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য আরও অর্থায়ন প্রত্যাশা করে।”

ড.মোমেন বলেন, “মূলত জাপান অর্থায়নে সক্ষম এবং তারা সবসময় কঠিন শর্ত ছাড়াই অর্থায়ন করে। তাদের প্রযুক্তিও আছে।” তিনি বলেন, “হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এইচএসআইএ) তৃতীয় টার্মিনালের ব্যবস্থাপনায় জাপান ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশ আগ্রহী। আমরা (সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য) দেখব এবং মূল্যায়ন করব।”

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জাপানও বন্দর সুবিধা প্রদান ও ব্যবস্থাপনায় আগ্রহী। আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি।”

দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর জন্য বাংলাদেশ অর্থায়ন খুঁজবে কি-না জানতে চাইলে, ড. মোমেন বলেন, “এটা একটা সমস্যা হতে পারে, তবে এটা নির্ভর করে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের সিদ্ধান্তের ওপর।” তিনি বলেন, “ভূগর্ভস্থ রেল প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন ও প্রযুক্তি চাই। এটাও একটা সমস্যা হতে পারে। এর সবই আলোচনায় আছে। এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।”

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপানের ‘সরাসরি ভূমিকা’ চাইবে। কারণ তাদের প্রত্যাবাসন এখনও শুরু হয়নি।”

এদিকে, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের শুরু দেখতে চান এবং তার দেশ এ লক্ষ্যে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জাপান বাংলাদেশের কাছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি করতে আগ্রহী। তবে বাংলাদেশের সাধারণ নীতি হচ্ছে আগে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা।” তিনি বলেন, “আমরা প্রথমে আমাদের জনগণকে খাওয়াতে চাই, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা দিতে চাই। তারপর, আমরা অন্যান্য বিষয়গুলো দেখব।”

জাপান বাংলাদেশকে একটি ‘দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি’ এবং একটি ‘আকর্ষণীয়’ বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে মনে করে। একটি ‘মুক্ত ও উন্মুক্ত প্রশান্ত ভারত’ বাস্তবায়নে জাপান বাংলাদেশকে ‘গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার’ হিসাবে দেখে।

ড. মোমেন বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে ভারতীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল কোনো ধরনের ‘অবরোধ ছাড়াই সকলের জন্য ‘মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং চলাচলযোগ্য’ হওয়া উচিত।”

বাংলাদেশে মেট্রোরেলের আংশিক উদ্বোধনের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা-কে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি-না জানতে চাইলে, মোমেন বলেন, তারা বিষয়টি দেখবেন।

২০১৪ সালের মে মাসে জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টোকিওতে শীর্ষ বৈঠক করেন এবং তারা যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ-জাপান ব্যাপক অংশীদারিত্ব’ চালু করেন। একই বছরের সেপ্টেম্বরে শিনজো আবে ঢাকায় শেখ হাসিনার সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সম্প্রতি জাপান সফর করেন এবং টোকিওতে অনুষ্ঠিত শিনজো আবের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দান করে। বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।