‘হায় হায় পার্টি হায় হায় করতেই থাকুক, দেশ এগিয়ে যাক’

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ জুলাই, ২০২২, 8:44 PM

‘হায় হায় পার্টি হায় হায় করতেই থাকুক, দেশ এগিয়ে যাক’
সরকারের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা নাই নাই, গেলো গেলো, হায় হায় করে বেড়াচ্ছে; এই হায় হায় পার্টি হায় হায় করতেই থাকুক। মাঝে মাঝে তো একটু তাদের বলতে দিতে হবে। আর আমরা আমাদের কাজ করে যাই, দেশ এগিয়ে যাক।’
রবিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২’ উদযাপন এবং ‘জাতীয় মৎস্য পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাবে, জনগণের ওপর আমাদের ভরসা আছে। জনগণ আমাদের পাশে আছে, ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশকে জাতির পিতাই তো বলে গেছেন কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। পদ্মা সেতুতে বাধা দিয়েছিল, সে বাধা অতিক্রম করে এই সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করে বিশ্বকে আমরা এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছি- বাংলাদেশ পারে, আমরাও পারি।’
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২ উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে মৎস্য প্রক্রিয়াজাতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। এই মাছে-ভাতে বাঙালি হিসেবেই যেন আমরা থাকতে পারি।’
বর্তমান প্রজন্মের কাছে মাছের কাঁটা একটা সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেকে মাছ খেতে চায় না। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত করলে এই কাঁটাও কিন্তু নরম করে ফেলা যায় এবং খাওয়া যায়। সেটা খুব বেশি কঠিন না, এমনকি ঘরেই করতে পারেন। আপনারা যদি প্রেসার কুকারে মাছ ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট সেদ্ধ করেন, মাছের কাঁটা কিন্তু নরম হয়ে যায়। মাছ মাছের মতোই থাকবে। কিন্তু কাঁটা নরম হয়ে যাবে। আপনারা সেটা বাচ্চাদেরও খাওয়াতে পারবেন। এতে কোনও অসুবিধা হয় না। এটা কিন্তু আমরা করি। একটা রেসিপিও দিয়ে দিলাম সঙ্গে; যাতে আপনাদের ঘরে কাঁটার সমস্যাটা না থাকে। বিশেষ করে ইলিশ মাছে একটু বেশি সময় লাগে, সমুদ্রের মাছ। অন্যান্য মাছ আরও কম সময়ে হয়ে যায়।’
সরকার প্রধান বলেন, আমি বলছি যেটা ওটা হলো ঘরে। কিন্তু আমরা যদি এই ধরনের ইন্ডাস্ট্রি করি, এই যে প্রেসার দিয়ে মাছের কাঁটাগুলো নরম থাকবে, মাছ যেমন আছে তেমনই থাকবে; সেভাবে যদি আমরা প্রক্রিয়াজাত করতে পারি এবং দেশে-বিদেশে রফতানি করতে পারি; পৃথিবীর বহু দেশ এই মাছ কিন্তু নেবে। মাছের বিভিন্ন পণ্য আমরা তৈরি করে রফতানি করতে পারবো।’
এতে নতুন প্রজন্মও এগিয়ে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাতে কর্মসংস্থান যেমন হবে, দেশের বেকারত্ব দূর হবে। সেই সঙ্গে দেশও রফতানিযোগ্য পণ্য পাবে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও মিটবে। সেভাবেই আমাদের দেশকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি।’
সমুদ্রসীমায় বিশেষ করে সি উড (সাগরের তলদেশীয় জলজ উদ্ভিদ) অনেক মূল্যবান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা যত বেশি উৎপাদন করতে পারবো, বিদেশে রফতানি করতে পারবো... আমাদের দেশেও চাহিদা বাড়ছে। সেই সঙ্গে ঝিনুক... একসময় আমাদের মেঘনা নদীতে পিংক পার্ল (মুক্তা) হতো। সেটাও গবেষণা আমরা করছি। কিন্তু সেটাতে খুব বেশি সাফল্য আসছে না। সে দিকটায় আরেকটু নজর দেওয়া দরকার। যদিও আমাদের খুব বড় সাইজের (মুক্তা) আসে না, আমাদের ঝিনুক অনেক ছোট। কিন্তু আমাদের রাইস পার্ল যেটা, এটারও কিন্তু অনেক মূল্য আছে। এটা আমাদের খুব ভালো একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে। কাজেই সেদিকেও একটু দৃষ্টি দেবেন।
সমুদ্র এলাকায় নেট দিয়ে চিংড়ি পোনা আহরণ বন্ধ করার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজার, কুয়াকাটাসহ সমুদ্র এলাকায় যেখানে মানুষ নেট দিয়ে দিয়ে শুধু চিংড়ির পোনা আহরণ করে; এটা বন্ধ করতে হবে। সেসব জায়গায় হ্যাচারি তৈরি করে দিতে হবে। কারণ, কক্সবাজারে হ্যাচারি ছিল না, আমরা এসে সেখানে হ্যাচারি করে দিয়েছিলাম। আমার মনে হয়, এই দিকটায় একটু বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। শুধু চিংড়ির পোনা উৎপাদন করলে হবে না। সেটা যেন স্বাস্থ্যসম্মতভাবে যেখানে চিংড়ির চাষ হয়, সেসব এলাকায় যেন পৌঁছে যেতে পারে। বিশেষ করে খুলনা, সাতক্ষীরা, খুলনা বিভাগে ভালো চিংড়ি উৎপাদন হয়। মিঠা পানিতেও আমাদের চিংড়ি যথেষ্ট হয়।’
সবাইকে মৎস্য উৎপাদনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যার যেখানে একটু জলাধার আছে, সেখানে আপনারা মাছের চাষ করেন। নিজেরাও খেতে পারবেন, (বিক্রি করলে) লাভও হবে। মাছে-ভাতে বাঙালি। এভাবেই আমাদের জীবনটা আরও উন্নত হোক, এই আকাঙ্ক্ষা আমি করি।’
অনুষ্ঠানে মৎস্য খাতে বিশেষ অবদানের জন্য সাতটি প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে স্বর্ণপদক তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ জুলাই, ২০২২, 8:44 PM

সরকারের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা নাই নাই, গেলো গেলো, হায় হায় করে বেড়াচ্ছে; এই হায় হায় পার্টি হায় হায় করতেই থাকুক। মাঝে মাঝে তো একটু তাদের বলতে দিতে হবে। আর আমরা আমাদের কাজ করে যাই, দেশ এগিয়ে যাক।’
রবিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২’ উদযাপন এবং ‘জাতীয় মৎস্য পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাবে, জনগণের ওপর আমাদের ভরসা আছে। জনগণ আমাদের পাশে আছে, ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশকে জাতির পিতাই তো বলে গেছেন কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। পদ্মা সেতুতে বাধা দিয়েছিল, সে বাধা অতিক্রম করে এই সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করে বিশ্বকে আমরা এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছি- বাংলাদেশ পারে, আমরাও পারি।’
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২ উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে মৎস্য প্রক্রিয়াজাতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। এই মাছে-ভাতে বাঙালি হিসেবেই যেন আমরা থাকতে পারি।’
বর্তমান প্রজন্মের কাছে মাছের কাঁটা একটা সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেকে মাছ খেতে চায় না। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত করলে এই কাঁটাও কিন্তু নরম করে ফেলা যায় এবং খাওয়া যায়। সেটা খুব বেশি কঠিন না, এমনকি ঘরেই করতে পারেন। আপনারা যদি প্রেসার কুকারে মাছ ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট সেদ্ধ করেন, মাছের কাঁটা কিন্তু নরম হয়ে যায়। মাছ মাছের মতোই থাকবে। কিন্তু কাঁটা নরম হয়ে যাবে। আপনারা সেটা বাচ্চাদেরও খাওয়াতে পারবেন। এতে কোনও অসুবিধা হয় না। এটা কিন্তু আমরা করি। একটা রেসিপিও দিয়ে দিলাম সঙ্গে; যাতে আপনাদের ঘরে কাঁটার সমস্যাটা না থাকে। বিশেষ করে ইলিশ মাছে একটু বেশি সময় লাগে, সমুদ্রের মাছ। অন্যান্য মাছ আরও কম সময়ে হয়ে যায়।’
সরকার প্রধান বলেন, আমি বলছি যেটা ওটা হলো ঘরে। কিন্তু আমরা যদি এই ধরনের ইন্ডাস্ট্রি করি, এই যে প্রেসার দিয়ে মাছের কাঁটাগুলো নরম থাকবে, মাছ যেমন আছে তেমনই থাকবে; সেভাবে যদি আমরা প্রক্রিয়াজাত করতে পারি এবং দেশে-বিদেশে রফতানি করতে পারি; পৃথিবীর বহু দেশ এই মাছ কিন্তু নেবে। মাছের বিভিন্ন পণ্য আমরা তৈরি করে রফতানি করতে পারবো।’
এতে নতুন প্রজন্মও এগিয়ে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাতে কর্মসংস্থান যেমন হবে, দেশের বেকারত্ব দূর হবে। সেই সঙ্গে দেশও রফতানিযোগ্য পণ্য পাবে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও মিটবে। সেভাবেই আমাদের দেশকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি।’
সমুদ্রসীমায় বিশেষ করে সি উড (সাগরের তলদেশীয় জলজ উদ্ভিদ) অনেক মূল্যবান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা যত বেশি উৎপাদন করতে পারবো, বিদেশে রফতানি করতে পারবো... আমাদের দেশেও চাহিদা বাড়ছে। সেই সঙ্গে ঝিনুক... একসময় আমাদের মেঘনা নদীতে পিংক পার্ল (মুক্তা) হতো। সেটাও গবেষণা আমরা করছি। কিন্তু সেটাতে খুব বেশি সাফল্য আসছে না। সে দিকটায় আরেকটু নজর দেওয়া দরকার। যদিও আমাদের খুব বড় সাইজের (মুক্তা) আসে না, আমাদের ঝিনুক অনেক ছোট। কিন্তু আমাদের রাইস পার্ল যেটা, এটারও কিন্তু অনেক মূল্য আছে। এটা আমাদের খুব ভালো একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে। কাজেই সেদিকেও একটু দৃষ্টি দেবেন।
সমুদ্র এলাকায় নেট দিয়ে চিংড়ি পোনা আহরণ বন্ধ করার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজার, কুয়াকাটাসহ সমুদ্র এলাকায় যেখানে মানুষ নেট দিয়ে দিয়ে শুধু চিংড়ির পোনা আহরণ করে; এটা বন্ধ করতে হবে। সেসব জায়গায় হ্যাচারি তৈরি করে দিতে হবে। কারণ, কক্সবাজারে হ্যাচারি ছিল না, আমরা এসে সেখানে হ্যাচারি করে দিয়েছিলাম। আমার মনে হয়, এই দিকটায় একটু বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। শুধু চিংড়ির পোনা উৎপাদন করলে হবে না। সেটা যেন স্বাস্থ্যসম্মতভাবে যেখানে চিংড়ির চাষ হয়, সেসব এলাকায় যেন পৌঁছে যেতে পারে। বিশেষ করে খুলনা, সাতক্ষীরা, খুলনা বিভাগে ভালো চিংড়ি উৎপাদন হয়। মিঠা পানিতেও আমাদের চিংড়ি যথেষ্ট হয়।’
সবাইকে মৎস্য উৎপাদনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যার যেখানে একটু জলাধার আছে, সেখানে আপনারা মাছের চাষ করেন। নিজেরাও খেতে পারবেন, (বিক্রি করলে) লাভও হবে। মাছে-ভাতে বাঙালি। এভাবেই আমাদের জীবনটা আরও উন্নত হোক, এই আকাঙ্ক্ষা আমি করি।’
অনুষ্ঠানে মৎস্য খাতে বিশেষ অবদানের জন্য সাতটি প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে স্বর্ণপদক তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।