হোঁচটের শংকায় এভিয়েশন খাত ১৬ মাসে ১৪ দফায় বেড়েছে জেট ফুয়েলের দাম

জাহিদ হোসেন বিপ্লব
১৯ মে, ২০২২, 8:13 PM

হোঁচটের শংকায় এভিয়েশন খাত ১৬ মাসে ১৪ দফায় বেড়েছে জেট ফুয়েলের দাম
গত রবিবার (১৫ই মে) আর এক দফা বাড়ানো হয়েছে জেট ফুয়েলের দাম যা বাংলাদেশ থেকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইটে ক্রমবর্ধমান যাত্রী বৃদ্ধির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা ।
এ নিয়ে গত ১৬ মাসে ১৪ দফা বৃদ্ধি পেল জেট ফুয়েলের দাম এবং সর্বশেষ নির্ধারিত দাম গত মঙ্গলবার রাতে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)।
সর্বশেষ অভ্যন্তরীণ রুটে জেট ফুয়েলের দাম লিটারে ৬ টাকা বাড়িয়ে ১০৬ টাকা করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে লিটার প্রতি ৪০ সেন্ট বাড়িয়ে ১.০৯ মার্কিন ডলার কর হয়েছে। বিপিসি'র আওতাধীন পদ্মা অয়েল কোম্পানি ইতিমধ্যেই বাস্তবায়ন করেছে এই বর্ধিত দাম ।
এদিকে, বিশ্বব্যাপি করোনা মহামারির কারনে ধুকতে থাকা বিমান শিল্প আবার যখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে তখন ঘন ঘন দাম বৃদ্ধি খুবই সম্ভাবনাময় এই এভিয়েশন খাতকে ঠেলে দিবে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।
তারা বলেন, বিদেশি উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো কম দামে জেট ফুয়েল পাওয়ায় স্থানীয় উড়োজাহাজ খাতকে বিশ্ব বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
একটি এয়ারলাইন্সের ৪০ শতাংশ পরিচালন ব্যয় হয় জেট ফুয়েলে। এই জ্বালানির দাম যত বেশি হয় উড়োজাহাজ পরিচালনা ব্যয় তত বৃদ্ধি পায়। যেসব দেশ কম দামে তেল কিনছে, তাদের পরিচালন ব্যয় কম হচ্ছে, যাত্রীদের জন্য তারা কম দামে টিকিট দিচ্ছে।
আর বাংলাদেশে জেট ফুয়েলের অতিরিক্ত দামের প্রভাবে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব দিন দিন কমতে থাকে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন বাজারের প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়বে বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলো।
এমনকি রিজেন্ট, জিএমজি এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনেও নিজেদের অতিরিক্ত পরিচালন ব্যয়ের কথা উল্লেখ করেছেন তারা।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১৬ মাসে মোট ১৪ দফায় দাম বাড়ানো হয় জেট ফুয়েলের। এর মধ্যে অভ্যন্তরিন রুটে প্রথম দফায় বাড়িয়ে করা হয় ৫৫ টাকা, মার্চে ৬০ টাকা, এপ্রিলে ৬১ টাকা। তবে মে মাসে লিটারে ১ টাকা দাম কমানো হয়েছিল। জুনে প্রতি লিটারে ৩ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৬৩, জুলাইয়ে ৬৬, আগস্টে ৬৭ টাকা, অক্টোবরে দাঁড়ায় ৭০ টাকা এবং নভেম্বরে ৭৭ টাকা করা হয়। সর্বশেষ এ বছর এপ্রিলে দাম ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যদিও ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বিপিসি দুই দফায় ৪ টাকা কমিয়েছিল জেট ফুয়েলের দাম।
একইভাবে আন্তর্জাতিক রুটের ১৪ দফা বৃদ্ধির মধ্যে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি লিটার ৫০ সেন্ট (৪২ টাকা), মার্চে ৫৫ সেন্ট (৪৬.৭৫ টাকা), মে মাসে ৫৬ (৪৭.৬ টাকা) সেন্ট, জুনে ৫৯ সেন্ট (৫০.১৬ টাকা), জুলাইয়ে ৬২ সেন্ট (৫২.৭ টাকা), আগস্টে ৬৩ সেন্ট (৫৩.৫৫ টাকা), অক্টোবরে ৬৫ সেন্ট (৫৫.২৫ টাকা) এবং নভেম্বরে ৭৩ সেন্ট (৬২.০৫ টাকা)এবং সর্বশেষ ২০২২ সালের ১১ই এপ্রিল আবার দাম বৃদ্ধি করে প্রতি লিটার করা হয় ৬৯ সেন্ট (৬০.৭২ টাকা)। উল্লেখ্য, বিপিসি এই সময়ের মধ্যে একদফা কমিয়ে জেট ফুয়েলের দাম ৬৭ সেন্ট (৫৮.৯৬ টাকা) করেছিল।
এভিয়েশন অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব মফিজুর রহমান বলেন, জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধির ফলে টিকিট প্রতি ভাড়া আবার বাড়ানো হবে, ফলে আকাশপথে ভ্রমণকারীর সংখ্যা কমবে যা দেশের উড়োজাহাজ শিল্পে গুরুতর প্রভাব ফেলবে।
রিক্রুটিং এজেন্সি ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্টসের (বিএআইআরএ) নেতারা অভিযোগ করেন, বিপিসি প্রায়ই কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া অন্যান্য দেশের কথা উল্লেখ করে জেট ফুয়েলের দাম বাড়ায়।
তারা বলেন, বিভিন্ন গন্তব্যে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অযৌক্তিকভাবে বেশি বিমান ভাড়ার কারণে অভিবাসী শ্রমিকরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
রিক্রুটিং এজেন্সি ঐক্য পরিষদের সভাপতি টিপু সুলতান বলেন, জেট ফুয়েলের দাম বাড়াতে সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্তের ফলে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো এখন ভাড়া বাড়ানোর সুযোগ পাবে। যা প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য অতিরিক্ত ভোগান্তির কারণ হবে।
বিশিষ্ট এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, এয়ারলাইন্সগুলো দীর্ঘদিন ধরেই জেট ফুয়েলের দাম কমানোর কথা বলে আসছে। তবে বিপিসি কখনোই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় নি। করোনাকালে যখন বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলো নানাভাবে বিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছে, সেই সময়টাতেই প্রায় দুই বছরের মধ্যে কয়েকবার বাড়িয়েছে তেলের দাম। এতে করে আমাদের এয়ারলাইন্সগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো কম দামে নিজ দেশ থেকে কেনার ফলে তারা কম ভাড়ায় যাত্রী বহন করছে।
বিপিসির এক শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিপিসির সংশ্লিষ্ট কমিটি উচ্চ আমদানি খরচের কারণে জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি আরও বলেন, কলকাতার তুলনায় বাংলাদেশে জেট ফুয়েলের দাম কম।
অপরদিকে, পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় বিমান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস তাদের সাম্প্রতিক এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে , বিশ্বে যে হারে যাত্রী বাড়ছে বাংলাদেশে বাড়ছে তার তুলনায় অনেক বেশি। ২০১৯-২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ থেকে তিন গুণ যাত্রী পরিবহন বাড়বে। বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশে যাত্রী প্রবৃদ্ধি ৫০ শতাংশ বেশি হচ্ছে। এই প্রবৃদ্ধি সামাল দিতে ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের বিমান সংস্থাগুলোর আরো ১৬০টি উড়োজাহাজের প্রয়োজন হবে।
ইউরোপীয় বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটির জরিপে দেখা গেছে, দেশে গত সাত বছরে বাংলাদেশে বিমানযাত্রীর সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০৩৭ সালে দেশের ৮৫ শতাংশ যাত্রী ব্যবহার করবে আকাশপথ। এ কারণে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে বিমান সরবরাহে নজর দিয়েছে এয়ারবাস।
এয়ারবাসের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে এভিয়েশন খাতে যাত্রী প্রবৃদ্ধি যেখানে ৬ শতাংশ হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে গড় প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশ। ২০৪০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫.৪ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে।
জাহিদ হোসেন বিপ্লব
১৯ মে, ২০২২, 8:13 PM

গত রবিবার (১৫ই মে) আর এক দফা বাড়ানো হয়েছে জেট ফুয়েলের দাম যা বাংলাদেশ থেকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইটে ক্রমবর্ধমান যাত্রী বৃদ্ধির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা ।
এ নিয়ে গত ১৬ মাসে ১৪ দফা বৃদ্ধি পেল জেট ফুয়েলের দাম এবং সর্বশেষ নির্ধারিত দাম গত মঙ্গলবার রাতে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)।
সর্বশেষ অভ্যন্তরীণ রুটে জেট ফুয়েলের দাম লিটারে ৬ টাকা বাড়িয়ে ১০৬ টাকা করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে লিটার প্রতি ৪০ সেন্ট বাড়িয়ে ১.০৯ মার্কিন ডলার কর হয়েছে। বিপিসি'র আওতাধীন পদ্মা অয়েল কোম্পানি ইতিমধ্যেই বাস্তবায়ন করেছে এই বর্ধিত দাম ।
এদিকে, বিশ্বব্যাপি করোনা মহামারির কারনে ধুকতে থাকা বিমান শিল্প আবার যখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে তখন ঘন ঘন দাম বৃদ্ধি খুবই সম্ভাবনাময় এই এভিয়েশন খাতকে ঠেলে দিবে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।
তারা বলেন, বিদেশি উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো কম দামে জেট ফুয়েল পাওয়ায় স্থানীয় উড়োজাহাজ খাতকে বিশ্ব বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
একটি এয়ারলাইন্সের ৪০ শতাংশ পরিচালন ব্যয় হয় জেট ফুয়েলে। এই জ্বালানির দাম যত বেশি হয় উড়োজাহাজ পরিচালনা ব্যয় তত বৃদ্ধি পায়। যেসব দেশ কম দামে তেল কিনছে, তাদের পরিচালন ব্যয় কম হচ্ছে, যাত্রীদের জন্য তারা কম দামে টিকিট দিচ্ছে।
আর বাংলাদেশে জেট ফুয়েলের অতিরিক্ত দামের প্রভাবে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব দিন দিন কমতে থাকে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন বাজারের প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়বে বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলো।
এমনকি রিজেন্ট, জিএমজি এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনেও নিজেদের অতিরিক্ত পরিচালন ব্যয়ের কথা উল্লেখ করেছেন তারা।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১৬ মাসে মোট ১৪ দফায় দাম বাড়ানো হয় জেট ফুয়েলের। এর মধ্যে অভ্যন্তরিন রুটে প্রথম দফায় বাড়িয়ে করা হয় ৫৫ টাকা, মার্চে ৬০ টাকা, এপ্রিলে ৬১ টাকা। তবে মে মাসে লিটারে ১ টাকা দাম কমানো হয়েছিল। জুনে প্রতি লিটারে ৩ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৬৩, জুলাইয়ে ৬৬, আগস্টে ৬৭ টাকা, অক্টোবরে দাঁড়ায় ৭০ টাকা এবং নভেম্বরে ৭৭ টাকা করা হয়। সর্বশেষ এ বছর এপ্রিলে দাম ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যদিও ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বিপিসি দুই দফায় ৪ টাকা কমিয়েছিল জেট ফুয়েলের দাম।
একইভাবে আন্তর্জাতিক রুটের ১৪ দফা বৃদ্ধির মধ্যে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি লিটার ৫০ সেন্ট (৪২ টাকা), মার্চে ৫৫ সেন্ট (৪৬.৭৫ টাকা), মে মাসে ৫৬ (৪৭.৬ টাকা) সেন্ট, জুনে ৫৯ সেন্ট (৫০.১৬ টাকা), জুলাইয়ে ৬২ সেন্ট (৫২.৭ টাকা), আগস্টে ৬৩ সেন্ট (৫৩.৫৫ টাকা), অক্টোবরে ৬৫ সেন্ট (৫৫.২৫ টাকা) এবং নভেম্বরে ৭৩ সেন্ট (৬২.০৫ টাকা)এবং সর্বশেষ ২০২২ সালের ১১ই এপ্রিল আবার দাম বৃদ্ধি করে প্রতি লিটার করা হয় ৬৯ সেন্ট (৬০.৭২ টাকা)। উল্লেখ্য, বিপিসি এই সময়ের মধ্যে একদফা কমিয়ে জেট ফুয়েলের দাম ৬৭ সেন্ট (৫৮.৯৬ টাকা) করেছিল।
এভিয়েশন অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব মফিজুর রহমান বলেন, জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধির ফলে টিকিট প্রতি ভাড়া আবার বাড়ানো হবে, ফলে আকাশপথে ভ্রমণকারীর সংখ্যা কমবে যা দেশের উড়োজাহাজ শিল্পে গুরুতর প্রভাব ফেলবে।
রিক্রুটিং এজেন্সি ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্টসের (বিএআইআরএ) নেতারা অভিযোগ করেন, বিপিসি প্রায়ই কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া অন্যান্য দেশের কথা উল্লেখ করে জেট ফুয়েলের দাম বাড়ায়।
তারা বলেন, বিভিন্ন গন্তব্যে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অযৌক্তিকভাবে বেশি বিমান ভাড়ার কারণে অভিবাসী শ্রমিকরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
রিক্রুটিং এজেন্সি ঐক্য পরিষদের সভাপতি টিপু সুলতান বলেন, জেট ফুয়েলের দাম বাড়াতে সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্তের ফলে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো এখন ভাড়া বাড়ানোর সুযোগ পাবে। যা প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য অতিরিক্ত ভোগান্তির কারণ হবে।
বিশিষ্ট এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, এয়ারলাইন্সগুলো দীর্ঘদিন ধরেই জেট ফুয়েলের দাম কমানোর কথা বলে আসছে। তবে বিপিসি কখনোই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় নি। করোনাকালে যখন বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলো নানাভাবে বিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছে, সেই সময়টাতেই প্রায় দুই বছরের মধ্যে কয়েকবার বাড়িয়েছে তেলের দাম। এতে করে আমাদের এয়ারলাইন্সগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো কম দামে নিজ দেশ থেকে কেনার ফলে তারা কম ভাড়ায় যাত্রী বহন করছে।
বিপিসির এক শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিপিসির সংশ্লিষ্ট কমিটি উচ্চ আমদানি খরচের কারণে জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি আরও বলেন, কলকাতার তুলনায় বাংলাদেশে জেট ফুয়েলের দাম কম।
অপরদিকে, পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় বিমান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস তাদের সাম্প্রতিক এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে , বিশ্বে যে হারে যাত্রী বাড়ছে বাংলাদেশে বাড়ছে তার তুলনায় অনেক বেশি। ২০১৯-২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ থেকে তিন গুণ যাত্রী পরিবহন বাড়বে। বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশে যাত্রী প্রবৃদ্ধি ৫০ শতাংশ বেশি হচ্ছে। এই প্রবৃদ্ধি সামাল দিতে ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের বিমান সংস্থাগুলোর আরো ১৬০টি উড়োজাহাজের প্রয়োজন হবে।
ইউরোপীয় বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটির জরিপে দেখা গেছে, দেশে গত সাত বছরে বাংলাদেশে বিমানযাত্রীর সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০৩৭ সালে দেশের ৮৫ শতাংশ যাত্রী ব্যবহার করবে আকাশপথ। এ কারণে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে বিমান সরবরাহে নজর দিয়েছে এয়ারবাস।
এয়ারবাসের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে এভিয়েশন খাতে যাত্রী প্রবৃদ্ধি যেখানে ৬ শতাংশ হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে গড় প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশ। ২০৪০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫.৪ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে।