ইরান-ইসরাইল সংঘাতে আধুনিক অস্ত্রের লড়াই: সিজ্জিল থেকে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র

#
news image

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতে আধুনিক প্রযুক্তির ভয়ংকর সব অস্ত্রের ব্যবহার বিশ্বজুড়ে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় ব্যবহৃত এসব অস্ত্র নিয়ে চলছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণ। বিশেষত ইরানের ব্যালিস্টিক, ক্রুজ ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকারিতা এবং সেগুলোর মাধ্যমে ইসরাইলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা 'আয়রন ডোম' ও 'ডেভিডস স্লিং' ভেদ করে সফল আঘাত হানার সক্ষমতা এখন আলোচনার কেন্দ্রে।

শনিবার (২১ জুন) প্রকাশিত আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইরান তার সামরিক কৌশলে অন্যতম প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যার গতি শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। এসব ক্ষেপণাস্ত্র প্রথাগত র‍্যাডারে ধরা পড়লেও প্রতিরোধ করা প্রায় অসম্ভব। কিছু হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রে যুক্ত থাকে হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকল (এইচজিভি), যা দ্রুত দিক পরিবর্তনে সক্ষম, ফলে লক্ষ্যভ্রষ্ট করা কঠিন।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক গ্যাটোপুলোস জানান, “ব্যালিস্টিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি প্রতিক্রিয়ায় ইরান হাইপারসনিক প্রযুক্তিতে এগিয়ে গেছে, যা এখন তাদের আক্রমণের সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার।”

ইরান জানিয়েছে, তারা 'অপারেশন ট্রু প্রমিজ–থ্রি'-এর আওতায় সিজ্জিল নামের দূরপাল্লার অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। কঠিন জ্বালানিচালিত এই ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত সময়ে উৎক্ষেপণ করা যায় এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া সক্ষমতাও রয়েছে এতে। সিজ্জিলের পাল্লা প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার এবং এটি ওয়ারহেডসহ লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে।

ইরানের আরেক কার্যকর অস্ত্র হোভেইজেহ নামের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিচু উচ্চতায় উড়তে পারে এবং জিপিএস বা অন্যান্য গাইডেড প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার জবাবে ইরান এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রও ব্যবহার করেছে বলে দাবি করছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় ও বৈচিত্র্যময় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভান্ডার রয়েছে ইরানের। তাদের কাছে রয়েছে প্রায় ৩,০০০ বিভিন্ন শ্রেণির ক্ষেপণাস্ত্র— স্বল্প, মধ্য ও দূরপাল্লার, যেগুলো যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কৌশলগত সাফল্য এনে দিচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের এই উন্নত অস্ত্রগুলোই ইসরাইলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা— আয়রন ডোম এবং ডেভিডস স্লিং— এর সীমাবদ্ধতা প্রকাশ করছে। বিশেষ করে হাইপারসনিক ও নিচু উড়ন্ত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে এসব ব্যবস্থার কার্যকারিতা এখন প্রশ্নের মুখে।

অনলাইন ডেস্ক

২১ জুন, ২০২৫,  8:09 PM

news image

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতে আধুনিক প্রযুক্তির ভয়ংকর সব অস্ত্রের ব্যবহার বিশ্বজুড়ে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় ব্যবহৃত এসব অস্ত্র নিয়ে চলছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণ। বিশেষত ইরানের ব্যালিস্টিক, ক্রুজ ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকারিতা এবং সেগুলোর মাধ্যমে ইসরাইলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা 'আয়রন ডোম' ও 'ডেভিডস স্লিং' ভেদ করে সফল আঘাত হানার সক্ষমতা এখন আলোচনার কেন্দ্রে।

শনিবার (২১ জুন) প্রকাশিত আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইরান তার সামরিক কৌশলে অন্যতম প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যার গতি শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। এসব ক্ষেপণাস্ত্র প্রথাগত র‍্যাডারে ধরা পড়লেও প্রতিরোধ করা প্রায় অসম্ভব। কিছু হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রে যুক্ত থাকে হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকল (এইচজিভি), যা দ্রুত দিক পরিবর্তনে সক্ষম, ফলে লক্ষ্যভ্রষ্ট করা কঠিন।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক গ্যাটোপুলোস জানান, “ব্যালিস্টিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি প্রতিক্রিয়ায় ইরান হাইপারসনিক প্রযুক্তিতে এগিয়ে গেছে, যা এখন তাদের আক্রমণের সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার।”

ইরান জানিয়েছে, তারা 'অপারেশন ট্রু প্রমিজ–থ্রি'-এর আওতায় সিজ্জিল নামের দূরপাল্লার অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। কঠিন জ্বালানিচালিত এই ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত সময়ে উৎক্ষেপণ করা যায় এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া সক্ষমতাও রয়েছে এতে। সিজ্জিলের পাল্লা প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার এবং এটি ওয়ারহেডসহ লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে।

ইরানের আরেক কার্যকর অস্ত্র হোভেইজেহ নামের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিচু উচ্চতায় উড়তে পারে এবং জিপিএস বা অন্যান্য গাইডেড প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার জবাবে ইরান এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রও ব্যবহার করেছে বলে দাবি করছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় ও বৈচিত্র্যময় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভান্ডার রয়েছে ইরানের। তাদের কাছে রয়েছে প্রায় ৩,০০০ বিভিন্ন শ্রেণির ক্ষেপণাস্ত্র— স্বল্প, মধ্য ও দূরপাল্লার, যেগুলো যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কৌশলগত সাফল্য এনে দিচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের এই উন্নত অস্ত্রগুলোই ইসরাইলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা— আয়রন ডোম এবং ডেভিডস স্লিং— এর সীমাবদ্ধতা প্রকাশ করছে। বিশেষ করে হাইপারসনিক ও নিচু উড়ন্ত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে এসব ব্যবস্থার কার্যকারিতা এখন প্রশ্নের মুখে।