সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা  পর্যন্ত ১ ঘন্টার লোডশেডিং

#
news image

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে কয়েক দিন ধরেই আবহাওয়া খুব উত্তপ্ত। বর্ষার ভরমৌসুমে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশে খরতাপে জনজীবন হাসফাঁস অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশে শুরু হয়েছে এলাকাভিত্তিক নির্ধারিত সময়ে এক ঘন্টার জন্য বিদ্যুতের লোডশেডিং। জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলায় সাময়িক সময়ের জন্য এই কৌশলী পদক্ষেপ নেয় সরকার। ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এক ঘন্টা করে চলে এই লোডশেডিং। লোডশেডিংয়ের মোট পরিমাণ ধরা হয়েছে ১০০ মেগাওয়াট।
ঢাকার বাইরেও বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর সূচি অনুযায়ী এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়া হয়েছে। এই লোডশেডিংয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ভোক্তাদের মাঝে। 
এদিকে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে রাত ৮টার পর দোকান-পাট ও শপিং মল খোলা রাখা ও আলোকসজ্জা করায় অভিযানে নেমেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সোমবার থেকে অভিযান চালিয়ে নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। অফিস-আদালতেও এসি বন্ধ রাখাসহ বিদ্যুৎ ব্যবহারে সংযমী হয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিষয়টি কঠোরভাবে তদারকি করছেন সংশ্লিষ্ট সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তা  ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। 
রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা ও নারায়ণগঞ্জের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে ডিপিডিসি (ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড)। অন্যদিকে রাজধানীর মিরপুর, ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান, বনানী, মহাখালী, উত্তরা, বাড্ডা, টঙ্গী ও পূর্বাচলসহ ঢাকা ও গাজীপুরের প্রায় ৪০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ করে ডেসকো (ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড)।  প্রথম দিনে কোথায় কোন এলাকায় কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে, তার সম্ভাব্য সূচি বা তালিকা প্রকাশ করেছে ডিপিডিসি ও ডেসকো। সংস্থা দুটির ওয়েবসাইটে এই তালিকা দেওয়া হয়েছে। ডিপিডিসি গতকাল লোডশেডিং শুরু করেছে সকাল ১০টা থেকে। একই সময় ডেসকো লোডশেডিং শুরু করেছে। 
ডিপিডিসির প্রধান প্রকৌশলী মো. কামরুল আজম বলেন, প্রতিদিন এক অঞ্চলে একই সময়ে লোডশেডিং করা হবে না। তিনি বলেন, আজ যেখানে সকাল ১০টায় লোডশেডিং করা হলো, কাল হয়তো সেখানে ভিন্ন সময় হবে। এখন আপাতত এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার আয়োজিত এক বৈঠকে দেশের অর্থনৈতিক সুরক্ষায় জ্বালানি সাশ্রয়ে লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। এমনকি এই লোডশেডিং আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। 
জ্বালানি উপদেষ্টা আরও জানান, খরচ কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিজেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থগিত করা হয়েছে। এক থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি হবে। দিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা, কোথাও কোথাও দুই ঘণ্টা লোডশেডিং হবে। পাশাপাশি অফিসের সময়সূচি দুই ঘণ্টা কমানোর চিন্তা চলছে। 
তবে এর পর বিকেলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, আগামী এক সপ্তাহ পরীক্ষামূলক এলাকাভিত্তিক এক ঘন্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে সারা দেশে। এক ঘণ্টায় যদি বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলা করা সম্ভব না হয় তাহলে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া রাত ৮টার পর দোকান-পাট, শপিং মল বন্ধ ও আলোকসজ্জা না করার নির্দেশ এবং নামাজের সময় ব্যতিত মসজিদে এসি বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী।

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ জুলাই, ২০২২,  12:29 AM

news image

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে কয়েক দিন ধরেই আবহাওয়া খুব উত্তপ্ত। বর্ষার ভরমৌসুমে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশে খরতাপে জনজীবন হাসফাঁস অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশে শুরু হয়েছে এলাকাভিত্তিক নির্ধারিত সময়ে এক ঘন্টার জন্য বিদ্যুতের লোডশেডিং। জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলায় সাময়িক সময়ের জন্য এই কৌশলী পদক্ষেপ নেয় সরকার। ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এক ঘন্টা করে চলে এই লোডশেডিং। লোডশেডিংয়ের মোট পরিমাণ ধরা হয়েছে ১০০ মেগাওয়াট।
ঢাকার বাইরেও বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর সূচি অনুযায়ী এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়া হয়েছে। এই লোডশেডিংয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ভোক্তাদের মাঝে। 
এদিকে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে রাত ৮টার পর দোকান-পাট ও শপিং মল খোলা রাখা ও আলোকসজ্জা করায় অভিযানে নেমেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সোমবার থেকে অভিযান চালিয়ে নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। অফিস-আদালতেও এসি বন্ধ রাখাসহ বিদ্যুৎ ব্যবহারে সংযমী হয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিষয়টি কঠোরভাবে তদারকি করছেন সংশ্লিষ্ট সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তা  ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। 
রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা ও নারায়ণগঞ্জের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে ডিপিডিসি (ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড)। অন্যদিকে রাজধানীর মিরপুর, ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান, বনানী, মহাখালী, উত্তরা, বাড্ডা, টঙ্গী ও পূর্বাচলসহ ঢাকা ও গাজীপুরের প্রায় ৪০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ করে ডেসকো (ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড)।  প্রথম দিনে কোথায় কোন এলাকায় কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে, তার সম্ভাব্য সূচি বা তালিকা প্রকাশ করেছে ডিপিডিসি ও ডেসকো। সংস্থা দুটির ওয়েবসাইটে এই তালিকা দেওয়া হয়েছে। ডিপিডিসি গতকাল লোডশেডিং শুরু করেছে সকাল ১০টা থেকে। একই সময় ডেসকো লোডশেডিং শুরু করেছে। 
ডিপিডিসির প্রধান প্রকৌশলী মো. কামরুল আজম বলেন, প্রতিদিন এক অঞ্চলে একই সময়ে লোডশেডিং করা হবে না। তিনি বলেন, আজ যেখানে সকাল ১০টায় লোডশেডিং করা হলো, কাল হয়তো সেখানে ভিন্ন সময় হবে। এখন আপাতত এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার আয়োজিত এক বৈঠকে দেশের অর্থনৈতিক সুরক্ষায় জ্বালানি সাশ্রয়ে লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। এমনকি এই লোডশেডিং আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। 
জ্বালানি উপদেষ্টা আরও জানান, খরচ কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিজেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থগিত করা হয়েছে। এক থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি হবে। দিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা, কোথাও কোথাও দুই ঘণ্টা লোডশেডিং হবে। পাশাপাশি অফিসের সময়সূচি দুই ঘণ্টা কমানোর চিন্তা চলছে। 
তবে এর পর বিকেলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, আগামী এক সপ্তাহ পরীক্ষামূলক এলাকাভিত্তিক এক ঘন্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে সারা দেশে। এক ঘণ্টায় যদি বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলা করা সম্ভব না হয় তাহলে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া রাত ৮টার পর দোকান-পাট, শপিং মল বন্ধ ও আলোকসজ্জা না করার নির্দেশ এবং নামাজের সময় ব্যতিত মসজিদে এসি বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী।