সীমান্তে অস্থিরতা কূটনৈতিক সমাধানের পথে বাংলাদেশ

এসএম শামসুজ্জোহা
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 11:50 PM

সীমান্তে অস্থিরতা কূটনৈতিক সমাধানের পথে বাংলাদেশ
মিয়ানমারের উসকানি যেন থামছেই না। গতকালও কক্সবাজারের উখিয়ার পার্শ¦বর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের ঘুমধুম-তুমব্রæ সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। দুইদেশের সীমান্ত সংলগ্নে এ অস্থিরতায় রাখাইনে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘাতের ধারাবাহিকতায়ই এমন ঘটনা ঘটে চলেছে বলে কার্যত বলা হচ্ছে। তবে সব কিছু মাথায় রেখেই সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রেখেছে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক এ পরিস্থিতির কারণে বান্দরবানসহ মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে বরাবরই এ ধরনের অস্থিরতার ক‚টনৈতিক সমাধানের কথা বলছে বাংলাদেশ।
এদিকে মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গিয়েন লুইস শনিবার বিকালে সংবাদমাধ্যম বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল এসে বাংলাদেশে পড়ায় এক ব্যক্তি নিহত ও কয়েকজন আহত হওয়ার খবরে বাংলাদেশে জতিসংঘের কার্যালয় উদ্বিগ্ন।’ তিনি বলেন ‘বেসামরিক ব্যক্তিদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। জাতিসংঘ প্রতিনিয়তি পর্যবেক্ষণ করছে, মিয়ানমারের মিশনের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’ উত্তেজনা বা হতাহত এড়াতে জাতিসংঘ সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহŸান জানিয়েছে।
অন্যদিকে সীমান্তে যে ঘটনা ঘটছে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় এ বিষয়ে সতর্ক করে মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসময় তার কাছে একটি প্রতিবাদলিপি হস্তান্তর করা হয়। এ মুহূর্তে সীমান্তে সেনা মোতায়েন নিয়ে কিছু ভাবছে না সরকার। গত আগস্ট মাস থেকে এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো তলব করা হলো মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব এবং দেশের এজেন্সিগুলোকে নিয়ে বৈঠকের পর বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম। মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত জবাবে কী বলেছে জানতে তিনি বলেন, ‘তিনি বলেছেন উচ্চপর্যায়ে জানাবেন যাতে করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়’।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাগুলির বিষয়ে দেশের সংশ্লিষ্ট সব এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে সরকার। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিবের কাছে জানতে চান সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে সেনা মোতায়েনের কথা ভাবছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সীমান্তে সেনা মোতায়েন নিয়ে কিছু ভাবছে না সরকার।
খুরশেদ আলম বলেন, রোববার একটি উচ্চ পর্যায়ের মিটিং করেছি সবাইকে নিয়ে। বাংলাদেশের যত এজেন্সি আছে, তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। আমরা বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে বলে দিয়েছি, বর্ডারে সজাগ থাকতে। রি-এনফোর্সমেন্ট যেখানে যতটুকু লাগে, করবে। সাগর দিয়ে বা অন্য জায়গা দিয়ে কোনো রোহিঙ্গা যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করেছি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল এবং শান্তিকামী রাষ্ট্র। আমরা ধৈর্য ধরে এটি সহ্য করে যাচ্ছি। আমরা তাদের বলেছি বিষয়টি সমাধান করুন, আমাদের এখানে যেন কোনও প্রাণহানি না হয়’। বারবার প্রতিবাদলিপি দেওয়া হলেও কিছু হচ্ছে না এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই। একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিবেশীকে যতটুকু করা সম্ভব, ততটুকু আমরা করছি। আমাদের বক্তব্যে কোনও ধরনের দুর্বলতা নেই’।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, ‘আসিয়ান রাষ্ট্রদূতদের এ বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে করে আমরা তাদের বলতে পারি যে আমরা বারবার বলার পরেও মিয়ানমার কোনও ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ভবিষ্যতে মিয়ানমারকে কিভাবে এধরনের কর্মকান্ড থেকে দূরে রাখা যায় সেই চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি’।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, মর্টার শেল ও গোলার বিকট শব্দে কাঁপছে এপারের ভ‚খন্ড। এতে এপারের ঘুমধুম ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আচারতলী, ঘুমধুুম ইউনিয়নের জলপাইতলী, তুমব্রæ, বাইশপাড়ি, মগপাড়া, রেজু গর্জনবুনিয়া, বরইতলী, ফাত্তারঝিরি, উত্তরপাড়া, কোনারপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও হিন্দুপাড়া গ্রামের মানুষের দিনরাত কাটছে ভয়ের মধ্যে। এরই মধ্যেই সীমান্তের কাছাকাছি এসব এলাকার মর্টার শেল বিস্ফোরণের পর থেকে আতঙ্কে থাকা ৩৫টি পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বেতবুনিয়া হেডম্যানপাড়া এলাকার নূর হোসেনের স্ত্রী খুরশীদ বেগম প্রভাতী খবরকে বলেন, সীমান্তে গুলির শব্দে রাতে একদম ঘুমাতে পারিনি। ছোট ছেলেমেয়েরা কান্না করছে। ফকিরাঘোনা এলাকার বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, ওপারে কী হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে ঘুমধুম ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দীল মোহাম্মদ ভুট্টু বলেন, তিন দিন ধরে সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ ছিল। গতকাল ভোর সাড়ে ৫টা থেকে মিয়ানমারে গোলাগুলি হচ্ছে। গুলির বিকট শব্দ এপারে ভেসে আসছে। গোলাগুলি শুরু হওয়ায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আশ্রয় শিবিরের কাছাকাছি গোলাগুলি হওয়ায় আতঙ্ক বেশি। এ পরিস্থিতিতে অনেকে আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গ গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বান্দরবানের ঘুমধুম ঘোনারপাড়া সীমান্তে শূন্যরেখায় মিয়ানমারের মর্টারের গোলা এসে বিস্ফোরণ হয়। এতে মোহাম্মদ ইকবাল (২৮) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত আটজন। এর আগে সবশেষ ৪ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মাইনুল কবির একই ঘটনায় রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে তলব করে প্রতিবাদপত্র দেন। গত ২০ ও ২৮ আগস্টও মিয়ানমার থেকে মর্টারের গোলা বাংলাদেশ সীমানায় এসে পড়ে। সে কারণে ২১ ও ২৯ আগস্ট মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানায় ঢাকা।
এসএম শামসুজ্জোহা
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 11:50 PM

মিয়ানমারের উসকানি যেন থামছেই না। গতকালও কক্সবাজারের উখিয়ার পার্শ¦বর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের ঘুমধুম-তুমব্রæ সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। দুইদেশের সীমান্ত সংলগ্নে এ অস্থিরতায় রাখাইনে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘাতের ধারাবাহিকতায়ই এমন ঘটনা ঘটে চলেছে বলে কার্যত বলা হচ্ছে। তবে সব কিছু মাথায় রেখেই সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রেখেছে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক এ পরিস্থিতির কারণে বান্দরবানসহ মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে বরাবরই এ ধরনের অস্থিরতার ক‚টনৈতিক সমাধানের কথা বলছে বাংলাদেশ।
এদিকে মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গিয়েন লুইস শনিবার বিকালে সংবাদমাধ্যম বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল এসে বাংলাদেশে পড়ায় এক ব্যক্তি নিহত ও কয়েকজন আহত হওয়ার খবরে বাংলাদেশে জতিসংঘের কার্যালয় উদ্বিগ্ন।’ তিনি বলেন ‘বেসামরিক ব্যক্তিদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। জাতিসংঘ প্রতিনিয়তি পর্যবেক্ষণ করছে, মিয়ানমারের মিশনের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’ উত্তেজনা বা হতাহত এড়াতে জাতিসংঘ সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহŸান জানিয়েছে।
অন্যদিকে সীমান্তে যে ঘটনা ঘটছে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় এ বিষয়ে সতর্ক করে মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসময় তার কাছে একটি প্রতিবাদলিপি হস্তান্তর করা হয়। এ মুহূর্তে সীমান্তে সেনা মোতায়েন নিয়ে কিছু ভাবছে না সরকার। গত আগস্ট মাস থেকে এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো তলব করা হলো মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব এবং দেশের এজেন্সিগুলোকে নিয়ে বৈঠকের পর বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম। মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত জবাবে কী বলেছে জানতে তিনি বলেন, ‘তিনি বলেছেন উচ্চপর্যায়ে জানাবেন যাতে করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়’।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাগুলির বিষয়ে দেশের সংশ্লিষ্ট সব এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে সরকার। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিবের কাছে জানতে চান সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে সেনা মোতায়েনের কথা ভাবছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সীমান্তে সেনা মোতায়েন নিয়ে কিছু ভাবছে না সরকার।
খুরশেদ আলম বলেন, রোববার একটি উচ্চ পর্যায়ের মিটিং করেছি সবাইকে নিয়ে। বাংলাদেশের যত এজেন্সি আছে, তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। আমরা বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে বলে দিয়েছি, বর্ডারে সজাগ থাকতে। রি-এনফোর্সমেন্ট যেখানে যতটুকু লাগে, করবে। সাগর দিয়ে বা অন্য জায়গা দিয়ে কোনো রোহিঙ্গা যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করেছি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল এবং শান্তিকামী রাষ্ট্র। আমরা ধৈর্য ধরে এটি সহ্য করে যাচ্ছি। আমরা তাদের বলেছি বিষয়টি সমাধান করুন, আমাদের এখানে যেন কোনও প্রাণহানি না হয়’। বারবার প্রতিবাদলিপি দেওয়া হলেও কিছু হচ্ছে না এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই। একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিবেশীকে যতটুকু করা সম্ভব, ততটুকু আমরা করছি। আমাদের বক্তব্যে কোনও ধরনের দুর্বলতা নেই’।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, ‘আসিয়ান রাষ্ট্রদূতদের এ বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে করে আমরা তাদের বলতে পারি যে আমরা বারবার বলার পরেও মিয়ানমার কোনও ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ভবিষ্যতে মিয়ানমারকে কিভাবে এধরনের কর্মকান্ড থেকে দূরে রাখা যায় সেই চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি’।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, মর্টার শেল ও গোলার বিকট শব্দে কাঁপছে এপারের ভ‚খন্ড। এতে এপারের ঘুমধুম ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আচারতলী, ঘুমধুুম ইউনিয়নের জলপাইতলী, তুমব্রæ, বাইশপাড়ি, মগপাড়া, রেজু গর্জনবুনিয়া, বরইতলী, ফাত্তারঝিরি, উত্তরপাড়া, কোনারপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও হিন্দুপাড়া গ্রামের মানুষের দিনরাত কাটছে ভয়ের মধ্যে। এরই মধ্যেই সীমান্তের কাছাকাছি এসব এলাকার মর্টার শেল বিস্ফোরণের পর থেকে আতঙ্কে থাকা ৩৫টি পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বেতবুনিয়া হেডম্যানপাড়া এলাকার নূর হোসেনের স্ত্রী খুরশীদ বেগম প্রভাতী খবরকে বলেন, সীমান্তে গুলির শব্দে রাতে একদম ঘুমাতে পারিনি। ছোট ছেলেমেয়েরা কান্না করছে। ফকিরাঘোনা এলাকার বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, ওপারে কী হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে ঘুমধুম ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দীল মোহাম্মদ ভুট্টু বলেন, তিন দিন ধরে সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ ছিল। গতকাল ভোর সাড়ে ৫টা থেকে মিয়ানমারে গোলাগুলি হচ্ছে। গুলির বিকট শব্দ এপারে ভেসে আসছে। গোলাগুলি শুরু হওয়ায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আশ্রয় শিবিরের কাছাকাছি গোলাগুলি হওয়ায় আতঙ্ক বেশি। এ পরিস্থিতিতে অনেকে আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গ গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বান্দরবানের ঘুমধুম ঘোনারপাড়া সীমান্তে শূন্যরেখায় মিয়ানমারের মর্টারের গোলা এসে বিস্ফোরণ হয়। এতে মোহাম্মদ ইকবাল (২৮) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত আটজন। এর আগে সবশেষ ৪ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মাইনুল কবির একই ঘটনায় রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে তলব করে প্রতিবাদপত্র দেন। গত ২০ ও ২৮ আগস্টও মিয়ানমার থেকে মর্টারের গোলা বাংলাদেশ সীমানায় এসে পড়ে। সে কারণে ২১ ও ২৯ আগস্ট মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানায় ঢাকা।